ঢাকা , রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কয়লা নিয়ে দুর্নীতি হয়নি, সিস্টেম লস হয়েছে

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ কয়লা নিয়ে কোনো দুর্নীতি হয়নি। চুরি, উধাও বা খোলাবাজারে বিক্রির যেসব কথা বলা হচ্ছে, তার পুরোটাই আসলে সিস্টেম লস হয়েছে। প্রকৃত তদন্তে এই সত্য বেরিয়ে আসবে।’

গত বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির (বিসিএমসিএল) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হাবিব উদ্দিন আহমেদ।

মজুদ কয়লা থেকে এক লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৪ টন অবৈধভাবে বিক্রি করে ২৩০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় এদিন সাবেক এই এমডিসহ আট কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করেন দুদক উপপরিচালক ও তদন্ত কর্মকর্তা মো. সামছুল আলম।

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কমিশনের প্রধান কার্যালয় থেকে বেরিয়ে আসেন বিসিএমসিএলের সর্বশেষ এমডি হাবিব উদ্দিন আহমেদসহ অন্যরা। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হাবিব উদ্দিন জানান, তিনি শুরু থেকেই বলে আসছেন—কয়লা চুরি, গায়েব বা উধাও কোনোটাই হয়নি। মোট মজুদ থেকে যতটুকু কয়লার ঘাটতির তথ্য পাওয়া গেছে তার সবটুকুই সিস্টেম লস বা প্রক্রিয়াগত অপচয়। অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে কারিগরি তথ্যভিত্তিক তদন্ত হলে এর প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে বলে তার বিশ্বাস। মজুদ ইয়ার্ড থেকে যতটুকু কয়লা উবে গেছে তার পরিমাণ এক দশমিক চার শতাংশের বেশি হবে না। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দুই থেকে দশ শতাংশ পর্যন্ত সিস্টেম লস বা অপচয় হিসেবে গ্রহণ করা হয়।

বুধবার অন্য যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তারা হলেন—বিসিএমসিএলের সদ্য বিদায়ী কোম্পানি সচিব আবুল কাশেম প্রধানীয়া, ব্যবস্থাপক (এক্সপ্লোরেশন) মোশাররফ হোসেন সরকার, ব্যবস্থাপক (জেনারেল সার্ভিসেস) মাসুদুর রহমান হাওলাদার, ব্যবস্থাপক (প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট) অশোক কুমার হালদার, ব্যবস্থাপক (মেইনটেন্যান্স অ্যান্ড অপারেশন) আরিফুর রহমান, ব্যবস্থাপক (কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) জাহিদুল ইসলাম ও উপব্যবস্থাপক (সেফটি ম্যানেজমেন্ট) একরামুল হক।

বৃহস্পতিবার যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে তারা হলেন—উপব্যবস্থাপক (কোল হ্যান্ডলিং ম্যানেজমেন্ট) মুহাম্মদ খলিলুর রহমান, সাবেক মহাব্যবস্থাপক (ফাইন্যান্স অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস) আব্দুল মান্নান পাটোয়ারি, ব্যবস্থাপক (ফাইন্যান্স অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস) গোপাল চন্দ্র সাহা, ব্যবস্থাপক (হিসাব) সারোয়ার হোসেন, ব্যবস্থাপক (সেলস ও রেভিনিউ কালেকশন) মো. কামরুল হাসান, উপব্যবস্থাপক (মার্কেটিং ও কাস্টমার সার্ভিসেস) মোহাম্মদ নোমান প্রধানীয়া, সাবেক মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) একেএম সিরাজুল ইসলাম, শরিফুল আলম ও সহকারী ব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) আল আমিন।

দুদকের তদন্তে ২০০৪ সালের জুন থেকে গত ১৯ জুলাই পর্যন্ত খনিতে এক লাখ ৪৭ হাজার ৬৪৪ দশমিক ৪০ টন কয়লার মজুদ স্থিতি পাওয়া যায়। সরেজমিন তদন্তে গত ২৪ জুলাই পর্যন্ত প্রকৃত মজুদ পাওয়া গেছে তিন হাজার ৯১৬ দশমিক ৪৮ টন। এ হিসাবে ঘাটতির পরিমাণ এক লাখ ৪৩ হাজার ৭২৭ দশমিক ৯২ টন। প্রতি টন কয়লার মূল্য ১৫ হাজার ৯০১ দশমিক ১০ টাকা হিসাবে ঘাটতি এক লাখ ৪৩ হাজার ৭২৭ দশমিক ৯২ টন কয়লার মূল্য দাঁড়ায় ২২৮ কোটি ৫৪ লাখ ১৮ হাজার ৬৮৩ দশমিক ১১ টাকা।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

কয়লা নিয়ে দুর্নীতি হয়নি, সিস্টেম লস হয়েছে

আপডেট টাইম : ০৪:৪৮ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ অগাস্ট ২০১৮

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ কয়লা নিয়ে কোনো দুর্নীতি হয়নি। চুরি, উধাও বা খোলাবাজারে বিক্রির যেসব কথা বলা হচ্ছে, তার পুরোটাই আসলে সিস্টেম লস হয়েছে। প্রকৃত তদন্তে এই সত্য বেরিয়ে আসবে।’

গত বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ে জিজ্ঞাসাবাদ শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন বড়পুকুরিয়া কোল মাইনিং কোম্পানির (বিসিএমসিএল) সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) হাবিব উদ্দিন আহমেদ।

মজুদ কয়লা থেকে এক লাখ ৪৪ হাজার ৬৪৪ টন অবৈধভাবে বিক্রি করে ২৩০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে করা মামলায় এদিন সাবেক এই এমডিসহ আট কর্মকর্তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৩টা পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ করেন দুদক উপপরিচালক ও তদন্ত কর্মকর্তা মো. সামছুল আলম।

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে কমিশনের প্রধান কার্যালয় থেকে বেরিয়ে আসেন বিসিএমসিএলের সর্বশেষ এমডি হাবিব উদ্দিন আহমেদসহ অন্যরা। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে হাবিব উদ্দিন জানান, তিনি শুরু থেকেই বলে আসছেন—কয়লা চুরি, গায়েব বা উধাও কোনোটাই হয়নি। মোট মজুদ থেকে যতটুকু কয়লার ঘাটতির তথ্য পাওয়া গেছে তার সবটুকুই সিস্টেম লস বা প্রক্রিয়াগত অপচয়। অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে কারিগরি তথ্যভিত্তিক তদন্ত হলে এর প্রকৃত সত্য বেরিয়ে আসবে বলে তার বিশ্বাস। মজুদ ইয়ার্ড থেকে যতটুকু কয়লা উবে গেছে তার পরিমাণ এক দশমিক চার শতাংশের বেশি হবে না। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে দুই থেকে দশ শতাংশ পর্যন্ত সিস্টেম লস বা অপচয় হিসেবে গ্রহণ করা হয়।

বুধবার অন্য যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হয় তারা হলেন—বিসিএমসিএলের সদ্য বিদায়ী কোম্পানি সচিব আবুল কাশেম প্রধানীয়া, ব্যবস্থাপক (এক্সপ্লোরেশন) মোশাররফ হোসেন সরকার, ব্যবস্থাপক (জেনারেল সার্ভিসেস) মাসুদুর রহমান হাওলাদার, ব্যবস্থাপক (প্রোডাকশন ম্যানেজমেন্ট) অশোক কুমার হালদার, ব্যবস্থাপক (মেইনটেন্যান্স অ্যান্ড অপারেশন) আরিফুর রহমান, ব্যবস্থাপক (কনস্ট্রাকশন অ্যান্ড মেইনটেন্যান্স) জাহিদুল ইসলাম ও উপব্যবস্থাপক (সেফটি ম্যানেজমেন্ট) একরামুল হক।

বৃহস্পতিবার যাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে তারা হলেন—উপব্যবস্থাপক (কোল হ্যান্ডলিং ম্যানেজমেন্ট) মুহাম্মদ খলিলুর রহমান, সাবেক মহাব্যবস্থাপক (ফাইন্যান্স অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস) আব্দুল মান্নান পাটোয়ারি, ব্যবস্থাপক (ফাইন্যান্স অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস) গোপাল চন্দ্র সাহা, ব্যবস্থাপক (হিসাব) সারোয়ার হোসেন, ব্যবস্থাপক (সেলস ও রেভিনিউ কালেকশন) মো. কামরুল হাসান, উপব্যবস্থাপক (মার্কেটিং ও কাস্টমার সার্ভিসেস) মোহাম্মদ নোমান প্রধানীয়া, সাবেক মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) একেএম সিরাজুল ইসলাম, শরিফুল আলম ও সহকারী ব্যবস্থাপক (নিরাপত্তা) আল আমিন।

দুদকের তদন্তে ২০০৪ সালের জুন থেকে গত ১৯ জুলাই পর্যন্ত খনিতে এক লাখ ৪৭ হাজার ৬৪৪ দশমিক ৪০ টন কয়লার মজুদ স্থিতি পাওয়া যায়। সরেজমিন তদন্তে গত ২৪ জুলাই পর্যন্ত প্রকৃত মজুদ পাওয়া গেছে তিন হাজার ৯১৬ দশমিক ৪৮ টন। এ হিসাবে ঘাটতির পরিমাণ এক লাখ ৪৩ হাজার ৭২৭ দশমিক ৯২ টন। প্রতি টন কয়লার মূল্য ১৫ হাজার ৯০১ দশমিক ১০ টাকা হিসাবে ঘাটতি এক লাখ ৪৩ হাজার ৭২৭ দশমিক ৯২ টন কয়লার মূল্য দাঁড়ায় ২২৮ কোটি ৫৪ লাখ ১৮ হাজার ৬৮৩ দশমিক ১১ টাকা।