বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া পুরান ঢাকার বকশীবাজারে অবস্থিত অস্থায়ী আদালতে যাওয়ার সময় ছয় বছর আগে রাজধানীর মগবাজার এলাকায় তার গাড়িবহর হামলার শিকার হয়। ওই ঘটনায় জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে প্রধান আসামি করে ১৪ দলীয় জোটের মোট ৬৫ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন বাংলাদেশ পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান মো. বাবুল সরদার চাখারী।
গত ৩১ অক্টোবর আদালতে নালিশি মামলা করেন তিনি। আদালত মামলার অভিযোগ এজাহার হিসেবে রেকর্ড করার জন্য হাতিরঝিল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দিয়েছিলেন। আদালতের আদেশ পাওয়ার পর গত ৮ নভেম্বর হাতিরঝিল থানায় মামলাটি এজাহার হিসেবে রেকর্ড করেছে। যা আজ সোমবার জানা গেছে।
মামলার অপর আসামিরা হলেন, জি এম কাদেরের স্ত্রী শেরীফা কাদের, কো-চেয়ারম্যান আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, মহাসচিব মুজিবুল হক (চুন্নু), সাবেক মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার, ১২ জন প্রেসিডিয়াম সদস্য এ কে এম সেলিম ওসমান, খায়রুল ইসলাম, আহসান আবদুর রহমান, হাফিজ উদ্দিন আহমেদ, লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মাসুদ উদ্দিন চৌধুরী, লিয়াকত হোসেন, আতিকুর রহমান, সোলায়মান আলম, রেজাউল ইসলাম ভূঁইয়া, রাজা আমিন ও এটিইউ তাজ রহমান।
আসামিদের মধ্যে আরও রয়েছেন জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সভাপতি হাসানুল হক ইনু, বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য আবদুর রহমান, ন্যাশনাল পিপলস পার্টির চেয়ারম্যান শেখ সালু, দলটির প্রেসিডিয়াম সদস্য মাহামুদুল হক আক্কাস, আনিচুর রহমান, এনপিপি ন্যাশনাল পার্টির সাবেক মহাসচিব আবদুল হাই মণ্ডল, ইসলামী ঐক্যজোটের সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন এবং বাংলাদেশ তরীকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান সৈয়দ নজিবুল বশর মাইজভান্ডারী, তৃণমূল বিএনপির চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী ও মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকার, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম ও আওয়ামী লীগের সাবেক সংসদ সদস্য শাজাহান ওমর।
মামলার আরজিতে বলা হয়, ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি সকালে খালেদা জিয়া পুরান ঢাকার বকশীবাজারে অবস্থিত আদালতে যাওয়ার উদ্দেশ্যে গুলশানের বাসা থেকে রওনা দেন। এ সময় তিনিও (বাদী) ওই গাড়িবহরের সঙ্গে ছিলেন। গাড়িবহরটি মগবাজারে পৌঁছালে জি এম কাদেরসহ অন্য আসামিদের হুকুমে হামলা হয়। বহরের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়। হামলায় আওয়ামী লীগ নেতা দেব কুন্ডু, সিরাজুল হক ও কুদ্দুস খালেদা জিয়াকে হত্যার উদ্দেশ্যে গুলি করেন। অজ্ঞাতনামা আসামিরা গাড়ি ভাঙচুর করে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন। সিএনজিচালিত তিন/চারটি অটোরিকশা, একটি মোটরসাইকেল ও একটি প্রাইভেট কারে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়। বিএনপির কর্মীদের ওপরও হামলা হয়। সে সময় এ বিষয়ে থানায় অভিযোগ দেওয়া হয়েছিল। তবে আসামিরা ১৪ দলের প্রভাবশালী নেতাকর্মী হওয়ায় তখন অভিযোগ গ্রহণ করা হয়নি।
এর আগে গত ২৫ আগস্ট ২০১৫ সালের ২০ এপ্রিল নির্বাচনী প্রচারণায় বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার গাড়ি বহরে হামলার ঘটনায় চিত্রনায়ক জায়েদ খান, অভিনেতা শাহরিয়ার নাজিম জয় ও তানভির আহমেদ সুইটিসহ ৫৬ জনের মামলা করেন ব্যান্ড শিল্পী আসিপ ইমাম। সে মামলা ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জাকী আল ফারাবী অভিযোগটি মতিঝিল থানা পুলিশকে এজাহার হিসেবে গ্রহণ করার নির্দেশ দেন।