বিচার বিভাগের অভিভাবক প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহা সম্পর্কে ঔদ্ধত্যপূর্ণ, শিষ্টাচার বহির্ভূত, অশালীন, অসংযত মন্তব্য করায় ঢাকার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ জুয়েল রানার দৃষ্টান্তমুলক শাস্তি ও গ্রেপ্তারের দাবী জানিয়েছে ন্যাশনাল ল’ ইয়ার্স কাউন্সিল।
দেশের সর্বোচ্চ আদালতের আইনজীবীদের এ সংগঠনটি উক্ত ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে শুক্রবার বিকেলে গনমাধ্যমে একটি বিবৃতি দিয়েছে।
বিবৃতিটি পাঠান সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য এসএম জুলফিকার আলী জুনু।
এতে বলা হয়, ঢাকার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহাম্মদ জুয়েল রানা কর্তৃক প্রধান বিচারপতিকে নিয়ে উক্তরুপ কটুক্তিমুলক শিষ্টাচার বহি:র্ভুত মন্তব্য স্বাধীন বিচার ব্যাবস্থার প্রতি হুমকি সুরপ। উক্ত ঘটনাটি দেশের সবোর্চ্চ গোয়েন্দা সংস্থা দ্বারা সুষ্ঠু তদন্ত পূর্বক বিচারক জুয়েল রানাকে গ্রেপ্তার করা আবশ্যক বলেও মনে করেন ন্যাশনাল ল’ ইয়ার্স কাউন্সিল।
বিবৃতিতে স্বাক্ষর করেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা সদস্য ব্যারিস্টার এ কে এম এহসানুর রহমান, এস এম জুলফিকার আলী জুনু, শফিউল্লাহ, মহিবউল্লাহ মারুফ, মোসলেম উদ্দীন, চেমন আক্তার, সুলতান মাহমুদ, তাহেরুল ইসলাম, মশিউর রহমান, সাবিনা ইয়াসমিন, হাদিউল ইসলাম মল্লিক, রাশিদা আলিম ঐশী, ফারজানা সুলতানা সাথী, কবির হোসেন, আশিকুর রহমান, আকবর হোসেন, এমদাদুল হক, আরিফুল ইসলাম, নাসিমুল হাসান, নাজমুল হাসান, শেখ আব্দুস সালাম, হোসাইন আহমেদ আশিক। আবদুস সামাদ আজাদ, সামসুল ইসলাম মুকুল, নিজাম উদ্দিন, মজুমদার, আবদুল হান্নান খন্দকার, শিকদার জাহিদ, মোতাহার হোসেন, মাহবুব, শওকত উল্লাহ খান, শেখ আব্দুস সালাম, ওয়ালিউল ইসলাম, শফিকুল ইসলাম ও আসাদুজ্জামান, হেমায়েত বাদশা, টিপু সুলতান, ইকবাল হোসাইন শেখ, আব্দুল্লাহ-আল মামুন, হাবিবুর রহমান, নাসরিন হেনা, শান্তা খন্দকার, মো: শামীম, উম্মে শাহিদা, মো: জাকির, মো. আব্দুল হালিম, মো. তানজীদ সিরাজী, মোজাম্মেল হক হিমু, সাইফুজ্জামান তুহিন, জাকারিয়া স্বপন। মোছা. হোসনে আরা, মোঃ আরিফ হোসেন, মাহফুজুর রহমান, আব্দুল আওয়াল, নুরুদ্দীন জামিল, রাকিবুল হাসান, তানজীদ সিরাজ, মন্টু আলম, মোঃ ইকরাম হোসেন, মনির হোসাইন, দেলোয়ার হোসাইন, মনির উদ্দীন, মাহবুব আলম, আখতারুল হোসাইন, রোকন উদ্দীন, শহিদুল ইসলাম, ইমন,ইসমাইল হোসেন, ফজলুর রহমান, কাজী তন্ময়, রেশমা, আ. মতিন, মমিন মিয়া, আমিনুল ইসলাম, রেজাউল করিম, ফুয়াদ, বোরহান মিয়া, জাকারিয়া, মুনির উদ্দীনসহ ২৫১ জন আইনজীবী। উল্লেখ্য গত বৃহস্পতিবার আইন মন্ত্রণালয় এ বিষয়ে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করে। প্রজ্ঞাপনে আরো বলা হয়, সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপীল) বিধিমালা, ১৯৮৫ এর বিধি ১১(১) অনুযায়ী জুয়েল রানাকে চাকরি থেকে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করা হয়। তবে এ সময় অভিযুক্ত কর্মকর্তা প্রচলিত বিধি অনুযায়ী খোরকী ভাতা পাবেন। সেই সঙ্গে এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর করা হবে।
এদিকে মাস দুয়েক আগে বিচার কাজে অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ঢাকার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ জুয়েল রানার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা দায়েরের নির্দেশ দিয়েছিলেন সুপ্রিম কোর্টের জেনারেল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (জিএ) কমিটি। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন চার সদস্যের কমিটি ওই দুই বিচারকের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের জন্য আইন মন্ত্রণালয়কে নির্দেশ দেন।
ওই তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়, তার বিরুদ্ধে দুটি দেওয়ানি আপিল ২৩৮/১২, ২৩৯/১৩, দেউলিয়া মোকদ্দমা নং ১৭/০৩ ও ১৬/২০০০ পরিচালনার ক্ষেত্রে তার দক্ষতা ও সততা প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছে। একজন অতিরিক্ত জেলা জজ পদমর্যাদার কর্মকর্তা হয়ে আরজি খারিজের বিরুদ্ধে আপিল নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে দীর্ঘ বিচারিক জীবনের অভিজ্ঞতা ও প্রশিক্ষণকে কাজে লাগাতে ব্যর্থ হয়েছেন।