বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ কোনো কিছু না ভেবেই ভারতের বিহার রাজ্যের কিসানগঞ্জের লোহাগড়ের শিবকুমার সিংহ। নতুন বৌকে তুলে নিলেন কাঁধে। তারপর স্রোত ভেঙে এগোতে লাগলেন। তার পরনে তখনও বিয়ের শেরোয়ানি। পায়ে নতুন জুতো। নতুন বৌ সুনীতার পরনে বিয়ের জোড়। হাত বোঝাই চুড়ি ঝুনঝুন করছে চলার তালে তালে। তিনি আর বাধা দেবেন কী! এ ভাবেই পার হলেন প্রায় এক কিলোমিটার (অগভীর) নদী। তীরে উঠতেই হইহই করে স্বাগত জানালেন স্বজনরা।
কীভাবে পারলেন এতো পথ নতুন বৌকে কাঁধে নিয়ে পার হতে – এমন প্রশ্নের জবাবে মুখে হাল্কা হাসি। বছর ছাব্বিশের শিবকুমার বলেন, ‘লজ্জা লাগছিল। কিন্তু উপায় তো ছিল না। জলের স্রোত বাড়ছে দেখে মাঝি না করে দিল। আমরা কি তা হলে নদী পেরিয়ে বাড়ি যাব না?’
বিহারের কিসানগঞ্জের বাসিন্দা শিবকুমার বিয়ে করতে গিয়েছিলেন নেপাল সীমান্তের সিংহীমারি গ্রামে। বিয়ের পর এ দিন সকালে একুশ বছরের সুনীতাকে সঙ্গে নিয়ে বাড়ির পথে রওনা হন। এর মধ্যে উত্তরবঙ্গ জুড়ে বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে। স্থানীয়রা বলছেন, মেচি নদীর সঙ্গে যুক্ত কনকই নদী। মেচি এসেছে নেপাল থেকে বয়ে গেছে দুই দেশের মধ্যে সীমান্ত রেখা হয়ে। পাহাড়ের এই নদীতে হঠাৎই এ দিন জলস্রোত বেড়ে যায়। শিবকুমারেরার যখন বাড়ির উল্টো দিকের ঘাটে পৌঁছন, মাঝি জানিয়ে দেয়, এই জলে নৌকা টেনে নিয়ে যেতে পারবে না। তারপরই ঝপ করে ঠিক করে ফেলেন সদ্য বিবাহিত যুবক – স্ত্রীকে কাঁধে নিয়েই নদী পার হবেন।
নদীর বিপদের কথা কিন্তু জানতেন শিবকুমার। তিনি বলেন, ‘কনকই নদীর গতিপ্রকৃতি ভাল না। কখন কী হবে, কেউ জানে না।’ তা হলে স্ত্রীকে কাঁধে নিলেন কেন? হাসছিলেন শিবকুমার। তার সঙ্গীরা তখন বলছেন, ‘ছেলে তো বিয়ের পর প্রথম দিনই বাজিমাত করে দিল!’ সলজ্জ হাসি তখন সুনীতার মুখেও। সূত্র : আনন্দবাজার পত্রিকা।