ঢাকা , বুধবার, ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ২৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

জমিতে নতুন পদ্ধতিতে হাইব্রিড জাতের টমেটো চাষ করেছি

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ চুয়াডাঙ্গায় জনপ্রিয় হচ্ছে আধুনিক পদ্ধতিতে টমেটো চাষ। ইতোমধ্যে অনেকে নতুন পদ্ধতিতে শীতকালীন হাইব্র্রিড টমেটো চাষ করে সফল হয়েছেন। নতুন এ পদ্ধতিতে টমেটো চাষে ব্যবহার করা হচ্ছে বাঁশের খুঁটি ও নাইলনের দড়ি।

কৃষকরা জানিয়েছেন, নতুন পদ্ধতিতে টমেটো চাষে বাড়তি কিছু খরচ হলেও গাছের পরিচর্যা অনেক সহজ হচ্ছে, ফল মাটি স্পর্শ না করায় পচন ধরছে না এবং ফসল তুলতে সুবিধা হয়।

চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবার ১০৪ হেক্টর জমিতে নতুন পদ্ধতিতে টমেটো চাষ করা হয়েছে।

এরমধ্যে আলমডাঙ্গা উপজেলায় ২০ হেক্টর, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ৩০ হেক্টর, দামুড়হুদা উপজেলায় ৪৪ হেক্টর ও জীবননগর উপজেলায় ১০ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষ হয়েছে।

জয়রামপুর গ্রামের টমেটো চাষি আব্দুল হান্নান জানান, কয়েকবছর ধরে আমি নতুন পদ্ধতিতে হাইব্রিড টমেটো চাষ করছি। চলতি বছর ঢাকা থেকে আমি এ পদ্ধতির ওপর প্রশিক্ষণ নিয়েছি। এবছর আমি ২৫ কাঠা জমিতে নতুন পদ্ধতিতে হাইব্রিড জাতের টমেটো চাষ করেছি। এখন চলছে গাছের পরিচর্যা। গাছগুলোও বেশ পুষ্ট হয়েছে। কোনও কোনও গাছে ফুল আসতে শুরু করেছে। কয়েকদিনের মধ্যে সব গাছেই ফুল দেখা যাবে।

তিনি নতুন পদ্ধতি সম্পর্কে জানান, টমেটো গাছের সঙ্গে বাঁশের খুঁটি গেড়ে নাইলন দড়ি দিয়ে মাচা তৈরি করেছি। ফলে গাছ সব সময় সোজা হয়ে থাকবে। এতে গাছের পরিচর্যা করতে সুবিধা হবে, গাছে যথেষ্ট আলো-বাতাস লাগবে এবং ফল মাটিতে ঠেকবে না। ফলে টমেটোর রংও ভালো হবে।

চাষি আব্দুল হান্নান জানান, ২৫ কাঠা জমিতে নতুন পদ্ধতিতে টমেটো চাষ করতে এ পর্যন্ত আমার খরচ হয়েছে ১২ হাজার টাকা। ফসল তোলার আগ পর্যন্ত আরও ৮-১০ হাজার টাকা খরচ হবে। সব মিলিয়ে ২০-২২ হাজার টাকা খরচ হবে। ফলন ভালো হলে এবং ন্যায্য দাম পাওয়া গেলে ২৫ কাঠা জমি থেকে ৫০-৬০ হাজার টাকার টমেটো বিক্রি করা সম্ভব হবে।

এদিকে চাষি আব্দুর রহমান জানান, আমি ১০ কাঠা জমিতে নতুন পদ্ধতিতে হাইব্রিড জাতের টমেটো চাষ করেছি। বাঁশ ও দড়ি কিনতে আমার খরচ হয়েছে পাঁচ হাজার টাকা। টমেটো ওঠা পর্যন্ত আরও পাঁচ হাজার টাকা খরচ হবে। তবে কোনও দুর্যোগ না হলে ৩০ হাজার টাকার টমেটো বিক্রি হবে বলে আশা করছি।

চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তরের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) প্রবীর কুমার সরকার জানান, হাইব্রিড জাতের টমেটো গাছ সাধারণত বড় হয় ও চারিদিকে ছড়িয়ে যায়। বাঁশের খুঁটি ও দড়ি দিয়ে মাচা করে দিলে সারি করে লাগানো গাছের মাঝখানে ফাঁকা জায়গা থাকে। ফলে গাছের পরিচর্যা করা সুবিধা হয় ও পোকার আক্রমণ কম হয়। আর মাটির সঙ্গে ঠেকতে না পারায় ফসলে পচন ধরে না ও ফুল ফল নষ্ট হয় না। এমনকি টমেটো তুলতেও সুবিধা হয়। এতে ফলন বেশি পাওয়া যায়।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

জমিতে নতুন পদ্ধতিতে হাইব্রিড জাতের টমেটো চাষ করেছি

আপডেট টাইম : ০২:৪৮ অপরাহ্ন, বুধবার, ২২ নভেম্বর ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ চুয়াডাঙ্গায় জনপ্রিয় হচ্ছে আধুনিক পদ্ধতিতে টমেটো চাষ। ইতোমধ্যে অনেকে নতুন পদ্ধতিতে শীতকালীন হাইব্র্রিড টমেটো চাষ করে সফল হয়েছেন। নতুন এ পদ্ধতিতে টমেটো চাষে ব্যবহার করা হচ্ছে বাঁশের খুঁটি ও নাইলনের দড়ি।

কৃষকরা জানিয়েছেন, নতুন পদ্ধতিতে টমেটো চাষে বাড়তি কিছু খরচ হলেও গাছের পরিচর্যা অনেক সহজ হচ্ছে, ফল মাটি স্পর্শ না করায় পচন ধরছে না এবং ফসল তুলতে সুবিধা হয়।

চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় এবার ১০৪ হেক্টর জমিতে নতুন পদ্ধতিতে টমেটো চাষ করা হয়েছে।

এরমধ্যে আলমডাঙ্গা উপজেলায় ২০ হেক্টর, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলায় ৩০ হেক্টর, দামুড়হুদা উপজেলায় ৪৪ হেক্টর ও জীবননগর উপজেলায় ১০ হেক্টর জমিতে টমেটো চাষ হয়েছে।

জয়রামপুর গ্রামের টমেটো চাষি আব্দুল হান্নান জানান, কয়েকবছর ধরে আমি নতুন পদ্ধতিতে হাইব্রিড টমেটো চাষ করছি। চলতি বছর ঢাকা থেকে আমি এ পদ্ধতির ওপর প্রশিক্ষণ নিয়েছি। এবছর আমি ২৫ কাঠা জমিতে নতুন পদ্ধতিতে হাইব্রিড জাতের টমেটো চাষ করেছি। এখন চলছে গাছের পরিচর্যা। গাছগুলোও বেশ পুষ্ট হয়েছে। কোনও কোনও গাছে ফুল আসতে শুরু করেছে। কয়েকদিনের মধ্যে সব গাছেই ফুল দেখা যাবে।

তিনি নতুন পদ্ধতি সম্পর্কে জানান, টমেটো গাছের সঙ্গে বাঁশের খুঁটি গেড়ে নাইলন দড়ি দিয়ে মাচা তৈরি করেছি। ফলে গাছ সব সময় সোজা হয়ে থাকবে। এতে গাছের পরিচর্যা করতে সুবিধা হবে, গাছে যথেষ্ট আলো-বাতাস লাগবে এবং ফল মাটিতে ঠেকবে না। ফলে টমেটোর রংও ভালো হবে।

চাষি আব্দুল হান্নান জানান, ২৫ কাঠা জমিতে নতুন পদ্ধতিতে টমেটো চাষ করতে এ পর্যন্ত আমার খরচ হয়েছে ১২ হাজার টাকা। ফসল তোলার আগ পর্যন্ত আরও ৮-১০ হাজার টাকা খরচ হবে। সব মিলিয়ে ২০-২২ হাজার টাকা খরচ হবে। ফলন ভালো হলে এবং ন্যায্য দাম পাওয়া গেলে ২৫ কাঠা জমি থেকে ৫০-৬০ হাজার টাকার টমেটো বিক্রি করা সম্ভব হবে।

এদিকে চাষি আব্দুর রহমান জানান, আমি ১০ কাঠা জমিতে নতুন পদ্ধতিতে হাইব্রিড জাতের টমেটো চাষ করেছি। বাঁশ ও দড়ি কিনতে আমার খরচ হয়েছে পাঁচ হাজার টাকা। টমেটো ওঠা পর্যন্ত আরও পাঁচ হাজার টাকা খরচ হবে। তবে কোনও দুর্যোগ না হলে ৩০ হাজার টাকার টমেটো বিক্রি হবে বলে আশা করছি।

চুয়াডাঙ্গা জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিপ্তরের উপ-পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) প্রবীর কুমার সরকার জানান, হাইব্রিড জাতের টমেটো গাছ সাধারণত বড় হয় ও চারিদিকে ছড়িয়ে যায়। বাঁশের খুঁটি ও দড়ি দিয়ে মাচা করে দিলে সারি করে লাগানো গাছের মাঝখানে ফাঁকা জায়গা থাকে। ফলে গাছের পরিচর্যা করা সুবিধা হয় ও পোকার আক্রমণ কম হয়। আর মাটির সঙ্গে ঠেকতে না পারায় ফসলে পচন ধরে না ও ফুল ফল নষ্ট হয় না। এমনকি টমেটো তুলতেও সুবিধা হয়। এতে ফলন বেশি পাওয়া যায়।