বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ রোগবালাই ও পোকা মাকড়ের আক্রমণ না থাকায় টাঙ্গাইলে এবার আখের আশানরূপ উৎপাদন হয়েছে। ফলন ভালো হওয়ায় ক্ষেত থেকে আগাম আখ কেটে বাজারে বিক্রি করছেন চাষীরা।
বাজারমূল্য কিছুটা চওড়া হলেও সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকায় ক্রেতা-বিক্রেতা উভয়ই খুশি। তাই ধুম পড়ে গেছে আখ কাটা ও বিক্রিতে। উৎপাদিত আখের আশানুরূপ দাম পেয়ে খুশি আখ চাষিরা। তবে সরকারি কোনো উদ্যোগ না থাকায় ব্যক্তিগত উদ্যোগে টাঙ্গাইলে আখ চাষ করেছে বলে জানিয়েছে আখ চাষীরা। অপরদিকে বেশি লাভ পাওয়ায় আখ চাষে ঝুঁকছে টাঙ্গাইলের কৃষকরা।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়, মাটি ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকা, ভালো জাত নির্বাচন, রোগব্যাধি কম থাকায় বিগত বছরগুলোর তুলনায় এ বছর ফলন বেশি হয়েছে। আগাম আখ বাজারে আসায় কৃষকরা দামও বেশি পাচ্ছে। চলতি বছর বিভিন্ন জাতের আখ আবাদ হয়েছে।
অমৃত, রং বিলাশ, ঈশ্বরদী-১.২ সিএসি ২০৮ জাতের আখ রোপন করেছে কৃষকরা। আখ উৎপাদনে ঝুঁকি কম এবং অধিক ফসল উৎপাদন করে বাড়তি টাকা আয় করা যায়। যার কারণে আখের উৎপাদন খরচও কম হয়। এতে করে কৃষকরা অন্যান্য ফসলের চেয়ে আখ চাষে বেশি লাভবান হন।
গত বছরে জেলায় ৬৯৯ হেক্টর জমিতে আখ চাষ হয়েছিল ও ৩৩ হাজার ৫৭৪ মেট্রিক টন উৎপাদন হয়েছিল। এবছর টাঙ্গাইলে ৫৫৯ হেক্টর জমিরে আখের চাষ করা হয়েছে। সদর উপজেলায় ২৬০ হেক্টর, বাসাইল উপজেলায় ১ হেক্টর, কালিহাতী উপজেলায় ১৮ হেক্টর, ঘাটাইল উপজেলায় ২০ হেক্টর, নাগরপুর উপজেলা ১০০ হেক্টর, মির্জাপুর উপজেলায় ৩২ হেক্টর, মধুপুর উপজেলায় ১৬ হেক্টর, ভুঞাপুর উপজেলায় ৬০ হেক্টর, গোপালপুর উপজেলায় ১৪ হেক্টর, দেলদুয়ার উপজেলায় ৩৮ হেক্টর জমিতে আখের চাষাবাদ হয়েছে। অন্যদিকে সখীপুর ও ধনবাড়ী উপজেলায় কোন আখের চাষ করা হয়নি।
এ ব্যাপারে সদর উপজেলার বাঘিল ইউনিয়নের ধরেরবাড়ী এলাকার আখ চাষী রকিবুল ইসলাম বলেন, এ বছর আমি এক বিঘা জমিতে আখ চাষ করেছি। এক বিঘায় আমার সব মিলিয়ে ২৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। আমি আশার করছি, এ বছর এক বিঘা জমির আখ ৫০ হাজার টাকা বিক্রি করবো। তার মধ্যে আমার আখের চারা ক্রয় ৩ হাজার টাকা, হাল চাষ ১ হাজার টাকা, শ্রমিক ৫ হাজার টাকা ও সারে ৩ হাজার টাকা খরচ হয়েছে।
রোকন হোসেন খোকা বলেন, বাঘিল ইউনিয়নের ধরেরবাড়ী, পিচুরিয়া, কৃষ্ণপুর, টাবলাপাড়া এলাকায় প্রায় ১শ’ বিঘা জমিতে আখ চাষ করা হয়েছে। এই সব এলাকায় পাটের বাম্পার ফলন হয়েছে।
শয়ান মিয়া বলেন, এ বছর আমি দেড় বিঘা জমিতে আখ চাষ করেছি। তার মধ্যে ৪ শতাংশ জমিতে আখের ফলন একটু খারাপ হয়েছে। তবে বাজারে আখের দাম ভাল হওয়ায় আমি লাভবান হতে পারবো।
এ ব্যাপারে টাঙ্গাইল জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আব্দুল রাজ্জাক বলেন, এ বছর আখ চাষের বাম্পার ফলন হয়েছে। আখ বিক্রি করে লাভবান হচ্ছেন আখ চাষীরা। আমাদের কৃষি অফিসাররা মাঠ পর্যায়ে সার্বক্ষণিক কাজ করছে।