ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

নগদ অর্থের ঘাটতিতে ১১ ব্যাংক

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ  পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ১১টি ব্যাংকের নগদ অর্থের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এর কারণ- আমানত প্রবৃদ্ধির চেয়ে ঋণ প্রবৃদ্ধি বেশি হওয়া। ব্যাংকগুলোর সর্বশেষ প্রকাশিত ২০১৭ বছরের অর্ধবার্ষিক অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় এমন তথ্য মিলেছে।

কোন কোম্পানির কাছে কি পরিমাণ নগদ অর্থ আছে তা অপারেটিং ক্যাশ ফ্লোর মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। একাধিক নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কোনো ব্যাংকের ক্যাশ ফ্লো ঋণাত্মক হয়ে যাওয়া মানে ওই ব্যাংকটিতে নগদ অর্থের সংকট তৈরি হওয়া। শেয়ারপ্রতি ক্যাশ ফ্লো (এনওসিএফপিএস) যত বেশি ঋণাত্মক, নগদ অর্থের সংকটও তত বেশি। এ অবস্থা তৈরি হলে চাহিদা মেটাতে ব্যাংকটিকে চড়া মাশুলে স্বল্প মেয়াদে টাকা ধার করতে হয়। তাতে খরচ বাড়ে। আর খরচ বাড়লে আয় কমে যাবে, এটাই স্বাভাবিক।

তারা আরো বলেন, শেয়ারবাজারের ক্ষেত্রে যেকোনো কোম্পানির শেয়ারপ্রতি ক্যাশ ফ্লোও একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক। এটির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির আর্থিক অবস্থার ধারণা পাওয়া যায়। ক্যাশ ফ্লো ঋণাত্মক মানে ওই কোম্পানির কাছে নগদ অর্থের ঘাটতি রয়েছে। আর ক্যাশ ফ্লো ইতিবাচক মানে হলো ওই কোম্পানির হাতে উদ্বৃত্ত তহবিল রয়েছে।

জানা যায়, চলতি বছরের ৬ মাসে সবচেয়ে বেশি নগদ অর্থের ঘাটতি রয়েছে ট্রাস্ট ব্যাংকে। ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো ২৬.৫২ টাকা ঋণাত্মক। অথচ এর আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো ৩২.৬৬ টাকা ছিল। অর্থাৎ ব্যাংকটিতে উদ্বৃত্ত অর্থ ছিল।

এরপরই নগদ অর্থের সংকটে রয়েছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংক। ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো ২৫.০৯ টাকা ঋণাত্মক। এর আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো ৬.৯২ টাকা ঋণাত্মক ছিল। অর্থাৎ অর্থের ঘাটতি বেড়েছে ১৮.১৭ টাকা।

ইসলামি ব্যাংকের শেয়ার প্রতি নগদ অর্থের ঘাটতি ১৪.০৬ টাকা। এর আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি নগদ অর্থের ঘাটতি ছিল ৪.৩০ টাকা। অর্থাৎ অর্থের ঘাটতি বেড়েছে ৯.৭৬ টাকা।

মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের শেয়ার প্রতি নগদ অর্থের ঘাটতি ১১.৮৮ টাকা। এর আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি নগদ অর্থের ঘাটতি ছিল ২.১২ টাকা। অর্থাৎ অর্থের ঘাটতি বেড়েছে ৯.৭৬ টাকা।

দ্যা সিটি ব্যাংকের শেয়ার প্রতি নগদ অর্থের ঘাটতি ১০.৯৮ টাকা। অথচ এর আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি নগদ অর্থ ছিল ০.৮২ টাকা।

ঢাকা ব্যাংকের শেয়ার প্রতি নগদ অর্থের ঘাটতি ১০.৪২ টাকা। এর আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি নগদ অর্থের ঘাটতি ছিল ৫.২৭ টাকা। অর্থাৎ অর্থের ঘাটতি বেড়েছে ৫.১৫ টাকা।

ব্যাংক এশিয়ার শেয়ার প্রতি নগদ অর্থের ঘাটতি ৭.৩৬ টাকা। এর আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি নগদ অর্থের ঘাটতি ছিল ১২.০৭ টাকা। অর্থাৎ ঘাটতি কমেছে ৪.৭১ টাকা।

সাউথইস্ট ব্যাংকের শেয়ার প্রতি নগদ অর্থের ঘাটতি ৪.৫৩ টাকা। অথচ এর আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি নগদ অর্থ ছিল ৫.৬৬ টাকা।

যমুনা ব্যাংকের শেয়ার প্রতি নগদ অর্থের ঘাটতি ১.৬৮ টাকা। এর আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি নগদ অর্থের ঘাটতি ছিল ৫.৪০ টাকা। অর্থাৎ ঘাটতি কমেছে ৩.৭২ টাকা।

শাহজালাল ইসলামি ব্যাংকের শেয়ার প্রতি নগদ অর্থের ঘাটতি ০.৩৬ টাকা। অথচ এর আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি নগদ অর্থ ছিল ৩.৮৫ টাকা।

আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের শেয়ার প্রতি নগদ অর্থের ঘাটতি ০.৩৩ টাকা। অথচ এর আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি নগদ অর্থ ছিল ০.১৯ টাকা।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

নগদ অর্থের ঘাটতিতে ১১ ব্যাংক

আপডেট টাইম : ১১:৩৫ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৪ অগাস্ট ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ  পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত ১১টি ব্যাংকের নগদ অর্থের ঘাটতি দেখা দিয়েছে। এর কারণ- আমানত প্রবৃদ্ধির চেয়ে ঋণ প্রবৃদ্ধি বেশি হওয়া। ব্যাংকগুলোর সর্বশেষ প্রকাশিত ২০১৭ বছরের অর্ধবার্ষিক অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনায় এমন তথ্য মিলেছে।

কোন কোম্পানির কাছে কি পরিমাণ নগদ অর্থ আছে তা অপারেটিং ক্যাশ ফ্লোর মাধ্যমে প্রকাশ করা হয়। একাধিক নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠানের শীর্ষ ব্যক্তিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কোনো ব্যাংকের ক্যাশ ফ্লো ঋণাত্মক হয়ে যাওয়া মানে ওই ব্যাংকটিতে নগদ অর্থের সংকট তৈরি হওয়া। শেয়ারপ্রতি ক্যাশ ফ্লো (এনওসিএফপিএস) যত বেশি ঋণাত্মক, নগদ অর্থের সংকটও তত বেশি। এ অবস্থা তৈরি হলে চাহিদা মেটাতে ব্যাংকটিকে চড়া মাশুলে স্বল্প মেয়াদে টাকা ধার করতে হয়। তাতে খরচ বাড়ে। আর খরচ বাড়লে আয় কমে যাবে, এটাই স্বাভাবিক।

তারা আরো বলেন, শেয়ারবাজারের ক্ষেত্রে যেকোনো কোম্পানির শেয়ারপ্রতি ক্যাশ ফ্লোও একটি গুরুত্বপূর্ণ নির্দেশক। এটির মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির আর্থিক অবস্থার ধারণা পাওয়া যায়। ক্যাশ ফ্লো ঋণাত্মক মানে ওই কোম্পানির কাছে নগদ অর্থের ঘাটতি রয়েছে। আর ক্যাশ ফ্লো ইতিবাচক মানে হলো ওই কোম্পানির হাতে উদ্বৃত্ত তহবিল রয়েছে।

জানা যায়, চলতি বছরের ৬ মাসে সবচেয়ে বেশি নগদ অর্থের ঘাটতি রয়েছে ট্রাস্ট ব্যাংকে। ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো ২৬.৫২ টাকা ঋণাত্মক। অথচ এর আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো ৩২.৬৬ টাকা ছিল। অর্থাৎ ব্যাংকটিতে উদ্বৃত্ত অর্থ ছিল।

এরপরই নগদ অর্থের সংকটে রয়েছে ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংক। ব্যাংকটির শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো ২৫.০৯ টাকা ঋণাত্মক। এর আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি ক্যাশ ফ্লো ৬.৯২ টাকা ঋণাত্মক ছিল। অর্থাৎ অর্থের ঘাটতি বেড়েছে ১৮.১৭ টাকা।

ইসলামি ব্যাংকের শেয়ার প্রতি নগদ অর্থের ঘাটতি ১৪.০৬ টাকা। এর আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি নগদ অর্থের ঘাটতি ছিল ৪.৩০ টাকা। অর্থাৎ অর্থের ঘাটতি বেড়েছে ৯.৭৬ টাকা।

মিউচ্যুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংকের শেয়ার প্রতি নগদ অর্থের ঘাটতি ১১.৮৮ টাকা। এর আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি নগদ অর্থের ঘাটতি ছিল ২.১২ টাকা। অর্থাৎ অর্থের ঘাটতি বেড়েছে ৯.৭৬ টাকা।

দ্যা সিটি ব্যাংকের শেয়ার প্রতি নগদ অর্থের ঘাটতি ১০.৯৮ টাকা। অথচ এর আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি নগদ অর্থ ছিল ০.৮২ টাকা।

ঢাকা ব্যাংকের শেয়ার প্রতি নগদ অর্থের ঘাটতি ১০.৪২ টাকা। এর আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি নগদ অর্থের ঘাটতি ছিল ৫.২৭ টাকা। অর্থাৎ অর্থের ঘাটতি বেড়েছে ৫.১৫ টাকা।

ব্যাংক এশিয়ার শেয়ার প্রতি নগদ অর্থের ঘাটতি ৭.৩৬ টাকা। এর আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি নগদ অর্থের ঘাটতি ছিল ১২.০৭ টাকা। অর্থাৎ ঘাটতি কমেছে ৪.৭১ টাকা।

সাউথইস্ট ব্যাংকের শেয়ার প্রতি নগদ অর্থের ঘাটতি ৪.৫৩ টাকা। অথচ এর আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি নগদ অর্থ ছিল ৫.৬৬ টাকা।

যমুনা ব্যাংকের শেয়ার প্রতি নগদ অর্থের ঘাটতি ১.৬৮ টাকা। এর আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি নগদ অর্থের ঘাটতি ছিল ৫.৪০ টাকা। অর্থাৎ ঘাটতি কমেছে ৩.৭২ টাকা।

শাহজালাল ইসলামি ব্যাংকের শেয়ার প্রতি নগদ অর্থের ঘাটতি ০.৩৬ টাকা। অথচ এর আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি নগদ অর্থ ছিল ৩.৮৫ টাকা।

আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের শেয়ার প্রতি নগদ অর্থের ঘাটতি ০.৩৩ টাকা। অথচ এর আগের বছর একই সময়ে শেয়ার প্রতি নগদ অর্থ ছিল ০.১৯ টাকা।