বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে মানুষ ভয়াবহ মারণাস্ত্র তৈরি করেছে। এসব মারণাস্ত্র নিমিষেই ধ্বংসলীলা তৈরি করতে পারে।
চলুন জেনে নিই বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ ১০ আগ্নেয়াস্ত্র সম্পর্কে-
১. উজি সাব-মেশিনগান: ইজরায়েলের উজি গালের নির্মিত এই মারণাস্ত্রটি শুটারদের বিশেষ কাজের জিনিস। আকৃতিতে ছোট, ওজনেও হালকা এই বন্দুকটি দিয়ে খুব সহজেই নিশানায় আঘাত করা যায়।
২. থম্পসন এম ১৯২১ সাব-মেশিনগান: গোয়েন্দা সংস্থাদের ‘কিলার’ ও জঙ্গিদের হাতে এই বন্দুক দেখা যায়। টার্গেটে নিখুঁত বন্দুকটি হানা দিতে পারে ও রক্ষণাবেক্ষণ খরচ কম বলে এটি বিশ্বজুড়েই অত্যন্ত জনপ্রিয়। মার্কিন প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তারক্ষীদের হাতে সবসময় শোভা পায় থম্পসন এম ১৯২১।
৩. ডিএসআর প্রিসিসন ডিএসআর স্নাইপার রাইফেল: দূরপাল্লার ও এখন পর্যন্ত সবচেয়ে নিখুঁত নিশানায় আঘাত হানতে সক্ষম এই ডিএসআর প্রিসিসন ডিএসআর স্নাইপার রাইফেল জার্মানির তৈরি। এই অসাধারণ বন্দুকটিতে বাড়তি বুলেট ও ম্যাগাজিনের জন্য আলাদা একটি হোল্ডার রয়েছে।
যার জন্য একবার গুলি চালানো হয়ে গেলেও পরের বার রিলোড করতে বেশি সময় লাগে না। বিশ্বের সবচেয়ে ভয়াবহ এই বন্দুকের ক্যালিবার সাইজ ৭.৬২x৫১ এমএম ও ৬৬০ এমএম।
৪. এমজি৩ মেশিনগান: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় এই বন্দুক সবথেকে বেশি ব্যবহৃত হয়েছিল। এই আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের সবচেয়ে বড় সুবিধা হল, এর গুলি ভরার চেম্বার খালি হয়ে গেলে খুব তাড়াতাড়ি ‘রিলোড’ করা যায়। জনপ্রিয় সিনেমা র্যাম্বো-য় স্ট্যালনকে এই বন্দুক হাতেই বেশি দেখা গেছে।
৫. এফ-২০০ অ্যাসল্ট রাইফেল: বেলজিয়াম সংস্থা এফ এন হার্সট্যালের তৈরি এই বন্দুকের যত প্রশংসা করা যায় ততই কম বলা হয়। ২০০১ সালে আবু ধাবিতে এর মারণ-ক্ষমতা পরীক্ষা করে দেখা যায়, এর নিশানা কখনো বিফল হয় না। ন্যাটো এই আগ্নেয়াস্ত্র সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে। ৫.৫৬x৪৫ এম ক্যালিবারের বুলেট একে মার্কিন সেনাবাহিনীর অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হিসেবে গড়ে উঠতে সাহায্য করেছে।
৬. হেকলার কোচ এইচকে এমজি৪ এমজি ৪৩ মেশিনগান: জার্মানির সংস্থা হেকলার অ্যান্ড কোচ ১৯৯০ সালে এই বন্দুকের ডিজাইন তৈরি করা শুরু করে। কাজ মনের মতো হচ্ছিল না বলে টানা দশবছর চলে গবেষণা। শেষ পর্যন্ত ২০০১ সালে এই মারণাস্ত্রের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়।
এই বন্দুক সবচেয়ে কম সময়ে সবচেয়ে বেশি রাউন্ড গুলি ছুঁড়তে পারে। টার্গেট ‘মিস’ করার প্রবণতা এই বন্দুকের মাত্র ০.০১ শতাংশ। তাই এই মেশিনগানকে অনেকে আদর করে ‘কিলার মেশিন’ বলেও ডাকেন।
৭. থম্পসন এম১৯২ মেশিনগান: মাত্র এক মিনিটে এই বন্দুক ৬০০ রাউন্ড গুলি ছুঁড়তে পারে। যা দেখে মার্কিন সেনারাও বেশ অবাক হয়েছিল। তবে এখন পর্যন্ত নিরাপত্তা রক্ষার কাজেই এই বন্দুক সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করা হয়।
৮. এক্স এম ৩০৭ এসিডব্লিউ অ্যাডভান্সড হেভি মেশিনগান: মার্কিন সেনাদের এই বন্দুকটি আক্ষরিক অর্থেই ‘হেভি’। কারণ, একজনের পক্ষে একে চালানো অসম্ভব। দুইজন মিলে এটি ‘ট্রিগার’ করতে হয়।
এক মিনিটে ২৬০ রাউন্ড গুলি চালানো যায়। এর ক্যালিবারের আকৃতিও তুলনামূলক মেশিনগানগুলোর থেকে বড়। তাই নিশানায় থাকা শত্রুর ক্ষতি বেশি হয়।
৯. হেকলার অ্যান্ড কোচ এইচকে৪১৬ অ্যাসল্ট রাইফেল: এইচকে ৪১৬ অ্যাসল্ট রাইফেল একটি মাস্টারপিস। মারণ-ক্ষমতার বিচারে এবং আক্ষরিক অর্থেই কুখ্যাত মার্কিন এম৪ বন্দুকের জার্মান ভার্সন।
১০. কালাশনিকভ একে ৪৭: শুধু এই দশক নয়, গত কয়েক দশক ধরে মানবজাতির সামনে সবথেকে বড় হুমকি হয়ে দেখা গিয়েছে একে ৪৭-কে। মাত্র এক মিনিটে ৫৮০ রাউন্ড ‘ফায়ার’ করতে পারে এই মারণ বন্দুক। অস্ত্রশস্ত্রের বাজারে একে বলা হয় ক্লাসিক ফায়ারআর্ম। আজও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও জঙ্গি সংগঠন এই বন্দুক ব্যবহার করে শুধুমাত্র এর নিখুঁত কারিগরির জন্য।
কালাশনিকভ অ্যাসল্ট রাইফেলের (এ কে ফরটি সেভেন) উদ্ভাবক মিখাইল কালাশনিকভ। কালাশনিকভের অটোমেটিক রাইফেল এখনও বিশ্বের সবচেয়ে বহুল ব্যবহৃত একটি আগ্নেয়াস্ত্র। কালাশনিকভ রাইফেলের ডিজাইন খুব সরল হওয়ায় এটি তৈরি করতে খরচ পড়ে খুব কম এবং এটির রক্ষণাবেক্ষণও খুব সহজ।