বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ অন্ধকার কোনো লাইব্রেরির দৃশ্য নিশ্চয় কল্পনাতেও নেই! লাইব্রেরি আবার অন্ধকার হয় নাকি? তাহলে বই কিনবো বা পড়বো কীভাবে?
ঠিক এমনই এক লাইব্রেরি রয়েছে তাইওয়ানে। বইপড়ুয়াদের ভিন্ন এক অভিজ্ঞতা দিতেই চালু হয়েছে অন্ধকার এই লাইব্রেরি। সেখানে অন্ধকারে ছোট ছোট আলোয় বই পড়তে হয় পড়ুয়াদের।
দোকানের নাম উগুয়ান বুকস। তাইওয়ানের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর এর কাওশিয়ং পিয়ের-২ নামের আর্ট সেন্টারে এই বইয়ের দোকানটি।
আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পুরষ্কারপ্রাপ্ত স্থপতি চু চি-কাং এই বই দোকানটির নকশা করেছেন। শুধু তাই নয়, চীনের চেংদুতে ফাংশুও বুকস্টোরের নকশাও করেছেন তিনি।
এই ফাংশুও বুকস্টোরটিকে পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর বইয়ের দোকান হিসেবে আখ্যা দিয়েছেন নেটিজেনরা। যাই হোক, তাইওয়ানের উগুয়ান বুকস এ কোনো ধরণের ফ্ল্যাশলাইট জ্বালানো নিষেধ।
ভেতরের অন্দরসজ্জার জন্যই এই নিয়ম। কেন? এই দোকানটিতে ৪০০ এরও বেশি বইয়ের তাক আছে। তাকগুলোতে বই সাজানো এবং প্রতিটি বইয়ের ওপর এমনভাবে আলো ফেলা হয়েছে যাতে মনে হয় বইগুলো হাওয়ায় ভাসছে।
চারপাশে আর কিছুই দেখা যায় না, এমনকি তাকগুলোও নয়। দোকানটির ম্যানেজার সু ইয়ু শান বলেন, পাঠক ও ক্রেতারা যাতে শুধুমাত্র বইয়ের উপর মনোযোগ দিতে পারেন সেজন্য এমন নকশা।
তবে এই অন্ধকারে হাঁটা-চলা করতে সমস্যা হলে কি ফোনের ফ্ল্যাশলাইট জ্বালানো যাবে? না, কিছুইতেই না। এতে করে অন্দরসজ্জার ভাসমান বইয়ের জাদুটাই হারিয়ে যাবে।
তবে শুধু এটাই নয়, দোকানে ঢুকতেই আরও মজার মজার নিয়ম লেখা একটা বোর্ড চোখে পড়বে আপনার। সেখানে লেখা- অন্ধকারে কেউ আপনার পা মাড়িয়ে গেলে চেঁচাবেন না, আপনিও তার পা মাড়িয়ে দিন।
কিংবা ‘আপনার পছন্দের বইটিই যদি আরেকজন পছন্দ করে বসে, তাহলে দেরি না করে আগেই কিনে ফেলুন আর নয়তো সেই ভদ্রলোকের ফোন নম্বর জোগাড় করুন যাতে পড়ে তার কাছ থেকে নিয়ে পড়তে পারেন ইত্যাদি।
তবে এখানে এত অন্ধকার যে আপনি যদি মনে করেন ভেতরে গিয়ে ইন্সটাগ্রামে দেয়ার জন্য ছবি তুলবেন- সম্ভব নয়। ভেতরে অন্ধকার, বই পড়ার জন্য ছাড়া ছবি তোলার পর্যাপ্ত আলো নেই সেখানে।
এ বিষয়ে লাইব্রেরির ম্যানেজার সু বলেন, উগুয়ান এ আপনি আসবেন পড়তে, বইয়ের জগতে নিজের সঙ্গে সময় কাটাতে। এখানে আপনার স্বত্ত্বা ছাড়া আর কারও সামনাসামনি হতে হবে না আপনাকে। কারও সামনে যেতে সাজগোজের চিন্তা করতে হবে না। এখানে নিজের সঙ্গে সময় কাটান, ভালো লাগবে।