বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ সস্তায় ও সহজলভ্য প্রোটিনের সেরা ভাণ্ডার ডিম। ডিমের কুসুম এমনিতেই সুষম খাবার। গবেষণায় দেখা গেছে, ডিমের কুসুম খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ায় না । ডিম দিয়ে অমলেট, স্ক্রাম্বেলড এগ, ডিমের কালিয়া ইত্যাদি করে খাওয়া হয়। এসব খাবার খেতে সুস্বাদু হলেও এতে ডিমের পুষ্টিগুণ চলে যায় । সিদ্ধ করা ডিমে যে পরিমাণ পুষ্টি পাওয়া যায় সেটা রান্না করা ডিমে পাওয়া যায় না।
খাওয়াদাওয়া থেকে রূপচর্চায় ব্যবহার—ডিমের প্রয়োজনীয়তা কমবেশি সব গৃহস্থ বাড়িতেই রয়েছে। ডিম সেদ্ধ থেকে ডিমের ঝোল সব পদই আমবাঙালির প্রিয় পদ। তবে ডিম কেবল খাওয়া বা রূপচর্চাতেই কাজে লাগে এমন ভাবলে মস্ত ভুল করবেন।
শুধু ডিম নয়, ডিমের খোসাও অত্যন্ত দরকারি। ডিম ব্যবহার করার পর আমরা সাধারণত তার খোসাটা ফেলে দিই। কিন্তু এবার থেকে ডিমের খোসা ফেলবেন না। অনেক কাজেই ডিমের খোসা ব্যবহার করা যেতে পারে। জেনে নিন ডিমের খোসা ভিন্ন ব্যবহার। ডিমের এই অজানা ব্যবহারগুলো জানলে রোজনামচায় কাজে লাগাতে পারেন আপনিও।
গাছের জন্য
ডিম সেদ্ধর পর সেই জল ও ডিমের খোলা গুঁড়িয়ে গাছের গোড়ায় দিন। ডিমের খোলা গাছের শরীরে ক্যালসিয়ামের জোগান বাড়াতে খুব কার্যকর। গাছকে নানা পতঙ্গের হাত থেকেও বাঁচায় ডিমের খোলা।
কন্ডিশনার
হঠাৎ কন্ডিশনার ফুরিয়ে গিয়েছে? চিন্তার কারণ নেই। অলিভ অয়েল আর ডিমের কুসুম একসঙ্গে মিশিয়ে শ্যাম্পুর পর লাগিয়ে রাখুন চুলে। বাজারচলতি কন্ডিশনারের চেয়ে এই ঘরোয়া ব্যবহারে চুল ভাল হবে।
গয়না পরিষ্কার
রুপোর গয়না দিন কয়েক পরলেই কালো হয়ে যাওয়ার ভয় থাকে। বাতাসের অক্সিজেনের প্রভাবেই এমনটা হয়। ডিম এই গয়নাগুলোকে পরিষ্কার করে ঝকঝকে করে দিতে পারে সহজেই। ডিম অনেক ক্ষণ ধরে খুব শক্ত করে সেদ্ধ করে নিতে হবে এ ক্ষেত্রে। এর পর খোসা ছাড়িয়ে দু’ভাগ করে কুসুম ছাড়িয়ে নিন। এ বার সেই কুসুম একটি ঢাকনাযুক্ত পাত্রে রেখে হাত দিয়ে ঝুরঝুরো করে গুঁড়িয়ে নিন। এ বার তাতে হালকা কোনও পেপার টাওয়েল বিছিয়ে তার উপর রাখুন রুপোর গয়নাগুলো। পাত্রের মুখের চার পাশে ময়দার প্রলেপ লেপে বায়ুনিরুদ্ধ করে বন্ধ করে দিন। দু’দিন পর সেই গয়নাগুলো বার করলেই দেখবেন, কালো ভাব একেবারে উধাও। ডি-অক্সিডাইজার হিসেবে ডিমের এই ব্যবহার নানা গয়নাতেও ব্যবহার করা হয়।
সিংক পরিষ্কারে
রান্নাঘরের সিংক পরিষ্কার করতেও ডিমের খোসা দারুন কাজে লাগতে পারে। সিংকের নলে খাবারের টুকরো আটকে অনেক সময় মুখ বন্ধ হয়ে যায়। বাসন পরিষ্কার করার সময় সিংকের মুখে একটু বড় সাইজের ডিমের খোসা রেখে দিলে খাবারের টুকরো তার মধ্যে থেকে যাবে।
রক্ত বন্ধ করতে
পিকনিকে গিয়ে বা বাড়ির মধ্যেই কোনও দুর্ঘটনাবশত কেটে গেলে দেখা যায় অনেক সময় রক্ত বন্ধ হতে চায় না। এ সময় ডিমকে কাজে লাগান। এমনিতে বাড়িতে ডিম মজুত থাকে প্রায় সকলেরই। কিংবা কোথাও পিকনিকে গেলে ডিম সেদ্ধ সঙ্গে নিয়ে যাওয়া আমাদের বরাবরের অভ্যাস। সেদ্ধ ডিমের খোলা ও সাদা অংশের মাঝে যা পাতলা খোসা থাকে তা ছাড়িয়ে নিন। সেই খোসা ক্ষতস্থানে চেপে ধরে থাকলেই রক্ত বন্ধ হবে দ্রুত। এমনকি দ্রুত ক্ষতের দাগ মেলাতেও এটি বেশ কার্যকর।
জুতা পরিষ্কারে
পুরনো চামড়ার জুতার মধ্যে সাদা ঘোলাটে দাগ পড়ে যায়। ছত্রাকও জন্মাতে পারে। লকডাউনে জুতার ব্যবহারই তো কমে এসেছে। ডিমের সাদা অংশ কাপড়ে নিয়ে ঘষে ঘষে পরিষ্কার করুন।
আঠা হিসেবে
বাড়িতে আঠা ফুরিয়ে গিয়েছে? ময়দা, চিনি, ডিমের সাদা অংশ আর অল্প জল মিশিয়ে তৈরি করা যাবে আঠা। সেই আঠাই ব্যবহার করতে পারেন বিকল্প হিসেবে।
ফ্লাস্ক পরিষ্কার করতে
ফ্লাস্ক পরিষ্কার করতেও ডিমের খোসা ব্যবহার করতে পারেন। ডিমের খোসা টুকরো করে ফ্লাস্কের ভেতরে ফেলে দিন, তার মধ্যে গরম পানি দিন। এবার মুখ বন্ধ করে ভালো করে ঝাঁকিয়ে নিয়ে খোসাসুদ্ধ পানি ফেলে দিন। দেখবেন ফ্লাস্ক একদম নতুনের মতো হয়ে গেছে।