ঢাকা , শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ৫ আশ্বিন ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

এখনো ঘানি ভাঙান মোদাচ্ছের

নওগাঁ জেলার পোরশা উপজেলার গাঙ্গুরিয়া ইউপি’র ছোট মামুরিয়া গ্রামের মোদাচ্ছের রহমান। তিনি প্রায় ৩০ বছর  থেকে এই ঘানি শিল্পের ব্যবসা করে আসছেন। তার ঘানিতে সরিষা ভেঙে তিনি তেল ও খোল বিক্রি করেন উপজেলার বড় দু’টি সাপ্তাহিক হাটে। তবে তার বাড়িতে কেউ তেল বা খোল কিনতে এলে সেখানেও তিনি বিক্রি করেন।
সরজমিন, ছোট মামুরিয়া গ্রামের মোদাচ্ছের রহমানের ঘানিতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির বাইরে ছোট্ট একটি ঘর। ঐ ঘরের ভেতরেই রয়েছে তার ঘানি। ঘরের মাঝ খানে রয়েছে একটি গাছ জাতীয় জিনিস। সেটির মাথায় রাখা হয়েছে অনেক খানি সরিষা। তার গোড়া দিয়ে বের হচ্ছে তেল। তেল ধরার জন্য রাখা হয়েছে ছোট একটি পাত্র। একটি গরু ঘানি টানছে। গরুটি ওই গাছের চারদিকে ঘুরেই যাচ্ছে। আর ক্যাঁচর ক্যাঁচর শব্দ হচ্ছে। বাইরে আরেকটি গরু রাখা হয়েছে। বর্তমানে ঘানি টানা গরুটি ক্লান্ত হলে বাইরে রাখা গরুটি দিয়ে টানানো হবে। অনেক সময় একটি গরু দিয়ে ঘানি টানা সম্ভব হয় না। তাই দু’টি গরু রাখা হয়েছে। যেন একটি অচল হলে আরেকটি দিয়ে কাজ পার করা যায়। ঘানি টানা অবস্থায় গরুর চোখ কাপড় দিয়ে বেঁধে দেয়া হয়েছে। প্রতিবারে সর্বোচ্চ  ৫ কেজি সরিষা ভাঙা সম্ভব হয়। আর এই ৫ কেজি সরিষা থেকে প্রায় ২ কেজি তেল উৎপাদন করা যায়। ৫ কেজি সরিষা ভাঙতে সময় লাগে প্রায় ২ ঘণ্টা। পর্যায়ক্রমে একই দিনে একই ভাবে পুনরায় তেল ভাঙা হয়। এইভাবে দিনে পর্যায়ক্রমে একটি ঘানি থেকে ৩০-৩৫ কেজি সরিষা ভাঙা সম্ভব হয়। বাজারে এ তেলের চাহিদাও বেশ লক্ষ্য করা যায়। প্রতি কেজি ঘানির এ তেল বিক্রি হয় ১৫০ টাকা দরে। যা অন্যান্য তেলের তুলনায় দেড়গুণ বেশি দাম। ঘানির মালিক মোদাচ্ছের রহমান জানান, তিনি প্রতিদিন ঘানি টানান। এবং তেল ভাঙেন। শুধুমাত্র সপ্তাহের মঙ্গলবার তিনি ঘানি বন্ধ রাখেন। কারণ হিসেবে তিনি জানান, তার গ্রামের পার্র্শ্বে পোরশা উপজেলার একটি বড় সাপ্তাহিক গাঙ্গুরিয়া হাট। সেদিন তাকে নিজের বাড়ির বাজার করতে হয়। এবং তাকে তেলের দোকানও দিতে হয়। বিভিন্ন এলাকার মানুষ সেদিন তার দোকান থেকে তেল ও খোল কিনে নিয়ে যান। পাশাপাশি তিনি উপজেলার শিসা হাটও করেন। সেখানেও তিনি প্রচুর তেল বিক্রি করেন। ঘানের তেল ও খোল হওয়ায় বাজারে তার তেলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

এখনো ঘানি ভাঙান মোদাচ্ছের

আপডেট টাইম : ০৩:০২ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৮ জুন ২০১৭

নওগাঁ জেলার পোরশা উপজেলার গাঙ্গুরিয়া ইউপি’র ছোট মামুরিয়া গ্রামের মোদাচ্ছের রহমান। তিনি প্রায় ৩০ বছর  থেকে এই ঘানি শিল্পের ব্যবসা করে আসছেন। তার ঘানিতে সরিষা ভেঙে তিনি তেল ও খোল বিক্রি করেন উপজেলার বড় দু’টি সাপ্তাহিক হাটে। তবে তার বাড়িতে কেউ তেল বা খোল কিনতে এলে সেখানেও তিনি বিক্রি করেন।
সরজমিন, ছোট মামুরিয়া গ্রামের মোদাচ্ছের রহমানের ঘানিতে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ির বাইরে ছোট্ট একটি ঘর। ঐ ঘরের ভেতরেই রয়েছে তার ঘানি। ঘরের মাঝ খানে রয়েছে একটি গাছ জাতীয় জিনিস। সেটির মাথায় রাখা হয়েছে অনেক খানি সরিষা। তার গোড়া দিয়ে বের হচ্ছে তেল। তেল ধরার জন্য রাখা হয়েছে ছোট একটি পাত্র। একটি গরু ঘানি টানছে। গরুটি ওই গাছের চারদিকে ঘুরেই যাচ্ছে। আর ক্যাঁচর ক্যাঁচর শব্দ হচ্ছে। বাইরে আরেকটি গরু রাখা হয়েছে। বর্তমানে ঘানি টানা গরুটি ক্লান্ত হলে বাইরে রাখা গরুটি দিয়ে টানানো হবে। অনেক সময় একটি গরু দিয়ে ঘানি টানা সম্ভব হয় না। তাই দু’টি গরু রাখা হয়েছে। যেন একটি অচল হলে আরেকটি দিয়ে কাজ পার করা যায়। ঘানি টানা অবস্থায় গরুর চোখ কাপড় দিয়ে বেঁধে দেয়া হয়েছে। প্রতিবারে সর্বোচ্চ  ৫ কেজি সরিষা ভাঙা সম্ভব হয়। আর এই ৫ কেজি সরিষা থেকে প্রায় ২ কেজি তেল উৎপাদন করা যায়। ৫ কেজি সরিষা ভাঙতে সময় লাগে প্রায় ২ ঘণ্টা। পর্যায়ক্রমে একই দিনে একই ভাবে পুনরায় তেল ভাঙা হয়। এইভাবে দিনে পর্যায়ক্রমে একটি ঘানি থেকে ৩০-৩৫ কেজি সরিষা ভাঙা সম্ভব হয়। বাজারে এ তেলের চাহিদাও বেশ লক্ষ্য করা যায়। প্রতি কেজি ঘানির এ তেল বিক্রি হয় ১৫০ টাকা দরে। যা অন্যান্য তেলের তুলনায় দেড়গুণ বেশি দাম। ঘানির মালিক মোদাচ্ছের রহমান জানান, তিনি প্রতিদিন ঘানি টানান। এবং তেল ভাঙেন। শুধুমাত্র সপ্তাহের মঙ্গলবার তিনি ঘানি বন্ধ রাখেন। কারণ হিসেবে তিনি জানান, তার গ্রামের পার্র্শ্বে পোরশা উপজেলার একটি বড় সাপ্তাহিক গাঙ্গুরিয়া হাট। সেদিন তাকে নিজের বাড়ির বাজার করতে হয়। এবং তাকে তেলের দোকানও দিতে হয়। বিভিন্ন এলাকার মানুষ সেদিন তার দোকান থেকে তেল ও খোল কিনে নিয়ে যান। পাশাপাশি তিনি উপজেলার শিসা হাটও করেন। সেখানেও তিনি প্রচুর তেল বিক্রি করেন। ঘানের তেল ও খোল হওয়ায় বাজারে তার তেলের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।