ঢাকা , শুক্রবার, ১৫ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ট্রেনে চেপে ভারত থেকে বাংলাদেশে এলো ১২ হনুমান

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ  মালবাহী একটি ট্রেনের একটি বগি ছিল পুরো খালি। হনুমান পরিবারটির কর্তা হয়তো ভেবেছিল, খালি বগিতে পুরো পরিবার নিয়ে চড়ে বেশ ভালোই একটা ভ্রমণ করা যাবে। তাই সবাইকে নিয়েই ট্রেনে উঠেছিল ওই কর্তা। কিন্তু সে ট্রেন তাদের ভারত থেকে নিয়ে এসেছে বাংলাদেশে। এখন ভারতের ১২ সদস্যের এ হনুমান পরিবারটি রাজশাহীর গোদাগাড়ী ও পবা উপজেলার কয়েকটি গ্রামে অবস্থান করছে। গাছে-গাছে লাফিয়ে বেড়াচ্ছে, দাঁত খিচিয়ে ভেংচি কাটছে, আবার কেউ কোনো খাবার দিলে খাচ্ছে। হনুমানগুলো দেখতে রীতিমতো ভিড়ও জমে যাচ্ছে এলাকায়।
শনিবার বিকালে পবার দামকুড়াহাট এলাকায় গিয়ে চারটি হনুমান দেখা যায়। একটি হনুমান বসে ছিল রবার্ট রিচার্ড মুর্মুর বাড়ির টিনের ছাদে। রবার্ট জানান, গ্রামের কয়েকটি বাড়ি ঘুরে ঘণ্টা দুয়েক আগে হনুমানটি তার বাড়িতে এসেছে। তিনি বলেন, কলা দিচ্ছি, পাউরুটি দিচ্ছি, পানি দিচ্ছি-সবই খাচ্ছে। খুব খিদে পেয়েছে মনে হয়। লোকজন দেখার জন্য আসছে। কেউ কেউ বিরক্ত করছে। কেউ যেন বিরক্ত না করে সেজন্য মেম্বার (ইউপি সদস্য) ইবরাহীম আলীকে জানিয়েছি। জানা গেছে, পবার শিতলাই, কাদিপুর, রায়পাড়া ও গোদাগাড়ীর আলোকছত্র গ্রামে আরও আটটি হনুমান অবস্থান করছে। আলোকছত্র গ্রামের ফিরোজ কবির জানান, হনুমানগুলোর মুখ কুচকুচে কালো। কেউ কাছে গিয়ে ছবি তোলার চেষ্টা করলেই দাঁত খিচিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। শিতলাই গ্রামের মজিবর রহমান বলেন, শুক্রবার ভোরে বাড়ির সামনে বসেছিলাম। তখন রেললাইনে একটি ট্রেনকে ক্রস করার জন্য মালবাহী আরেকটি ট্রেন দাঁড়িয়েছিল। এ সময় একটি খালি বগি থেকে একসঙ্গে নেমে এলো ১২টি হনুমান। তারপর হনুমানগুলো বিভিন্ন গ্রামে ছড়িয়ে গেছে। এ গ্রামের আবদুর রাকিব নামে আরেক ব্যক্তি জানান, সোনামসজিদ স্থালবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পাথর আমদানি করে বাংলাদেশ। পাথরের ট্রেনে চড়ে মাঝে মাঝেই ভারতীয় হনুমান এসব এলাকায় আসে। অনেক সময় হনুমান মানুষকে বিরক্ত করে, আবার বেশিরভাগ সময় মানুষ তাদের বিরক্ত করে। রাকিব বলেন, উপযুক্ত পরিবেশ এবং খাবারের অভাবে ভারত থেকে আসা হনুমান মারাও যায়। কিন্তু তাদের উদ্ধার করে না বনবিভাগ। বাংলাদেশের সব এলাকায় যেহেতু হনুমান দেখা যায় না, তাই এসব হনুমান উদ্ধার করে নিরাপদ পরিবেশে নিয়ে অবমুক্ত করা দরকার।
রাজশাহী বিভাগীয় বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক এ কে এম রুহুল আমিন জানান, হনুমান সাধারণত একটি পরিবার এক সঙ্গে থাকে। তাই তাদের সবাইকে ধরা খুব কঠিন। তবে বিচ্ছিন্নভাবে কেউ একটি-দুটি ধরে রাখলে এবং খবর পেলে সেগুলো উদ্ধার করা হয়। পবা-গোদাগাড়ীর নতুন এসব হনুমানের ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না বলেও জানান।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

ট্রেনে চেপে ভারত থেকে বাংলাদেশে এলো ১২ হনুমান

আপডেট টাইম : ০৫:২১ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ জুন ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ  মালবাহী একটি ট্রেনের একটি বগি ছিল পুরো খালি। হনুমান পরিবারটির কর্তা হয়তো ভেবেছিল, খালি বগিতে পুরো পরিবার নিয়ে চড়ে বেশ ভালোই একটা ভ্রমণ করা যাবে। তাই সবাইকে নিয়েই ট্রেনে উঠেছিল ওই কর্তা। কিন্তু সে ট্রেন তাদের ভারত থেকে নিয়ে এসেছে বাংলাদেশে। এখন ভারতের ১২ সদস্যের এ হনুমান পরিবারটি রাজশাহীর গোদাগাড়ী ও পবা উপজেলার কয়েকটি গ্রামে অবস্থান করছে। গাছে-গাছে লাফিয়ে বেড়াচ্ছে, দাঁত খিচিয়ে ভেংচি কাটছে, আবার কেউ কোনো খাবার দিলে খাচ্ছে। হনুমানগুলো দেখতে রীতিমতো ভিড়ও জমে যাচ্ছে এলাকায়।
শনিবার বিকালে পবার দামকুড়াহাট এলাকায় গিয়ে চারটি হনুমান দেখা যায়। একটি হনুমান বসে ছিল রবার্ট রিচার্ড মুর্মুর বাড়ির টিনের ছাদে। রবার্ট জানান, গ্রামের কয়েকটি বাড়ি ঘুরে ঘণ্টা দুয়েক আগে হনুমানটি তার বাড়িতে এসেছে। তিনি বলেন, কলা দিচ্ছি, পাউরুটি দিচ্ছি, পানি দিচ্ছি-সবই খাচ্ছে। খুব খিদে পেয়েছে মনে হয়। লোকজন দেখার জন্য আসছে। কেউ কেউ বিরক্ত করছে। কেউ যেন বিরক্ত না করে সেজন্য মেম্বার (ইউপি সদস্য) ইবরাহীম আলীকে জানিয়েছি। জানা গেছে, পবার শিতলাই, কাদিপুর, রায়পাড়া ও গোদাগাড়ীর আলোকছত্র গ্রামে আরও আটটি হনুমান অবস্থান করছে। আলোকছত্র গ্রামের ফিরোজ কবির জানান, হনুমানগুলোর মুখ কুচকুচে কালো। কেউ কাছে গিয়ে ছবি তোলার চেষ্টা করলেই দাঁত খিচিয়ে ভয় দেখানোর চেষ্টা করছে। শিতলাই গ্রামের মজিবর রহমান বলেন, শুক্রবার ভোরে বাড়ির সামনে বসেছিলাম। তখন রেললাইনে একটি ট্রেনকে ক্রস করার জন্য মালবাহী আরেকটি ট্রেন দাঁড়িয়েছিল। এ সময় একটি খালি বগি থেকে একসঙ্গে নেমে এলো ১২টি হনুমান। তারপর হনুমানগুলো বিভিন্ন গ্রামে ছড়িয়ে গেছে। এ গ্রামের আবদুর রাকিব নামে আরেক ব্যক্তি জানান, সোনামসজিদ স্থালবন্দর দিয়ে ভারত থেকে পাথর আমদানি করে বাংলাদেশ। পাথরের ট্রেনে চড়ে মাঝে মাঝেই ভারতীয় হনুমান এসব এলাকায় আসে। অনেক সময় হনুমান মানুষকে বিরক্ত করে, আবার বেশিরভাগ সময় মানুষ তাদের বিরক্ত করে। রাকিব বলেন, উপযুক্ত পরিবেশ এবং খাবারের অভাবে ভারত থেকে আসা হনুমান মারাও যায়। কিন্তু তাদের উদ্ধার করে না বনবিভাগ। বাংলাদেশের সব এলাকায় যেহেতু হনুমান দেখা যায় না, তাই এসব হনুমান উদ্ধার করে নিরাপদ পরিবেশে নিয়ে অবমুক্ত করা দরকার।
রাজশাহী বিভাগীয় বন বিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক এ কে এম রুহুল আমিন জানান, হনুমান সাধারণত একটি পরিবার এক সঙ্গে থাকে। তাই তাদের সবাইকে ধরা খুব কঠিন। তবে বিচ্ছিন্নভাবে কেউ একটি-দুটি ধরে রাখলে এবং খবর পেলে সেগুলো উদ্ধার করা হয়। পবা-গোদাগাড়ীর নতুন এসব হনুমানের ব্যাপারে তিনি কিছু জানেন না বলেও জানান।