বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ বাড়ছে সচেতনতা, কমছে দূষণ। ফিরছে যৌবনে। একটা সময় রাজধানীর লেকগুলো প্রচণ্ড দখলে ও দূষণের কবলে ছিল। রাজধানীবাসীর সচেতনতায় দখল ও দূষণ থেকে মুক্তি মিলছে লেকগুলোর। বর্ষায় ফিরে পেয়েছে হারানো যৌবনও।
রাজধানীর লেকগুলো ঘুরে দেখা গেছে, ধানমণ্ডি লেকটি ধানমণ্ডি ১৫ নম্বর থেকে শুরু করে ধানমণ্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়ির সামনে গিয়ে শেষ হয়েছে। বৃষ্টিতে বেড়েছে এ লেকের পানি। ময়লা-আর্বজনা তেমন একটা দেখা যায়নি। বিকেল হলেই লেকগুলোতে ভিড় করছেন দর্শনার্থীরা।
ধানমণ্ডি সাত নম্বর এলাকায় লেকের মুখে ছোট বোটে ঘুরতে এসেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ত্বনী। ত্বনী বাঙালী কণ্ঠকে বলেন, এখন লেকের পানি বেড়েছে। দেখতে ভালো লাগছে। বোটে করে ঘুরবো।
বোটে লেক ঘুরে এসে নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক প্রেমিক যুগল জানান, আমরা তো নদীর পাড়ে যেতে পারি না। প্রকৃতির নির্মল বাতাস আর একান্তে সময় কাটাতে এখানেই আসা। পরিবেশ দেখে ভালোই লাগছে।
তারা জানান, আগে পথশিশুরা গোসল করতো। লেকের পানিতে লাফালাফি করতো। ময়লা আর প্লাস্টিকের বোতল ফেলা হতো। এখন তেমনটা চোখে পড়েনি। আগের থেকে লেকের পরিবেশ অনেক ভালো।
এদিকে, রাজধানীর রমনা পার্কের লেকেও পানি বেড়েছে। এতে প্রায় প্রতিদিন পার্কে বেড়াতে আসা দর্শনার্থীরা লেকের পাড়ে বসছেন। লেকের পাড়ে বসে ছবি অনেক দর্শনার্থীকে ছবি তুলতেও দেখা গেছে।
রমনা লেকের পাশে বসে ফটোশ্যুট করেছেন নবাগত মডেল অরণ্য জিয়া ও অহনা চৌধুরী। অরণ্য জিয়া বাঙালী কণ্ঠকে বলেন, লেকের পানি বেড়েছে। সে কারণে প্রকৃতির মনোরম দৃশ্যের সঙ্গে ছবি তুলছি।
এ সময় ‘ড্রিমস ডে’র আলোকচিত্রী নয়ন জান বলেন, অন্যান্য সময় লেকে পানি কম থাকে। লেক মরা মরা মনে হয়। আবার চারদিকে ময়লা-আবর্জনা থাকে। পানি বেশি থাকায় ময়লা-আবর্জনা নেই বললেই চলে।
ধানমণ্ডি লেকে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা প্রহরী লতা বাঙালী কণ্ঠকে বলেন, আমি এখানে তিন বছর ধরে কাজ করি। ১২ ঘণ্টা ডিউটি। আমরা তিনজন ধানমণ্ডির ৭ নম্বর থেকে ১৫ নম্বর দেখভাল করি, যাতে লেকের পরিবেশ কেউ নোংরা করতে না পারেন।
লতা জানান, পথশিশুরা আগে লেকগুলোতে গোসল করতো। এখন আর তাদের লেকে গোসল করতে দেওয়া হয় না। আগে গোসল করে তারা লেকের পানি নষ্ট করতো। একসময় এখানে হাঁস পালন করা হতো। এখন তা পুরোপুরি বন্ধ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সেভ দ্য পুর পিপলস’র চেয়ারম্যান ও ন্যাশনাল ফ্রেন্ডশিপ সোসাইটির উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট নোমান সালমান বাঙালী কণ্ঠকে বলেন, লেক নিয়ে একটা সময় সংবাদমাধ্যমের কর্মীরা সোচ্চার ভূমিকা পালন করেছেন। এ বিষয়ে নগরবাসী এখন সচেতন হয়েছেন। তারা এখন আর লেকে ময়লা ফেলেন না।
তিনি বলেন, আগে দেখা গেছে, অনেকে লেকের পাড়ে ঘুরতে এসে কোমল পানীয় পান করে এর প্লাস্টিকের বোতলটি লেকে ফেলতেন। অনেকে আবার বাসাবাড়িরও ময়লা ফেলতেন। এখন মানুষ অনেক সচেতন হয়েছেন। তারা লেকের উপকারিতা বুঝতে পেরেছেন। আর বর্ষায় তো লেকের পানি বাড়লে এর সৌন্দর্য বৃদ্ধি পাবে। লেক নগরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি ও পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় কাজ করে।