ঢাকা , শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শৈশবের অতিথি পাখির আগমন

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ শান্ত জলাশয়ে লাল শাপলার মাঝে জলকেলিতে মেতেছে পাখিগুলো। একটু পর পরই এক ঝাঁক পাখি পানিতে নামছে তো আর এক ঝাঁক উড়াল দিচ্ছে। যেন এটাও তাদের একধরনের খেলা। আপন নীড়ে আপনাতে মগ্ন থেকে আকৃষ্ট করছে ইট-পাথরের নগরীর মানুষকে। আর প্রকৃতির এই প্রাণচাঞ্চল্য দেখতে মানুষও তাই ছুটছে ঢাকার কাছেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে।

প্রতি বছরের মতো এবারও অসংখ্য পরিযায়ী পাখি ভিড় করেছে সেখানে। কত বিচিত্র বর্ণ আর আকৃতি তাদের ! ধূসর, বাদামি, কালো, লালচে রঙের শত শত দেশীয় সরালির পাশাপাশি বেশ কিছু নজরকাড়া অতিথি পাখির আগমন ঘটেছে গত দু’সপ্তাহে। প্রতিদিনই এদের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে পাখিপ্রেমী শৌখিন বা পেশাদার আলোকচিত্রী আর দেশি-বিদেশি পর্যটকের ভিড়।

গত বছরের ২০ নভেম্বর নোবেলজয়ী সাহিত্যিক ভিএস নাইপল বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্রে এক ঘণ্টা একান্তে বসে পাখি দেখেন। মিডিয়া থেকে জাবির অতিথি পাখির কথা শুনে পাখি দেখার জন্য ব্যক্তিগত সফরে জাহাঙ্গীরনগরে যান তিনি। সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজীনা তার দায়িত্বকালে প্রতি বছরই পাখি দেখতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতেন। তিনি বলতেন, অতিথি পাখির স্বর্গ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট-বড় প্রায় ২২টি জলাশয়ের মধ্যে প্রশাসনিক ভবনের সামনের লেক, জাহানারা ইমাম ও প্রীতিলতা হল সংলগ্ন লেক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনে ‘বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্রে’র দুটি জলাশয়ে অতিথি পাখির বিচরণ চোখে পড়ার মতো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পাখি গবেষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিবছর শীত মৌসুমে হাজার হাজার অতিথি পাখি দেশের হাওর এলাকাগুলোর পাশাপাশি যেখানে নিরাপদ আশ্রয়ের পরিবেশ ও খাবার পায়, সেখানে ভিড় জমায়। নভেম্বর-জানুয়ারিতে এরা আসে, আবার মার্চের শেষ দিকে ফিরে যায় আপন ঠিকানায়।

পাখি বিশেষজ্ঞ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যার অধ্যাপক মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ জানান, এখন যেসব পাখি এসেছে, এগুলো দেশীয় হাঁস প্রজাতির সরালি, সাইবেরিয়া অঞ্চল থেকে পাখি আসেনি। পুরোপুরি শীত পড়লে ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ সাইবেরিয়ার পরিযায়ী পাখি আসতে পারে।

অধ্যাপক মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ আরও বলেন,  ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে পাখি জরিপ করা হবে। আর আগামী ১৯ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে ১৬তম পাখিমেলা।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম বলেন, ‘অতিথি পাখির অনূকূল বিচরণক্ষেত্র তৈরির জন্য এ বছরও নানা প্রস্তুতি নেওয়া হয়।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

শৈশবের অতিথি পাখির আগমন

আপডেট টাইম : ০৪:৫৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ২৫ নভেম্বর ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ শান্ত জলাশয়ে লাল শাপলার মাঝে জলকেলিতে মেতেছে পাখিগুলো। একটু পর পরই এক ঝাঁক পাখি পানিতে নামছে তো আর এক ঝাঁক উড়াল দিচ্ছে। যেন এটাও তাদের একধরনের খেলা। আপন নীড়ে আপনাতে মগ্ন থেকে আকৃষ্ট করছে ইট-পাথরের নগরীর মানুষকে। আর প্রকৃতির এই প্রাণচাঞ্চল্য দেখতে মানুষও তাই ছুটছে ঢাকার কাছেই জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে।

প্রতি বছরের মতো এবারও অসংখ্য পরিযায়ী পাখি ভিড় করেছে সেখানে। কত বিচিত্র বর্ণ আর আকৃতি তাদের ! ধূসর, বাদামি, কালো, লালচে রঙের শত শত দেশীয় সরালির পাশাপাশি বেশ কিছু নজরকাড়া অতিথি পাখির আগমন ঘটেছে গত দু’সপ্তাহে। প্রতিদিনই এদের সংখ্যা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে পাখিপ্রেমী শৌখিন বা পেশাদার আলোকচিত্রী আর দেশি-বিদেশি পর্যটকের ভিড়।

গত বছরের ২০ নভেম্বর নোবেলজয়ী সাহিত্যিক ভিএস নাইপল বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্রে এক ঘণ্টা একান্তে বসে পাখি দেখেন। মিডিয়া থেকে জাবির অতিথি পাখির কথা শুনে পাখি দেখার জন্য ব্যক্তিগত সফরে জাহাঙ্গীরনগরে যান তিনি। সাবেক মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান ডব্লিউ মজীনা তার দায়িত্বকালে প্রতি বছরই পাখি দেখতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে যেতেন। তিনি বলতেন, অতিথি পাখির স্বর্গ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছোট-বড় প্রায় ২২টি জলাশয়ের মধ্যে প্রশাসনিক ভবনের সামনের লেক, জাহানারা ইমাম ও প্রীতিলতা হল সংলগ্ন লেক এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বোটানিক্যাল গার্ডেনে ‘বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্রে’র দুটি জলাশয়ে অতিথি পাখির বিচরণ চোখে পড়ার মতো।

বিশ্ববিদ্যালয়ের পাখি গবেষকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রতিবছর শীত মৌসুমে হাজার হাজার অতিথি পাখি দেশের হাওর এলাকাগুলোর পাশাপাশি যেখানে নিরাপদ আশ্রয়ের পরিবেশ ও খাবার পায়, সেখানে ভিড় জমায়। নভেম্বর-জানুয়ারিতে এরা আসে, আবার মার্চের শেষ দিকে ফিরে যায় আপন ঠিকানায়।

পাখি বিশেষজ্ঞ ও বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যার অধ্যাপক মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ জানান, এখন যেসব পাখি এসেছে, এগুলো দেশীয় হাঁস প্রজাতির সরালি, সাইবেরিয়া অঞ্চল থেকে পাখি আসেনি। পুরোপুরি শীত পড়লে ডিসেম্বরের শেষ নাগাদ সাইবেরিয়ার পরিযায়ী পাখি আসতে পারে।

অধ্যাপক মোহাম্মদ মোস্তফা ফিরোজ আরও বলেন,  ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে পাখি জরিপ করা হবে। আর আগামী ১৯ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে ১৬তম পাখিমেলা।

উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম বলেন, ‘অতিথি পাখির অনূকূল বিচরণক্ষেত্র তৈরির জন্য এ বছরও নানা প্রস্তুতি নেওয়া হয়।