বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ পাহাড়ে কৃষিক্ষেত্রে পুরুষের তুলনায় ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নারীরা অনেক বেশি পরিশ্রমী। ঘর সামলে পাহাড়ে জুমচাষ, ফলের বাগান সৃজনসহ অর্থনৈতিক উন্নয়নে তারা নিরলস হাড়ভাঙা পরিশ্রম করে যাচ্ছে। কথিত আছে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর পুরুষরা কম পরিশ্রমী। জীবিকা নির্বাহের জন্য এখনো পাহাড়ি নারীরাই তাদের সংসারের হাল ধরে টিকিয়ে রেখেছেন। একজন পাহাড়ি নারী দিনের শুরুতে স্বামী-সন্তান সামলিয়ে জুম চাষ কিংবা বাগানে কাজের জন্য চলে যান উঁচু উঁচু পাহাড়ের জুম ক্ষেতে। সারাদিন কাজ করে পাহাড়ি তরিতরকারী নিয়ে বিকেলে বাড়িতে পৌঁছে রান্নাবান্নার কাজ সারেন। এভাবেই প্রতিদিনকার জীবনকে মানিয়ে নিয়েছেন তারা।
রাঙামাটির বিলাইছড়ি উপজেলাসহ বিভিন্ন পাহাড়ে ঘুরে দেখা গেছে, ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর নারীরা পুরুষদের মতো জুম ক্ষেতে কাজ করছেন। জুমে বিভিন্ন সবজি ও ধান চারা রোপণ থেকে শুরু করে ঘরে তোলা পর্যন্ত পরিশ্রম করে থাকেন তারা। একেবারে পুরুষের মতোই জুমের ধান আহরণ করেন। যদি শিশু সন্তান থাকে; তাহলে শিশুটিকে কাপড় মুড়িয়ে বুকের সাথে বেঁধে নিয়ে জুমের পরিচর্যা করতে থাকেন। বিশেষ করে বিলাইছড়ি উপজেলার ফারুয়া ইউনিয়নে, মুঈদুছড়া, তাংখুতাং, শুক্কুরছড়ি, গবইছড়ি ও পানছড়িসহ বিভিন্ন পাহাড়ি এলাকায় প্রায় ছয় শতাধিক নারী পুরুষদের মতোই জুমে নেমে কাজ করছেন।
জানা গেছে, পাহাড়ের নারীরা শুধু মাত্র সন্তান প্রসবের কয়েক দিন বিশ্রামে থাকেন। বাকি সময় তারা পরিশ্রম করেন।
কয়েক জন জুমিয়া তরুণী ও তাদের অভিভাবকের সঙ্গে কথা বললে জানা যায়, কাজ করতে তাদের কোনো সমস্যা নেই। জুমে নেমে ধান কেটে আহরণ করতে দীর্ঘসময় পাহাড়ের গায়ে থাকতে কষ্ট হলেও তাতে তাদের আপত্তি নেই।
সংসারের চাহিদা মেটাতে জুমে মা-বাবা, স্বামী-সন্তানের কাজে সহযোগিতা করতে তারা কাজ করছেন। পুরুষেরা যাতে ব্যবসা-বাণিজ্য ও সন্তানেরা যাতে লেখাপড়া করার সুযোগ পায়, সে জন্যই নারীরা জুমে চাষাবাদের মতো কষ্টকর কাজ করছেন। বিশেষ করে জুম মৌসুমে কাজ করতে তাদের ভালো লাগে। নিজেদের বা বর্গা পাহাড়ে চাষাবাদ ও জুমের ধানসহ সবজি আহরণ করে তারা আনন্দ পান। পাশাপাশি তাদের বাড়তি আয় হয় এবং তা সংসারের উপকারে আসে বলে জানিয়েছেন ফারুয়া ইউনিয়নের জুমিয়া কৃষাণী মানুপ্রু মারমা, ওয়াংসাপ্রু মারমা ও সাংখিমা মারমা।- বাসস