বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ অনেকেই পোষা প্রাণীর মধ্যে ঈর্ষার আবির্ভাব দেখতে পান। হয়তো বাড়িতে জন্মেছে পরিবারের নতুন সদস্য, আর এতেই অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করেছে পোষা বিড়ালটি। তাহলে কি, মানুষের মতো প্রাণীজগতের অন্য সদস্যদের মধ্যেও ঈর্ষা অনুভূতি কাজ করে? প্রাণীদের মনোজগৎ সম্পর্কে জানা সহজ কাজ না।
বিজ্ঞানীরা প্রাণীদের মনোজগৎ নিয়ে গবেষণা করে চলেছেন দীর্ঘ সময় ধরে। এবারে তারা জানাচ্ছেন, ঈর্ষা একটি আদিম অনুভূতি। আর তা মানুষের পাশাপাশি অন্য প্রাণীরাও (বিশেষ করে কুকুর ও প্রাইমেট) ঈর্ষা অনুভব করে।
সবার আগে জানা প্রয়োজন ঈর্ষা নামক অনুভূতিটার বৈশিষ্ট্য ও বিশেষত্ব সম্পর্কে। অনেকেই ঈর্ষাকে ‘হিংসা’র সঙ্গে গুলিয়ে ফেলে। আসলে ঈর্ষা ও হিংসা খুবই আলাদা দু’টি অনুভূতি।
‘হিংসা’র সঙ্গে মূলত দু’টি পক্ষ জড়িত। একপক্ষের সাফল্য বা সম্পদের প্রতি হিংসা জন্মাতে পারে অপরপক্ষের। তবে ‘ঈর্ষা’র ক্ষেত্রে অবশ্যই তৃতীয়পক্ষের প্রভাব থাকতে হবে। এই তৃতীয়পক্ষের আগমন প্রথম দুই পক্ষের সম্পর্কের বিঘ্ন ঘটায়।
সাধারণত প্রেম-ভালোবাসার ক্ষেত্রে ‘ঈর্ষা’ শব্দটা খুব বেশি ব্যবহার করা হয়। কিন্তু গবেষকরা বলছেন, প্রেম-ভালোবাসা ছাড়াও পরিবারের সদস্য, বন্ধু, সহকর্মীদের মধ্যেও ঈর্ষা জন্ম নিতে পারে।
উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, একটা ছয় বছরের বাচ্চার মনে ঈর্ষা জন্মায়, যখন সে দেখে তার মা অন্য বাচ্চাদের প্রতি বেশি মমতা দেখাচ্ছে।
মানুষ বা কোনো প্রাণীর মধ্যে ঈর্ষা জন্মানোর প্রথম শর্ত, তাকে অন্য কারো সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষমতা থাকতে হবে। এরপর তাকে ওই সম্পর্কের সম্ভাব্য হুমকিগুলো চিহ্নিত করতে জানতে হবে।
ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার গবেষকরা কুকুরের মনোজগৎ নিয়ে কিছু পরীক্ষা চালান। এতে পোষা কুকুরের সামনে মালিক কুকুরের মতো দেখতে একটা পুতুলের সঙ্গে ভাব বিনিময়ের অভিনয় করেন।
এতে দেখা যায়, ৭৫ শতাংশ কুকুরই মালিকের সঙ্গে ওই পুতুলের সম্পর্ক মেনে নিতে পারছে না। এদের অনেকে আবার পুতুলটিকে আক্রমণ করে বসে।
গবেষকরা বলেন, মূলত দু’টি কারণে কিছু কুকুর ঈর্ষা দেখায়নি। এক, তারা বুঝে ফেলেছিল এটা কেবলই একটা পুতুল।
দুই, মালিকের সঙ্গে তারা ভালো সম্পর্ক তৈরি করে উঠতে পারেনি। ব্যাপারটি আরও ভালোভাবে বুঝতে সাহায্য করে টিটি বানর। দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চলে বসবাসকারী।