ঢাকা , শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

প্রজন্ম সংকটে দুর্লভ আবাসিক পাখি ‘উদয়ী-পাকরাধনেশ’

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ দৃষ্টিকাড়া গভীর সৌন্দর্য প্রকাণ্ড ঠোঁটেই। ঠোঁট দিয়েই এ পাখি পরিচিত। পাখিরাজ্যের আর কোনো পাখির সঙ্গেই এর ঠোঁট মেলে না। তবে এ পাখিটি লোকালয়ের নয়। তাই কখনও একে অন্য পাখির মতো সহজে দেখা যায় না। এরা গভীর বনে থাকে। ঘন বনের লালিত সৌন্দর্যের মধ্যে ওরা বিপন্ন হয়ে এখনও টিকে রয়েছে। বনভ্রমণের কোনো এক সৌভাগ্যক্ষণে হঠাৎ করে হয়তো এর সঙ্গে দেখা হয়ে যেতে পারে। তবে আজ ওরা ভালো নেই। প্রজননজনিত সমস্যায় আমাদের দেশ থেকে বিপন্ন হতে চলেছে উদয়ী-পাকরাধনেশ। এর ইংরেজি নাম Oriental Pied Hornbill এবং বৈজ্ঞানিক নাম Anthracoceros albirostris।

উড়ন্ত উদয়ী-পাকরাধনেশ। ছবি- আদনান আজাদ আসিফ  

এরা বাংলাদেশের দুর্লভ আবাসিক পাখি। তবে উপমহাদেশের প্রখ্যাত পাখি পর্যবেক্ষক ও গবেষক সালিম আলীর বইতে এ পাখিটিকে ‘কাও ধনেশ’ বলা হয়েছে। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) এ প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত ঘোষণা করেছে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনিরুল খান বলেন, আমাদের পাহাড়ি বনের বড় বড় গাছগুলো ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। উজাড় করা হচ্ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ। আর এই ক্রমাগত বৃক্ষনিধনের ফলে মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়ছে গাছপালাকে আশ্রয় করে টিকে থাকে অসংখ্য জীববৈচিত্র্য।

উদয়ী-পাকরাধনেশের অস্তিত্ব প্রসঙ্গে ড. মনিরুল বলেন, এই পাখিগুলো এমনিতেই বিপন্ন। তারপর বনের বড় বড় গাছ উজাড়ের কারণে ধীরে ধীরে এরা হারিয়ে যাচ্ছে।

নয়নাভিরাম হলুদ ঠোঁট দেখেই পাখিটিকে আলাদা করে চেনা যায়। এদের দেহ সাদা-কালো। পিঠ চকচকে কালো। তবে পেট ও লেজের শেষাংশ সাদা বলে জানান তিনি।

দীর্ঘ বাহারি ঠোঁট দিয়ে এ পাখিটিকে চেনা যায়। ছবি- আদনান আজাদ আসিফ

তিনি আরও বলেন, আমাদের বনগুলোতে বাস করা জনগোষ্ঠীরা পাখিটির বিশাল ঠোঁট এবং বড় বড় পালকের জন্য শিকার করে। এছাড়া গ্রামাঞ্চলে কিছু অসাধু কবিরাজ ধনেশের তেল দিয়ে অপচিকিৎসা করেন।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

প্রজন্ম সংকটে দুর্লভ আবাসিক পাখি ‘উদয়ী-পাকরাধনেশ’

আপডেট টাইম : ১০:৩৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৯ ফেব্রুয়ারী ২০১৮

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ দৃষ্টিকাড়া গভীর সৌন্দর্য প্রকাণ্ড ঠোঁটেই। ঠোঁট দিয়েই এ পাখি পরিচিত। পাখিরাজ্যের আর কোনো পাখির সঙ্গেই এর ঠোঁট মেলে না। তবে এ পাখিটি লোকালয়ের নয়। তাই কখনও একে অন্য পাখির মতো সহজে দেখা যায় না। এরা গভীর বনে থাকে। ঘন বনের লালিত সৌন্দর্যের মধ্যে ওরা বিপন্ন হয়ে এখনও টিকে রয়েছে। বনভ্রমণের কোনো এক সৌভাগ্যক্ষণে হঠাৎ করে হয়তো এর সঙ্গে দেখা হয়ে যেতে পারে। তবে আজ ওরা ভালো নেই। প্রজননজনিত সমস্যায় আমাদের দেশ থেকে বিপন্ন হতে চলেছে উদয়ী-পাকরাধনেশ। এর ইংরেজি নাম Oriental Pied Hornbill এবং বৈজ্ঞানিক নাম Anthracoceros albirostris।

উড়ন্ত উদয়ী-পাকরাধনেশ। ছবি- আদনান আজাদ আসিফ  

এরা বাংলাদেশের দুর্লভ আবাসিক পাখি। তবে উপমহাদেশের প্রখ্যাত পাখি পর্যবেক্ষক ও গবেষক সালিম আলীর বইতে এ পাখিটিকে ‘কাও ধনেশ’ বলা হয়েছে। আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘ (আইইউসিএন) এ প্রজাতিটিকে ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত ঘোষণা করেছে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ড. মনিরুল খান বলেন, আমাদের পাহাড়ি বনের বড় বড় গাছগুলো ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে। উজাড় করা হচ্ছে প্রাকৃতিক পরিবেশ। আর এই ক্রমাগত বৃক্ষনিধনের ফলে মারাত্মকভাবে হুমকির মুখে পড়ছে গাছপালাকে আশ্রয় করে টিকে থাকে অসংখ্য জীববৈচিত্র্য।

উদয়ী-পাকরাধনেশের অস্তিত্ব প্রসঙ্গে ড. মনিরুল বলেন, এই পাখিগুলো এমনিতেই বিপন্ন। তারপর বনের বড় বড় গাছ উজাড়ের কারণে ধীরে ধীরে এরা হারিয়ে যাচ্ছে।

নয়নাভিরাম হলুদ ঠোঁট দেখেই পাখিটিকে আলাদা করে চেনা যায়। এদের দেহ সাদা-কালো। পিঠ চকচকে কালো। তবে পেট ও লেজের শেষাংশ সাদা বলে জানান তিনি।

দীর্ঘ বাহারি ঠোঁট দিয়ে এ পাখিটিকে চেনা যায়। ছবি- আদনান আজাদ আসিফ

তিনি আরও বলেন, আমাদের বনগুলোতে বাস করা জনগোষ্ঠীরা পাখিটির বিশাল ঠোঁট এবং বড় বড় পালকের জন্য শিকার করে। এছাড়া গ্রামাঞ্চলে কিছু অসাধু কবিরাজ ধনেশের তেল দিয়ে অপচিকিৎসা করেন।