ঢাকা , শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

রাজশাহীতে কুকুর আশঙ্কাজনকভাবে নগরবাসী

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ রাজশাহী নগরীতে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে বেওয়ারিশ কুকুর। প্রতিটি মোড়ে ও পাড়া মহল্লায় দল বেঁধে ওত পেতে থাকে এসব কুকুর। সুযোগ পেলেই পথচারীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তারা। রাতে রাস্তায় চলতে গিয়ে কুকুরের সামনে পড়ে পথচারীদের নাস্তানাবুদ হতে হয়।

এরইমধ্যে কুকুরের প্রজনন ক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। একটি মা কুকুর তিন থেকে চারটি করে বাচ্চার জন্ম দিয়েছে। ফলে কুকুরের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ থেকে ৫ গুণ। ফলে পথচারীদের রাস্তায় চলা দায় হয়ে উঠেছে। আর বাইরের অপরিচিত কেউ এলে তো রক্ষাই নেই।

জানা গেছে, আগে সিটি করপোরেশন নিধনের মাধ্যমে বেওয়ারিশ কুকুর বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা হতো। কিন্তু এখন নিধনের মাধ্যমে কুকুর নিয়ন্ত্রণ নয়, ভ্যাকসিন ব্যবহার করে কুকুরের জন্মনিয়ন্ত্রণের নির্দেশ রয়েছে। ভ্যাকসিনের অভাব এবং কুকুর নিধন বন্ধ থাকায় লাগামহীনভাবে বাড়ছে বেওয়ারিশ কুকুর। এটা নগরবাসীর জন্য শাঁখের করাত হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর সিটি করপোরেশনের কূল রাখি না শ্যাম রাখি অবস্থা।

শীতে কুকুরের দাপট অনেকটা কম থাকে। শীতের শেষে কুকুরের দাপট এখন অনেকগুণ বেড়ে গেছে। আর কুকুরের বাচ্চাগুলো এরই মধ্যে বড় হয়ে উঠছে। অচিরে তারাও ভয়াবহ হয়ে উঠবে। এটা পথচারীদের জন্য মরণফাঁদে পরিণত হচ্ছে। এখনই কোনো বিকল্প ব্যবস্থা না নেয়া হলে সাধারণ মানুষের জন্য রাস্তায় চলাচল কঠিন হয়ে উঠবে।

সূত্র মতে, এ সময়ের কুকুর জলাতঙ্ক বহন করে। কুকুরের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় জলাতঙ্কের ঝুঁকিও বাড়ছে। ওইসব কুকুর নিয়ন্ত্রণ করা না হলে যেকোনো সময় জলাতঙ্ক রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও বাড়ছে। আর এই জলাতঙ্কের ঝুঁকি নিয়েই চলছে নগরবাসী। অথচ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

রাতে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে গিয়ে দেখা গেছে, রাস্তার দুই ধারে দাঁড়িয়ে থাকে। একটি কুকুর তেড়ে এলে তার সঙ্গে আসে এক পাল কুকুর। এতে পথচারীর ত্রাহি অবস্থা। এ অবস্থা চলছে নগরজুড়ে। একনকি রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বারান্দায় দল বেঁধে বেওয়ারিশ কুকুর ঘুরতেও দেখা গেছে। পথচারীরা জানান, বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে নগরীতে রাস্তায় চলা দায়। পথে দলবদ্ধ আগ্রাসি কুকুর নিয়ে দুশ্চিন্তায় পথচারী। তটস্থ হয়েই চলতে হচ্ছে নগরবাসীকে। এখনই এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেয়া হলে প্রতি নিয়তই কুকুরের তাড়া খেতে হবে পথচারীদের। তবে এখনো দিনে পথ চলা কিছুটা স্বাভাবিক থাকলেও রাতের রাস্তা চলে যায় কুকুরের দখলে। অর্থাৎ রাতে রাস্তা থাকে বেওয়ারিশ কুকুরের দখলে। অটোরিকশাতে চলাচল করলেও কুকুর পারে না যে অটোরিকশার ওপরই উঠে পড়ে। তাদের মতে, এ অবস্থায় নগরবাসীর জন্য আতঙ্কের বিষয় হচ্ছে জলাতঙ্ক। তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি নগরবাসীর।

বেওয়ারিশ কুকুর আশঙ্কাজনকভাবে বাড়লেও তা নিয়ন্ত্রণে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) উদ্যোগ প্রসঙ্গে এ দায়িত্বে নিয়োজিত রাসিকের পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ মামুন (ডলার) বলেন, এ ব্যাপারে রাসিকের কিছু করার নেই। জন্মনিয়ন্ত্রণ ভ্যাকসিন না থাকায় তারা কিছু করতে পারছেন না। এ দায়িত্ব হচ্ছে রাজশাহী প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের। তাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য পরামর্শ দেন তিনি।

এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন বলেন, মানবিক কারণে কুকুর নিধন নিষিদ্ধ। তবে জীবাণুনাশক ও জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য ভ্যাকসিন রয়েছে। ২০১০ সালে কুকুর যাতে জলাতঙ্ক জীবাণু যেন বহন করতে না পারে এর জন্য ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছিল। তখন নগরীতে কুকুর অনেকটা নিয়ন্ত্রণে ছিল। এরপর আর রাসিকের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ না নেয়ায় এখন কুকুর ভয়ানক হয়ে উঠেছে। এই উদ্যোগ সিটি করপোরেশন থেকে নেয়া হলে ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা হবে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

রাজশাহীতে কুকুর আশঙ্কাজনকভাবে নগরবাসী

আপডেট টাইম : ০৯:৩৬ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ৯ মার্চ ২০১৮

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ রাজশাহী নগরীতে আশঙ্কাজনকভাবে বেড়েছে বেওয়ারিশ কুকুর। প্রতিটি মোড়ে ও পাড়া মহল্লায় দল বেঁধে ওত পেতে থাকে এসব কুকুর। সুযোগ পেলেই পথচারীদের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে তারা। রাতে রাস্তায় চলতে গিয়ে কুকুরের সামনে পড়ে পথচারীদের নাস্তানাবুদ হতে হয়।

এরইমধ্যে কুকুরের প্রজনন ক্রিয়া সম্পন্ন হয়েছে। একটি মা কুকুর তিন থেকে চারটি করে বাচ্চার জন্ম দিয়েছে। ফলে কুকুরের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৪ থেকে ৫ গুণ। ফলে পথচারীদের রাস্তায় চলা দায় হয়ে উঠেছে। আর বাইরের অপরিচিত কেউ এলে তো রক্ষাই নেই।

জানা গেছে, আগে সিটি করপোরেশন নিধনের মাধ্যমে বেওয়ারিশ কুকুর বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণ করা হতো। কিন্তু এখন নিধনের মাধ্যমে কুকুর নিয়ন্ত্রণ নয়, ভ্যাকসিন ব্যবহার করে কুকুরের জন্মনিয়ন্ত্রণের নির্দেশ রয়েছে। ভ্যাকসিনের অভাব এবং কুকুর নিধন বন্ধ থাকায় লাগামহীনভাবে বাড়ছে বেওয়ারিশ কুকুর। এটা নগরবাসীর জন্য শাঁখের করাত হয়ে দাঁড়িয়েছে। আর সিটি করপোরেশনের কূল রাখি না শ্যাম রাখি অবস্থা।

শীতে কুকুরের দাপট অনেকটা কম থাকে। শীতের শেষে কুকুরের দাপট এখন অনেকগুণ বেড়ে গেছে। আর কুকুরের বাচ্চাগুলো এরই মধ্যে বড় হয়ে উঠছে। অচিরে তারাও ভয়াবহ হয়ে উঠবে। এটা পথচারীদের জন্য মরণফাঁদে পরিণত হচ্ছে। এখনই কোনো বিকল্প ব্যবস্থা না নেয়া হলে সাধারণ মানুষের জন্য রাস্তায় চলাচল কঠিন হয়ে উঠবে।

সূত্র মতে, এ সময়ের কুকুর জলাতঙ্ক বহন করে। কুকুরের সংখ্যা বেড়ে যাওয়ায় জলাতঙ্কের ঝুঁকিও বাড়ছে। ওইসব কুকুর নিয়ন্ত্রণ করা না হলে যেকোনো সময় জলাতঙ্ক রোগ ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কাও বাড়ছে। আর এই জলাতঙ্কের ঝুঁকি নিয়েই চলছে নগরবাসী। অথচ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ।

রাতে নগরীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে গিয়ে দেখা গেছে, রাস্তার দুই ধারে দাঁড়িয়ে থাকে। একটি কুকুর তেড়ে এলে তার সঙ্গে আসে এক পাল কুকুর। এতে পথচারীর ত্রাহি অবস্থা। এ অবস্থা চলছে নগরজুড়ে। একনকি রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের বারান্দায় দল বেঁধে বেওয়ারিশ কুকুর ঘুরতেও দেখা গেছে। পথচারীরা জানান, বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা বৃদ্ধির কারণে নগরীতে রাস্তায় চলা দায়। পথে দলবদ্ধ আগ্রাসি কুকুর নিয়ে দুশ্চিন্তায় পথচারী। তটস্থ হয়েই চলতে হচ্ছে নগরবাসীকে। এখনই এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নেয়া হলে প্রতি নিয়তই কুকুরের তাড়া খেতে হবে পথচারীদের। তবে এখনো দিনে পথ চলা কিছুটা স্বাভাবিক থাকলেও রাতের রাস্তা চলে যায় কুকুরের দখলে। অর্থাৎ রাতে রাস্তা থাকে বেওয়ারিশ কুকুরের দখলে। অটোরিকশাতে চলাচল করলেও কুকুর পারে না যে অটোরিকশার ওপরই উঠে পড়ে। তাদের মতে, এ অবস্থায় নগরবাসীর জন্য আতঙ্কের বিষয় হচ্ছে জলাতঙ্ক। তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি নগরবাসীর।

বেওয়ারিশ কুকুর আশঙ্কাজনকভাবে বাড়লেও তা নিয়ন্ত্রণে রাজশাহী সিটি করপোরেশনের (রাসিক) উদ্যোগ প্রসঙ্গে এ দায়িত্বে নিয়োজিত রাসিকের পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা শেখ মামুন (ডলার) বলেন, এ ব্যাপারে রাসিকের কিছু করার নেই। জন্মনিয়ন্ত্রণ ভ্যাকসিন না থাকায় তারা কিছু করতে পারছেন না। এ দায়িত্ব হচ্ছে রাজশাহী প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের। তাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য পরামর্শ দেন তিনি।

এ বিষয়ে রাজশাহী জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা নিজাম উদ্দিন বলেন, মানবিক কারণে কুকুর নিধন নিষিদ্ধ। তবে জীবাণুনাশক ও জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য ভ্যাকসিন রয়েছে। ২০১০ সালে কুকুর যাতে জলাতঙ্ক জীবাণু যেন বহন করতে না পারে এর জন্য ভ্যাকসিন দেয়া হয়েছিল। তখন নগরীতে কুকুর অনেকটা নিয়ন্ত্রণে ছিল। এরপর আর রাসিকের পক্ষ থেকে কোনো উদ্যোগ না নেয়ায় এখন কুকুর ভয়ানক হয়ে উঠেছে। এই উদ্যোগ সিটি করপোরেশন থেকে নেয়া হলে ভ্যাকসিনের ব্যবস্থা হবে।