বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ শীতের পরিযায়ী। চিরহরিৎ বনের বাসিন্দা হলেও ঘন জঙ্গল কিংবা দীর্ঘ বন এড়িয়ে চলে। তবে সুঁচালো পত্রপল্লভের বন কিংবা পাইনবনে বিচরণ রয়েছে। খাদ্যের সন্ধানে একাকী কিংবা জোড়ায় ঘুরে বেড়ায়। চেহারাটাকে পরিপাটি রাখতে নিয়ম করে গোসল করে। কণ্ঠস্বর সুমধুর। ‘ট্রিলস…ট্রিলস…’সুরে গান গায়। পুরুষ পাখির নজরকাড়া রূপ। শরীরটাকে ফুলিয়ে বসলে দোয়েলের মতো লাগে। তাই বলে কিন্তু দোয়েল গোত্রের কেউ নয় ওরা। স্ত্রী পাখি অনেকটাই নিষ্প্রভ। ভিন্ন প্রজাতির মনে হতে পারে। প্রজাতির বৈশ্বিক বিস্তৃতি বাংলাদেশ ছাড়া ভারত (আসাম, মেঘালয়, মনিপুর, নাগাল্যান্ড ও অরুণাচল), নেপাল (হিমালয়ের পাদদেশ), ভুটান, পাকিস্তান, জুম্মু, কাশ্মীর, মালদ্বীপ, চীন (ইউনান) উত্তর-পশ্চিম থাইল্যান্ড ও সুমাত্রা পর্যন্ত। বিশ্বে এদের অবস্থান মোটামুটি সন্তোষজনক।
প্রজাতির বাংলা নাম: ‘সাদাভ্রু নীল চটক’, ইংরেজি নাম: ‘আল্ট্রামেরিন ফ্লাইক্যাচার’ (Ultramarine Flycatcher), বৈজ্ঞানিক নাম: Ficedula superciliaris। এরা ‘ঘননীল চুটকি’ নামেও পরিচিত।
দৈর্ঘ্য কমবেশি ১১-১২ সেন্টিমিটার। স্ত্রী-পুরুষ পাখির রং ভিন্ন। পুরুষ পাখির মাথা, ঘাড় ও পিঠ গাঢ় নীল। চোখের ওপর সাদা টান, যা ঘাড়ে গিয়ে শেষ হয়েছে। লেজ নীলাভ হলেও মধ্যপালক কালো, তš§ধ্যে দু-একটি সাদা ছোট পালক। ডানা নীলচে কালো। গলা, বুক, পেট ও লেজতল ধবধবে সাদা। বুকের দু’পাশে রয়েছে চওড়া গাঢ় নীল টান, যা ঘাড়ের পাশ বেয়ে নিচে নেমেছে। ঠোঁট নীলচে কালো। নীচের ঠোঁটের গোড়ায় অল্প ক’গাছি পশম দেখা যায়। অপরদিকে স্ত্রী পাখির মাথা, ঘাড়, পিঠ ও লেজ নীলচে ধূসর। ডানার পালক ধূসর কালো। গলা, বুক ও পেট ধূসর সাদা। ঠোঁটের গোড়ায় পশম নেই। উভয়ের চোখের বলয় নীলাভ, মণি কালো। পা ও পায়ের আঙ্গুল নীলাভ কালো।
প্রধান খাবার: উড়ন্ত পোকামাকড়। বিশেষ করে মাছি, ছোট ঝিঁঝিঁপোকা, পঙ্গপাল ইত্যাদির প্রতি আসক্তি বেশি।
প্রজনন মৌসুম এপ্রিল থেকে জুলাই। বাসা বাঁধে ভূমি থেকে গাছের ৭ মিটারের মধ্যে চিকন ডালে। কাপ আকৃতির বাসা। উপকরণ হিসেবে ব্যবহার করে গাছের তন্তু, মস, ঘাস, শৈবাল, পশুর চুল ইত্যাদি। ডিম পাড়ে ৩-৫টি। ফুটতে সময় ১০-১২ দিন।
সূত্রঃ মানবকণ্ঠ