ঢাকা , রবিবার, ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অতিথি পাখি দেখতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ ক্যাম্পাস এখন অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর। শীতের শুরুতেই প্রতিবছরের মতো এবারও শীতের অতিথি পাখিরা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন লেকে ভিড় জমিয়েছে। উপযুক্ত পরিবেশ আর নিরাপদ আশ্রয়ে ক্যাম্পাসের পদ্মে শোভিত লেকগুলোতে এসব অতিথি পাখি মেতে উঠেছে জলকেলিতে। আপনি চাইলে আসছে ছুটির দিনগুলোতে ঘুরে আসতে পারেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস থেকে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন জলাশয় আছে। এর মধ্যে পাখির আনাগোনা বেশি প্রশাসনিক ভবনের সামনে ও পেছনের দুটি জলাশয়, জাহানারা ইমাম হল, প্রীতিলতা হল এবং আলবেরুনী হলসংলগ্ন জলাশয়ে। সব জলাশয়ে আছে লাল শাপলা। দিনের প্রথম ভাগে শাপলারা ফুটন্ত থাকে। লাল শাপলার এ গালিচার মধ্যে অতিথি পাখির আনাগোনাও ভালো লাগবে। বর্তমানে ক্যাম্পাসের জলাশয়ে হাঁসপাখি ‘পাতি সরালি’র প্রাধান্যই বেশি। এ ছাড়া মাঝেমধ্যে দেখা মিলবে ছোট পানকৌড়ি, ধলাবুক ডাহুক কিংবা পাতি পানমুরগির। তবে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জলাশয়গুলোতে পাখির সংখ্যা ও প্রজাতি সাধারণত বেড়ে থাকে।

প্রতিবছর উত্তরের শীতপ্রধান দেশ সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া, নেপাল, সিনচিয়াং ও ভারত থেকে হাজার হাজার অতিথি পাখি দক্ষিণ এশিয়ার নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল বাংলাদেশে আসে। বাংলাদেশে আসা পাখিদের ৮-৯ শতাংশ এই ক্যাম্পাসে আসে। মূলত অক্টোবরের শেষ ও নভেম্বরের প্রথম দিকেই এরা এ দেশে আসতে শুরু করে। মার্চের শেষ দিকে তারা আপন ঠিকানায় ফিরে যায়। বাংলাদেশের মানুষ শখ করে যাযাবর এসব পাখিকে ডাকে গেস্ট বার্ড/মাইগ্রেটরি বার্ড বা অতিথি পাখি নামে। অসম্ভব বন্ধুসুলভ এ পাখিগুলোর অনেকটাই আমাদের দেশি হাঁস প্রজাতির।

প্রতিবছর বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকগুলোতে প্রায় ৫০ প্রজাতির অসংখ্য পাখির আগমন ঘটেছে। এদের বেশিরভাগই হাঁসজাতীয় ও পানিতে বসবাস করে। এর মধ্যে সরালি, পচার্ড, ফ্লাইফেচার, গার্গেনি, ছোট জিরিয়া, মুরগ্যাধি, কোম্বডাক ও পাতারি অন্যতম। এ ছাড়া মানিকজোড়, কলাই, ছোট নগ, জলপিপি, নাকতা, খঞ্জনা, চিতাটুপি, লাল গুড়গুটি প্রভৃতি পাখি এ দেশে অতিথি হয়ে আসে প্রতিবছর। অবিরাম তুষারপাতে এবং তীব্র শীতের কারণে ওই সব অঞ্চলে বসবাসরত পাখিরা হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে চলে আসে।

কখন যাবেন- মূলত অক্টোবরের শেষ ও নভেম্বরের প্রথম দিকেই অতিথি পাখিরা বাংলাদেশে আসে। আবার মার্চের শেষ দিকে ফিরে যায় আপন ঠিকানায়। ক্যাম্পাসে পাখি দেখার সবচেয়ে ভালো সময় শীতের সকাল এবং বিকেল। তাই খুব সকালে গিয়ে সারা দিন কাটাতে পারেন ক্যাম্পাসে। দুপুরে খেয়ে নিতে পারেন ক্যাম্পাসের বটতলাখ্যাত বিভিন্ন খবার দোকানে। খুব কম দামে হরেক পদের ভর্তা দিয়ে দুপুরের খাবার সারতে পারবেন।

কীভাবে যাবেন- ঢাকার গুলিস্তান, ফার্মগেট, কল্যাণপুর কিংবা গাবতলী থেকে নবীনগর, মানিকগঞ্জগামী যেকোনো বাসে চড়ে সহজেই নেমে যেতে পারবেন ক্যাম্পাসের সামনে। বাসে ভাড়া পড়বে ৩৫ থেকে ৬০ টাকা। ক্যাম্পাস ঘুরে দেখার জন্য সহজ বাহন তিন চাকার ভ্যানগাড়ি অথবা রিকশা।

সূত্রঃ এনটিভি

 

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

অতিথি পাখি দেখতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে

আপডেট টাইম : ১১:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২০ জানুয়ারী ২০১৯

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সবুজ ক্যাম্পাস এখন অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখর। শীতের শুরুতেই প্রতিবছরের মতো এবারও শীতের অতিথি পাখিরা ক্যাম্পাসের বিভিন্ন লেকে ভিড় জমিয়েছে। উপযুক্ত পরিবেশ আর নিরাপদ আশ্রয়ে ক্যাম্পাসের পদ্মে শোভিত লেকগুলোতে এসব অতিথি পাখি মেতে উঠেছে জলকেলিতে। আপনি চাইলে আসছে ছুটির দিনগুলোতে ঘুরে আসতে পারেন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস থেকে।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন জলাশয় আছে। এর মধ্যে পাখির আনাগোনা বেশি প্রশাসনিক ভবনের সামনে ও পেছনের দুটি জলাশয়, জাহানারা ইমাম হল, প্রীতিলতা হল এবং আলবেরুনী হলসংলগ্ন জলাশয়ে। সব জলাশয়ে আছে লাল শাপলা। দিনের প্রথম ভাগে শাপলারা ফুটন্ত থাকে। লাল শাপলার এ গালিচার মধ্যে অতিথি পাখির আনাগোনাও ভালো লাগবে। বর্তমানে ক্যাম্পাসের জলাশয়ে হাঁসপাখি ‘পাতি সরালি’র প্রাধান্যই বেশি। এ ছাড়া মাঝেমধ্যে দেখা মিলবে ছোট পানকৌড়ি, ধলাবুক ডাহুক কিংবা পাতি পানমুরগির। তবে শীত বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে জলাশয়গুলোতে পাখির সংখ্যা ও প্রজাতি সাধারণত বেড়ে থাকে।

প্রতিবছর উত্তরের শীতপ্রধান দেশ সাইবেরিয়া, মঙ্গোলিয়া, নেপাল, সিনচিয়াং ও ভারত থেকে হাজার হাজার অতিথি পাখি দক্ষিণ এশিয়ার নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চল বাংলাদেশে আসে। বাংলাদেশে আসা পাখিদের ৮-৯ শতাংশ এই ক্যাম্পাসে আসে। মূলত অক্টোবরের শেষ ও নভেম্বরের প্রথম দিকেই এরা এ দেশে আসতে শুরু করে। মার্চের শেষ দিকে তারা আপন ঠিকানায় ফিরে যায়। বাংলাদেশের মানুষ শখ করে যাযাবর এসব পাখিকে ডাকে গেস্ট বার্ড/মাইগ্রেটরি বার্ড বা অতিথি পাখি নামে। অসম্ভব বন্ধুসুলভ এ পাখিগুলোর অনেকটাই আমাদের দেশি হাঁস প্রজাতির।

প্রতিবছর বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকগুলোতে প্রায় ৫০ প্রজাতির অসংখ্য পাখির আগমন ঘটেছে। এদের বেশিরভাগই হাঁসজাতীয় ও পানিতে বসবাস করে। এর মধ্যে সরালি, পচার্ড, ফ্লাইফেচার, গার্গেনি, ছোট জিরিয়া, মুরগ্যাধি, কোম্বডাক ও পাতারি অন্যতম। এ ছাড়া মানিকজোড়, কলাই, ছোট নগ, জলপিপি, নাকতা, খঞ্জনা, চিতাটুপি, লাল গুড়গুটি প্রভৃতি পাখি এ দেশে অতিথি হয়ে আসে প্রতিবছর। অবিরাম তুষারপাতে এবং তীব্র শীতের কারণে ওই সব অঞ্চলে বসবাসরত পাখিরা হাজার হাজার মাইল পথ পাড়ি দিয়ে নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে চলে আসে।

কখন যাবেন- মূলত অক্টোবরের শেষ ও নভেম্বরের প্রথম দিকেই অতিথি পাখিরা বাংলাদেশে আসে। আবার মার্চের শেষ দিকে ফিরে যায় আপন ঠিকানায়। ক্যাম্পাসে পাখি দেখার সবচেয়ে ভালো সময় শীতের সকাল এবং বিকেল। তাই খুব সকালে গিয়ে সারা দিন কাটাতে পারেন ক্যাম্পাসে। দুপুরে খেয়ে নিতে পারেন ক্যাম্পাসের বটতলাখ্যাত বিভিন্ন খবার দোকানে। খুব কম দামে হরেক পদের ভর্তা দিয়ে দুপুরের খাবার সারতে পারবেন।

কীভাবে যাবেন- ঢাকার গুলিস্তান, ফার্মগেট, কল্যাণপুর কিংবা গাবতলী থেকে নবীনগর, মানিকগঞ্জগামী যেকোনো বাসে চড়ে সহজেই নেমে যেতে পারবেন ক্যাম্পাসের সামনে। বাসে ভাড়া পড়বে ৩৫ থেকে ৬০ টাকা। ক্যাম্পাস ঘুরে দেখার জন্য সহজ বাহন তিন চাকার ভ্যানগাড়ি অথবা রিকশা।

সূত্রঃ এনটিভি