বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ ভারতের মেঘালয়ের পাদদেশ সিলেটের জৈন্তাপুর উপজেলার ডিবির হাওরে লাল শাপলা বিক্রি করে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি অর্জন করেছে স্থানীয় একাধিক পরিবার। ডিবির হাওর লাল শাপলার বিল নামে স্থানীয়ভাবে পরিচিতি। এখানের ৪টি বিলে ডিবি বিল, ইয়াম বিল, হরফকাট ও কেন্দ্রীবিলের প্রায় ৯০০ একর ভূমিজুড়ে প্রাকৃতিকভাবে লাল শাপলার জন্মে। আর এই বিলের লাশ শাপলার সৌন্দর্য উপভোগ করতে ভিড় জমান পর্যটকরা। এই সুযোগে পর্যটকদের কাছে শাপলা বিক্রি করে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন স্থানীয় পরিবারগুলো।
শীতের আগমণের সাথে সাথে প্রকৃতি যেন নিজ হাতে সাজিয়ে তুলে লাল শাপলার বিলগুলোকে। যেন ফুলে ফুলে সাজানো পানির উপর ভাসমান নকশার লাল গালিচা। এর অপরূপ সৌন্দর্য্য উপভোগ করতে দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলসহ জেলা ও উপজেলা থেকে দল বেধে ছুটে আসা পর্যটকের ঢল নামে লাল শাপলার বিলে। বিলের লাল শাপলার ফুটন্ত ফুলের ফাঁকে ফাঁকে থাকে নানা প্রজাতির অতিথি পাখির কিচিরমিচির সুর।
লাল শাপলার বিলে ভ্রমণে আসা পর্যটকরা জানান, লাল শাপলার বিলের পরিবেশ অত্যন্ত মনোমুগ্ধকর। স্বাধীন জৈন্তিয়া রাজ্যের রাজা বিজয় সিংহের সমাধিস্থল, বিলের চার পাশে খাসিয়া জৈন্তিয়া পাহাড়ের অপরূপ সৌন্দর্য্য বিলটিকে আর্কষণীয় করে তুলেছে।
প্রসঙ্গত, পৌরাণিক ইতিহাস থেকে জানা যায়-ব্রিটিশ শাসিত ভারত উপমহাদেশের শেষ স্বাধীন রাজ্য ছিল জৈন্তাপুর। শ্রীহট্ট তথা ভারতবর্ষের অধিকাংশ এলাকা যখন মোগল সাম্রাজ্যভূক্ত ছিল, তখনও জৈন্তিয়া তার পৃথক ঐতিহ্য রক্ষা করে আসছিল ১৭৯০ খ্রিষ্টাব্দে রাজা বিজয় সিংহের শাসনকালে জৈন্তিয়ায় খনিজ সম্পদে ভরপুর ছিল। বর্তমানেও এই উপজেলা জুড়ে নানা প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রয়েছে। রাজা বিজয় সিংহ ১৭৭৮ সালে সারিঘাট ঢুপি গ্রামে রামেশ্বর শিব মন্দির স্থাপন করেন। ১৮৩৫ সালের ১৬ মার্চ হ্যারি নামক ইংরেজ রাজেন্দ্র সিংহকে কৌশলে বন্দী করে মূল্যবান সম্পদ লুঠ করে নেয়। আর ডিবির হাওর রাজা বিজয় সিংহের স্মৃতি বিজড়িত সমাধিস্থলেই লাল শাপলার বিলগুলো অবস্থিত। বিলের পাড়েই রয়েছে বিজয় সিংহের সমাধি।