বিএনপি সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ দমনের জন্য জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে চাইছে। এই ইস্যুতে সরকারকে তাদের ডাকে সাড়া দেওয়ারও আহ্বান জানিয়েছে। বিএনপি এই ব্যাপারে ঐক্য গড়ে তুলে জাতীয়ভাবে জঙ্গিবাদ মোকাবিলা করার প্রয়োজন মনে করলে সরকার তা মনে করছে না। সরকার এই ইস্যুতে বিএনপির সঙ্গে কোনো ধরনের সমঝোতা করতে চাইছে না। বরং সরকার বিএনপি এবং জামায়াত বাদে অন্য সব রাজনৈতিক দল, সামাজিক সংগঠনসহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষকে নিয়ে ও বিভিন্ন স্তুরের প্রতিনিধিদের নিয়ে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মোকাবিলা করতে চাইছে। এই কারণে সরকার বিএনপির এই ঐক্যের ডাকে কোনো ধরনের সাড়া না দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। খবর আমাদের সময়.কম’র।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেন, বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যার তারেক রহমান লন্ডনে বসে সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করার নানা কৌশল করছেন। ষড়যন্ত্র করছেন দেশি ও বিরোধী সরকারবিরোধী মহলের সঙ্গে। এই জন্য দেশে সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদের কর্মকা-ে তারা ম“ দিতে পিছ পা হচ্ছেন না। তারেক রহমান দেশের পরিস্থিতি খারাপ করে সরকারের পতন ঘটাতে চান। তিনি মোসাদ, আইএসসহ আরও অনেকের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন ও বৈঠক করছেন, চিঠি লিখছেন বলেও আমাদের কাছে খবর আসছে। আমরা এসব খবর পাচ্ছি। তিনি লন্ডনে বসে কাজ করছেন। আর খালেদা জিয়া দেশে বসেই সরকারবিরোধী কাজে, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদে মদদ দিচ্ছেন। এইভাবেতো চলতে পারে না। তারা এই সব কাজ করছে জানার পরও তাদের সঙ্গে কেমন করে ঐক্য হবে।
এই তথ্যতো সত্যি নাও হতে পারে- এই প্রশ্নের জবাবে স¦রাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, তাদের ব্যাপারে আমাদের কাছে অনেক তথ্য আছে। গুলশানের ঘটনায়ও তারা ইন্ধন দিয়েছেন। ম“ দিয়েছেন বলেও খবর পেয়েছি।
আইনমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেন, তারাতো দেশের স্বার্থ চিন্তা করছেন না। নিজেদের ক্ষমতায় যাওয়ার স্বপ্নে বিভোর। ক্ষমতায় যাওয়া ছাড়াতো তারা আর কিছু ভাবতে পারছে না। সরকার হটানোর জন্য তারা কতইনা ষড়যন্ত্র করছে। সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদতো তারা সব সময় ম“ দিয়ে আসছে। এই অবস্থায় তাদের সঙ্গে সমঝোতার কোনো সুযোগ নেই। তারা যে সব কাজ করেছে সেই সব কাজের জন্য, সন্ত্রাসবাদ, জ্বালাও পোড়াও করার জন্য রাষ্ট্রীয় সম্পদ ক্ষতি করা, মানুষের জানমালের ক্ষতি করার জন্য তাদের বিচার হবে। নির্বাচন যথাসময়েই হবে। তারা যতই কৌশল করুক না কেন। সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদ আমরা সফলভাবেই মোকাবিলা করতে পারছি। আগামী দিনেও পারবো।
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বিএনপির সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ মোকাবিলায় বিএনপির জাতীয় ঐক্যের আহ্বান নিয়ে প্রশ্ন তুলে বলেছেন, বিএনপির জাতীয় ঐক্যের ডাক সন্ত্রাসী বাঁচানোর জন্য কৌশল। আন্দোলনের টানা ৯০ দিন মানুষ পুড়িয়ে মেরেছে। এখন তা ঢাকার জন্যই ঐক্য গড়ার কৌশল নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ ইস্যুতে দেশবাসী রুখে দাঁড়িয়েছে। এই সময় বিএনপির জাতীয় ঐক্যের ডাক দিয়েছে। এর কোনো প্রয়োজন নেই। তাদের উচিত সরকারে সহযোগিতা করা।
বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট আহমেদ আজম খান বলেন, সরকারের কাছে কোনো প্রমাণ নেই বিএনপি সন্ত্রাসবাদ ও জঙ্গিবাদের মদদ দিচ্ছে। কিন্তু সরকার সব সময় বলার জন্য বিএনপি ও এর নেতাদের বিরুদ্ধে ঢালাউভাবে অভিযোহগ করছে। এতে করে তারা জনগণকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছে। ইমেজ নষ্ট করার চেষ্টা করছে বিএনপির। কিন্তু পারছে না। এরপরও চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। বিএনপিকে দূরে রাখার এটাও সরকারের কৌশল। এখন বিএনপির ঐক্যের ডাকে সাড়া দিলে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূল হবে এটা সরকার মেনে নিতে পারছে না। তাই ঐক্য করবে না। এই সব সমস্যা সরকার টিকিয়ে রাখতে চায়। একটার পর একটা ঘটনা ঘটিয়ে তারা মানুষের দৃষ্টি বিভিন্ন দিকে প্রবাহিত করছে। এতে করে দেশের ক্ষতি হচ্ছে। সরকার গুলশান ঘটনার পর সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিতে ব্যর্থ হয়েছে। ২৮ জনকে সরকারের কারণে প্রাণ দিতে হয়েছে। এই ব্যর্থতার দায় কোনোভাবেই এড়াতে পারে না। জনগণ সব বুঝে। কারা এইসব করছে। প্রমাণ ছাড়া বিএনপির উপর দায় চাপানোর প্রবণতা সরকারের পরিহার করতে হবে।