বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ পুলিশের পরিদর্শকরা এখনই পাচ্ছেন না ঝুঁকিভাতা। তাদের ঝুঁকিভাতা প্রদানের জন্য অর্থ মন্ত্রণালয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছিল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ। তবে এ আবেদন নাকচ করে দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে এ সংক্রান্ত একটি চিঠি ৪ সেপ্টেম্বর স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগের সচিবের কাছে পাঠানো হয়।
অর্থ বিভাগের উপ-সচিব লায়লা মুনতাজেরী দীনা স্বাক্ষরিত ওই চিঠিতে বলা হয়, পুলিশ বাহিনীর ‘পুলিশ ইন্সপেক্টর’ পদমর্যাদার কর্মচারীদের ঝুঁকিভাতা প্রদানের প্রস্তাবে নির্দেশক্রমে অর্থ বিভাগের অসম্মতি জ্ঞাপন করা হল।
জানা গেছে, দেশের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে জীবন বাজি রেখে কাজ করলেও ঝুঁকিভাতা পান না পুলিশের পরিদর্শকরা। কাজের ধরন, মাত্রা, পরিধি ও ঝুঁকির বিষয় বিবেচনা করে তাদেরও ঝুঁকিভাতা দিতে গত মে মাসে অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। এ খাতে বছরে সরকারের খরচ হবে ৪৭ কোটি ৯৭ লাখ ৮২ হাজার ৮০০ টাকা। বর্তমানে পুলিশের ইন্সপেক্টরের মঞ্জুরিকৃত ৬ হাজার ৮৬৭টি পদের মধ্যে কর্মরত রয়েছেন ৫ হাজার ৮৪৮ জন। এর মধ্যে ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) ৪ হাজার ৮৬৭টি পদের মধ্যে কর্মরত রয়েছেন ৪ হাজার ২৮২ জন।
আর ইনসপেক্টরের (সশস্ত্র) ৯০৮টি পদের বিপরীতে রয়েছেন ৬০১ জন। ইন্সপেক্টর (যানবাহন)-এর মঞ্জুরিকৃত ৯৭৩টি পদের মধ্যে কর্মরত রয়েছেন ৯৬৫ জন।
অর্থ বিভাগে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, দেশের সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি উন্নয়নে এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধানের জন্য বাংলাদেশ পুলিশের সদস্যরা মুখ্য ভূমিকা পালন করে আসছে।
পুলিশ সদস্যরা বছরে ১০৪ দিন সাপ্তাহিক ছুটি ১৪ দিন সাধারণ ছুটি, ৮ দিন নির্বাহী আদেশে সরকারি ছুটি ও ৩ দিন বিভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের জন্য প্রযোজ্য ঐচ্ছিক ছুটিসহ প্রায় ১২৯টি ছুটির দিনেও বিরামহীন দায়িত্ব পালন করে থাকেন।
নাগরিকের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে বছরে গড়ে ৪০ পুলিশ সদস্য মারা যান এবং অসংখ্য পুলিশ সদস্য নানাভাবে আহত হন। বিগত ১০ বছরে ৭৭৮ পুলিশ সদস্য জীবন দিয়েছেন এবং বিভিন্ন পদমর্যাদার ৩ হাজার ৯৬৮ পুলিশ সদস্য গুরুতর আহত হয়েছেন।
প্রতিটি ক্ষেত্রে দায়িত্ব পালনের বাধ্যবাধকতা, স্বাভাবিক কর্মঘণ্টার অতিরিক্ত দৈনিক গড়ে ১৪-১৫ ঘণ্টা দায়িত্ব পালনের দরুন তারা অতিরিক্ত শারীরিক ও মানসিক চাপের সম্মুখীন হন। এ অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমানে পুলিশের কনস্টেবল থেকে শুরু করে সাব-ইন্সপেক্টর পর্যন্ত ঝুঁকিভাতা পেয়ে আসছেন।
পুলিশের ইন্সপেক্টর পদে কর্মরতরাও জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সরকারি দায়িত্ব পালন করলেও তারা এখনও এ ভাতার আওতায় আসেননি উল্লেখ করা হয় চিঠিতে। এতে বলা হয়, ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার কর্মকর্তারা থানায় কর্মকর্তা, ইন্সপেক্টর (তদন্ত), ফাঁড়ি ও তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ হিসেবে জননিরাপত্তা ও মানুষের জানমাল রক্ষায় সার্বক্ষণিকভাবে অপরাধ দমন, জঙ্গিবাদ দমন, পাবলিক অর্ডার ম্যানেজমেন্ট, হরতাল, অবরোধসহ বিভিন্ন ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ অপারেশনাল কর্মকাণ্ডে দায়িত্ব পালন করেন। এ জন্য তাদের অতিরিক্ত কোনো ভাতা দেয়া হয় না।
পুলিশের ইন্সপেক্টর পদমর্যাদার কর্মকর্তাদের কাজের ধরন, মাত্রা, পরিধি ও ঝুঁকির বিষয়টি বিবেচনা করে তাদের অনুকূলে ঝুঁকিভাতা প্রদানের জন্য সম্মতি দেয়ার অনুরোধ জানানো হয় চিঠিতে।
সূত্রঃ যুগান্তর