ঢাকা , শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ
সংবাদ শিরোনাম :

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কার্যকর ভূমিকা চান প্রধানমন্ত্রী

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী রোহিঙ্গাদের দেশে ফিরিয়ে নেয়ার লক্ষে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক গ্রুপ (আইএসডিবিজি)-র প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত বিপুল রোহিঙ্গা যারা নজিরবিহীন এক মানবিক সংকটে অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে সাড়া দিয়ে সীমান্ত উন্মুক্ত রেখে এবং তাদের প্রবেশ করতে দিয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কিন্তু,এখন আমরা তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে চাই। মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যখন জাতিগত নির্মূলের মুখোমুখি তখন আইডিবি নিশ্চুপ থাকতে পারে না।’ রোহিঙ্গরা স্থানীয় জনগোষ্ঠী এবং প্রতিবেশের ওপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কাজেই জোরপূর্বক বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের নিরাপদে নিজ দেশে ফিরে যাওয়া নিশ্চিত করার জন্য আইডিবিকে আমি দৃঢ়ভাবে তাদের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানাচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে হোটেল র‌্যাডিসনে ইসসলামী ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক গ্রুপের (আইএসডিবিজি) ঢাকাস্থ ‘রিজিওনাল হাব’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ড. বন্দর এম. এইচ. হাজ্জার, অর্থনৈতিক সম্পদ বিভাগের (ইআরডি) সচিব কাজী শফিকুল আজম অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন সেক্টরে বিনিয়োগের চাহিদা, বর্তমান অবস্থা ও ঘাটতি পর্যালোচনা করার জন্য কান্ট্রি ইনভেস্টমেন্ট প্লান বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও আইএসডিবিজি’র সহযোগিতা কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগ পরিকল্পনা মতে সম্পূর্ণ মেয়াদে মোট ১১ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রয়োজন। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক উৎস হতে এ পর্যন্ত ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। অর্থাৎ আরও ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঘাটতি রয়েছে। এ ঘাটতি পূরণে আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে সক্ষম হব ইনশাআল্লাহ। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এ উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় আপনাদের সমর্থন ও সহযোগিতা অব্যাহত রাখবেন।’

‘সকলে মিলে আমরা নতুন প্রজন্মের জন্য উজ্জ্বল-সমৃদ্ধ ভবিষৎ গড়ে তুলব’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আমরা সফল হয়েছি। এখন জাতীয় পরিকল্পনা এবং কর্মকৌশলের মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যেই টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।

ঢাকায় আইএসডিবিজি এর রিজিওনাল হাব স্থাপনকে স্বাগত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম সদর-দপ্তর থেকে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের অংশ। এরফলে প্রকল্প ব্যবস্থাপনা, বাস্তবায়ন, পর্যবেক্ষণ ও অন্যান্য আর্থিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমকে আরও দক্ষ, উন্নত ও গতিশীল করবে। এ উদ্যোগ সদস্য রাষ্ট্রের উন্নয়ন অগ্রাধিকার, প্রয়োজন ও চ্যালেঞ্জসমূহ আরও ঘনিষ্ঠভাবে বুঝতে আইএসডিবিকে সহায়তা করবে, বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, আইএসডিবি বাংলাদেশের অন্যতম বিশ্বস্ত উন্নয়ন-সহযোগী। আমাদের দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিগত চার দশকে আইএসডিবির ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। তিনি বলেন, আইএসডিবি এ-পর্যন্ত বাংলাদেশকে ২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার উন্নয়ন সহযোগিতা প্রদান করেছে। ৫৭টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে বাংলাদেশ সর্ববৃহৎ অর্থনৈতিক সহযোগিতা গ্রহণকারী দেশ। ঢাকায় নতুন অফিস স্থাপন বাংলাদেশের সঙ্গে আইএসডিবির সম্পর্ক সুসংহত এবং অংশীদারিত্ব সুদৃঢ় করার আরও একটি ধাপ বলে আমি মনে করি, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

রোহিঙ্গাদের প্রত্যাবাসনে বিশ্ব সম্প্রদায়ের কার্যকর ভূমিকা চান প্রধানমন্ত্রী

আপডেট টাইম : ১০:২৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মিয়ানমার থেকে বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় গ্রহণকারী রোহিঙ্গাদের দেশে ফিরিয়ে নেয়ার লক্ষে সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক গ্রুপ (আইএসডিবিজি)-র প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত বিপুল রোহিঙ্গা যারা নজিরবিহীন এক মানবিক সংকটে অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে সাড়া দিয়ে সীমান্ত উন্মুক্ত রেখে এবং তাদের প্রবেশ করতে দিয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘কিন্তু,এখন আমরা তাদের নিজ দেশে ফেরত পাঠাতে চাই। মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী যখন জাতিগত নির্মূলের মুখোমুখি তখন আইডিবি নিশ্চুপ থাকতে পারে না।’ রোহিঙ্গরা স্থানীয় জনগোষ্ঠী এবং প্রতিবেশের ওপর ব্যাপক নেতিবাচক প্রভাব সৃষ্টি করছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘কাজেই জোরপূর্বক বিতাড়িত রোহিঙ্গাদের নিরাপদে নিজ দেশে ফিরে যাওয়া নিশ্চিত করার জন্য আইডিবিকে আমি দৃঢ়ভাবে তাদের পাশে দাঁড়ানোর অনুরোধ জানাচ্ছি।’

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে হোটেল র‌্যাডিসনে ইসসলামী ডেভেলপমেন্ট ব্যাংক গ্রুপের (আইএসডিবিজি) ঢাকাস্থ ‘রিজিওনাল হাব’ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে একথা বলেন। অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত, ইসলামিক ডেভেলপমেন্ট ব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ড. বন্দর এম. এইচ. হাজ্জার, অর্থনৈতিক সম্পদ বিভাগের (ইআরডি) সচিব কাজী শফিকুল আজম অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন। পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন সেক্টরে বিনিয়োগের চাহিদা, বর্তমান অবস্থা ও ঘাটতি পর্যালোচনা করার জন্য কান্ট্রি ইনভেস্টমেন্ট প্লান বাস্তবায়নের ক্ষেত্রেও আইএসডিবিজি’র সহযোগিতা কামনা করেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগ পরিকল্পনা মতে সম্পূর্ণ মেয়াদে মোট ১১ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রয়োজন। দেশীয় ও আন্তর্জাতিক উৎস হতে এ পর্যন্ত ৪ দশমিক ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে। অর্থাৎ আরও ৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঘাটতি রয়েছে। এ ঘাটতি পূরণে আপনাদের সহযোগিতা প্রয়োজন।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের দেশ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত-সমৃদ্ধ দেশে পরিণত করতে সক্ষম হব ইনশাআল্লাহ। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, এ উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় আপনাদের সমর্থন ও সহযোগিতা অব্যাহত রাখবেন।’

‘সকলে মিলে আমরা নতুন প্রজন্মের জন্য উজ্জ্বল-সমৃদ্ধ ভবিষৎ গড়ে তুলব’ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে আমরা সফল হয়েছি। এখন জাতীয় পরিকল্পনা এবং কর্মকৌশলের মাধ্যমে ২০৩০ সালের মধ্যেই টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়নে লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছি।

ঢাকায় আইএসডিবিজি এর রিজিওনাল হাব স্থাপনকে স্বাগত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি ইসলামী উন্নয়ন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা কার্যক্রম সদর-দপ্তর থেকে প্রশাসনিক বিকেন্দ্রীকরণের অংশ। এরফলে প্রকল্প ব্যবস্থাপনা, বাস্তবায়ন, পর্যবেক্ষণ ও অন্যান্য আর্থিক ও প্রশাসনিক কার্যক্রমকে আরও দক্ষ, উন্নত ও গতিশীল করবে। এ উদ্যোগ সদস্য রাষ্ট্রের উন্নয়ন অগ্রাধিকার, প্রয়োজন ও চ্যালেঞ্জসমূহ আরও ঘনিষ্ঠভাবে বুঝতে আইএসডিবিকে সহায়তা করবে, বলেন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, আইএসডিবি বাংলাদেশের অন্যতম বিশ্বস্ত উন্নয়ন-সহযোগী। আমাদের দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিগত চার দশকে আইএসডিবির ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। তিনি বলেন, আইএসডিবি এ-পর্যন্ত বাংলাদেশকে ২২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার উন্নয়ন সহযোগিতা প্রদান করেছে। ৫৭টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে বাংলাদেশ সর্ববৃহৎ অর্থনৈতিক সহযোগিতা গ্রহণকারী দেশ। ঢাকায় নতুন অফিস স্থাপন বাংলাদেশের সঙ্গে আইএসডিবির সম্পর্ক সুসংহত এবং অংশীদারিত্ব সুদৃঢ় করার আরও একটি ধাপ বলে আমি মনে করি, যোগ করেন প্রধানমন্ত্রী।