ঢাকা , সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

শান্তিপূর্ণ পূজা উদযাপনে বিএনপিতে স্বস্তি

সারা দেশে শারদীয় দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপনে স্বস্তিতে বিএনপি। হিন্দু সম্প্রদায়ের এই ধর্মীয় বড় উৎসব এযাবৎকালের সবচেয়ে আনন্দঘন পরিবেশে পালন হয়েছে বলে মনে করছেন দলটির নেতারা। সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব ও আনসার বাহিনীর পাশাপাশি বিএনপি নেতাকর্মীরা নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রতিটি পূর্জামণ্ডপে পাহারা দিয়েছেন। করেছেন নানা সহযোগিতা। দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে কেন্দ্রীয় নেতারা নিজ নিজ এলাকায় অবস্থান করেছেন। ছিলেন স্থানীয় নেতারাও। প্রায় প্রতিটি পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেছেন। আওয়ামী লীগের আমলে পূজার সময়ে হামলা ও বিশৃঙ্খলা করে বিএনপির ওপর দায় চাপানো হতো, তবে এবার তারা (আওয়ামী লীগ) সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি বলে দলটির নীতিনির্ধারকদের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে। তারা মত দিয়েছেন, দুর্গাপূজাকে নিয়ে দেশি-বিদেশি কুচক্রী মহলের অনেক অপপ্রচার ছিল, কিন্তু এবার শান্তিপূর্ণ পূজা উদযাপন করার মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণিত হলো বাংলাদেশের মানুষ অসাম্প্রদায়িক এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাস করে।

দলটির নীতিনির্ধারক একাধিক নেতা জানান, বিএনপি হিন্দু সম্প্রদায়কে কখনো সংখ্যালঘু হিসাবে মনে করে না। যে কারণে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘এ দেশে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আমরা সবাই বাংলাদেশি-এটাই হোক আমাদের বড় পরিচয়। উৎসব যে ধর্মেরই হোক, উৎসবের প্রাঙ্গণ সব মানুষের জন্য উন্মুক্ত। সব ধর্মের মর্মবাণী দেশপ্রেম, শান্তি ও মানবকল্যাণ।’ বিএনপি মনে করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীরা দেশ ও মানবতার শত্রু। তাদের প্রতিহত করতে বিএনপি অঙ্গীকারবদ্ধ। এবারও দুর্গাপূজা নিয়ে কুচক্রী মহলের অনেক অপপ্রচার ছিল। কিন্তু প্রায় প্রতিটি পূজামণ্ডপে উপস্থিত থেকে, সারারাত পাহারা দিয়ে যত ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার সবগুলো করেছে নেতাকর্মীরা। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা হতে দেওয়া হয়নি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানসহ নেতাকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় যুগান্তরকে বলেন, ‘ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে এই প্রথম আনন্দের সঙ্গে দুর্গোৎসব উদযাপন হয়েছে। বাংলাদেশে সব ধর্মের মানুষ এখন নিরাপদ। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ী বিএনপি নেতাকর্মীরা যেভাবে সারা দেশে প্রতিটি পূজামণ্ডপে দিনরাত পালা করে পাহারা দিয়েছেন, এ কারণে ফ্যাসিবাদের দোসররা দেশের কোথাও কোনো অশান্তি সৃষ্টি করতে পারেনি। এ বছর হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ নির্বিঘ্নে পূজা উদযাপন করেছে। এজন্য আমরা হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ বিএনপির কাছে ঋণী।’

দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘অত্যন্ত নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে উৎসবমুখরভাবে এবারের শারদীয় দুর্গাপূজা পালিত হয়েছে। দুর্গাপূজাকে নিয়ে কুচক্রী মহলের অনেক অপপ্রচার ছিল। দেশ-বিদেশ থেকেও অনেক অপপ্রচার ছিল। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের যে আসলে অসাম্প্রদায়িক এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের অত্যন্ত গভীরে, সেটা আবারও প্রমাণিত হলো। এতদিন যেটা করা হয়েছে, তা শেখ হাসিনা সাম্প্রদায়িক বিভেদ সৃষ্টি করে তার অবৈধ ক্ষমতাকে ধরে রাখার জন্য করেছিল। এবার দেশবাসী জানিয়ে দিয়েছে, গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দল, দেশের জনগণ প্রতিটি পূজামণ্ডপে উপস্থিত থেকে, সারারাত পাহারা দিয়ে যত ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার সবগুলো করেছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাইরা তাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এ কাজটি করেছে। সুতরাং এই যে অভূতপূর্ব ভ্রাতৃত্ববোধের নিদর্শন দেখিয়েছে, যা অন্য কোনো দেশে দেখতে পাইনি। এমনকি পার্শ্ববর্তী দেশেও এটার কোনো দৃষ্টান্ত আমরা দেখিনি।’

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, রাজা-রানি এক সময় যে দেশ শাসন করেছে সেই হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা হচ্ছে নাটোর। আমার নির্বাচনি এলাকা নাটোর-২ (সদর)-এ সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে পূজা উদযাপন হয়েছে। আমরা বিএনপি নেতাকর্মীরা সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করেছি। উৎসবমুখরভাবে এবার এই উৎসব পালন হয়েছে, এর আগে কখনো আর হয়নি। শুধু নাটোরেই নয়, সারা দেশেই এবার উৎসবের মধ্য দিয়ে হিন্দুরা তাদের এই উৎসব পালন করেছে। কোথাও কোনো বিশৃঙ্খলা হয়নি।’

শারদীয় দুর্গাপূজা শেষ হওয়ার পর সোমবার সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করেন বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা। তারা জানান, গত প্রায় ১৬ বছর আওয়ামী লীগ সরকার সব সময়ই পূজামণ্ডপে হামলাসহ বিশৃঙ্খলা করে বিএনপির ওপর দায় চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু যেটা তারা কখনোই প্রমাণ করতে পারেনি। বরং প্রমাণিত হয়েছে বিএনপি কখনোই এগুলোর সঙ্গে ছিল না। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা মাঠে নেই। বিএনপিসহ আন্দোলনে থাকা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাও এবারের দুর্গাপূজার নিরাপত্তা নিশ্চিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন। এবারই কোনো নেতিবাচক ঘটনা ছাড়া উৎসবমুখরভাবে পালন করা হয়েছে দুর্গাপূজা।

সূত্রমতে, পূজা উপলক্ষ্যে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে নিজ নিজ এলাকায় গিয়েছেন কেন্দ্রীয় সব নেতা। সাংগঠনিক জেলা ও মহানগরের নেতারাও ছিলেন তৎপর। তারা পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করে সব ধরনের সহযোগিতা করেছেন। স্থানীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে পূজামণ্ডপ পাহারা দিয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি বিএনপি নিরাপত্তা নিশ্চিতে দিন-রাত কাজ করেছে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু বলেন, ‘আমার নির্বাচনি এলাকায় (নাটোর-১ আসন) এবারের মতো উৎসবমুখর পরিবেশে এর আগে কখনো পূজা হয়নি। তাদের যত নিরাপত্তা তা নিশ্চিত করতে আমাদের নেতাকর্মীরা সব ধরনের সহযোগিতা করেছেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তাদের শুভেচ্ছা পৌঁছে দিয়েছি। নির্বাচনি এলাকার ৪৫টি পূজামণ্ডপে গিয়েছি। বাকিগুলোতেও নেতাকর্মীদের পাঠিয়েছি।’

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক সদস্যসচিব আমিনুল হক বলেন, ‘আমার নির্বাচনি এলাকা ঢাকা-১৬ (পল্লবী-রূপনগর)সহ মহানগর উত্তরের প্রায় প্রতিটি পূজামণ্ডপে গিয়েছি। হিন্দু ভাইবোন, মা-বাবাদের মধ্যে যে আনন্দ দেখেছি, তা অন্য কোনো বছর দেখিনি। সেনাবাহিনী, পুলিশ, আনসারসহ বিএনপি আমরা সবাই চাই এ ধরনের পাহারা ভবিষ্যতে যাতে দেওয়া না লাগে। হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাইদের সংখ্যালঘু বলে, এই সংখ্যালঘুই আমরা বলতে চাই না। আমরা চাই আমাদের ভাই, বন্ধু, প্রতিবেশী হিসাবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করব।’

মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এসএ জিন্নাহ কবির বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে দলীয় নেতাকর্মীরা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে দায়িত্ব পালন করেছে। আমার নির্বাচনি এলাকা মানিকগঞ্জ-১ আসনেরও প্রায় প্রত্যেকটি পূজামণ্ডপে গিয়েছি। এযাবৎকালের সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ এবং আনন্দঘন পূজা উদযাপন হয়েছে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

শান্তিপূর্ণ পূজা উদযাপনে বিএনপিতে স্বস্তি

আপডেট টাইম : ১২:০৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৫ অক্টোবর ২০২৪

সারা দেশে শারদীয় দুর্গাপূজা শান্তিপূর্ণভাবে উদযাপনে স্বস্তিতে বিএনপি। হিন্দু সম্প্রদায়ের এই ধর্মীয় বড় উৎসব এযাবৎকালের সবচেয়ে আনন্দঘন পরিবেশে পালন হয়েছে বলে মনে করছেন দলটির নেতারা। সেনাবাহিনী, পুলিশ, র‌্যাব ও আনসার বাহিনীর পাশাপাশি বিএনপি নেতাকর্মীরা নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রতিটি পূর্জামণ্ডপে পাহারা দিয়েছেন। করেছেন নানা সহযোগিতা। দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে কেন্দ্রীয় নেতারা নিজ নিজ এলাকায় অবস্থান করেছেন। ছিলেন স্থানীয় নেতারাও। প্রায় প্রতিটি পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করেছেন। আওয়ামী লীগের আমলে পূজার সময়ে হামলা ও বিশৃঙ্খলা করে বিএনপির ওপর দায় চাপানো হতো, তবে এবার তারা (আওয়ামী লীগ) সেই সুযোগ কাজে লাগাতে পারেনি বলে দলটির নীতিনির্ধারকদের পর্যবেক্ষণে উঠে এসেছে। তারা মত দিয়েছেন, দুর্গাপূজাকে নিয়ে দেশি-বিদেশি কুচক্রী মহলের অনেক অপপ্রচার ছিল, কিন্তু এবার শান্তিপূর্ণ পূজা উদযাপন করার মধ্য দিয়ে আবারও প্রমাণিত হলো বাংলাদেশের মানুষ অসাম্প্রদায়িক এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতিতে বিশ্বাস করে।

দলটির নীতিনির্ধারক একাধিক নেতা জানান, বিএনপি হিন্দু সম্প্রদায়কে কখনো সংখ্যালঘু হিসাবে মনে করে না। যে কারণে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান বলেছেন, ‘এ দেশে ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে আমরা সবাই বাংলাদেশি-এটাই হোক আমাদের বড় পরিচয়। উৎসব যে ধর্মেরই হোক, উৎসবের প্রাঙ্গণ সব মানুষের জন্য উন্মুক্ত। সব ধর্মের মর্মবাণী দেশপ্রেম, শান্তি ও মানবকল্যাণ।’ বিএনপি মনে করে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টকারীরা দেশ ও মানবতার শত্রু। তাদের প্রতিহত করতে বিএনপি অঙ্গীকারবদ্ধ। এবারও দুর্গাপূজা নিয়ে কুচক্রী মহলের অনেক অপপ্রচার ছিল। কিন্তু প্রায় প্রতিটি পূজামণ্ডপে উপস্থিত থেকে, সারারাত পাহারা দিয়ে যত ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার সবগুলো করেছে নেতাকর্মীরা। কোনো ধরনের বিশৃঙ্খলা হতে দেওয়া হয়নি।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানসহ নেতাকর্মীদের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে দলটির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় যুগান্তরকে বলেন, ‘ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে এই প্রথম আনন্দের সঙ্গে দুর্গোৎসব উদযাপন হয়েছে। বাংলাদেশে সব ধর্মের মানুষ এখন নিরাপদ। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশনা অনুযায়ী বিএনপি নেতাকর্মীরা যেভাবে সারা দেশে প্রতিটি পূজামণ্ডপে দিনরাত পালা করে পাহারা দিয়েছেন, এ কারণে ফ্যাসিবাদের দোসররা দেশের কোথাও কোনো অশান্তি সৃষ্টি করতে পারেনি। এ বছর হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ নির্বিঘ্নে পূজা উদযাপন করেছে। এজন্য আমরা হিন্দু সম্প্রদায়ের মানুষ বিএনপির কাছে ঋণী।’

দলটির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘অত্যন্ত নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে উৎসবমুখরভাবে এবারের শারদীয় দুর্গাপূজা পালিত হয়েছে। দুর্গাপূজাকে নিয়ে কুচক্রী মহলের অনেক অপপ্রচার ছিল। দেশ-বিদেশ থেকেও অনেক অপপ্রচার ছিল। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষের যে আসলে অসাম্প্রদায়িক এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আমাদের সংস্কৃতি, ঐতিহ্যের অত্যন্ত গভীরে, সেটা আবারও প্রমাণিত হলো। এতদিন যেটা করা হয়েছে, তা শেখ হাসিনা সাম্প্রদায়িক বিভেদ সৃষ্টি করে তার অবৈধ ক্ষমতাকে ধরে রাখার জন্য করেছিল। এবার দেশবাসী জানিয়ে দিয়েছে, গণতন্ত্রকামী রাজনৈতিক দল, দেশের জনগণ প্রতিটি পূজামণ্ডপে উপস্থিত থেকে, সারারাত পাহারা দিয়ে যত ধরনের নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া দরকার সবগুলো করেছে। হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাইরা তাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এ কাজটি করেছে। সুতরাং এই যে অভূতপূর্ব ভ্রাতৃত্ববোধের নিদর্শন দেখিয়েছে, যা অন্য কোনো দেশে দেখতে পাইনি। এমনকি পার্শ্ববর্তী দেশেও এটার কোনো দৃষ্টান্ত আমরা দেখিনি।’

বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অ্যাডভোকেট রুহুল কুদ্দুস তালুকদার দুলু বলেন, রাজা-রানি এক সময় যে দেশ শাসন করেছে সেই হিন্দু অধ্যুষিত এলাকা হচ্ছে নাটোর। আমার নির্বাচনি এলাকা নাটোর-২ (সদর)-এ সুন্দর ও সুষ্ঠুভাবে পূজা উদযাপন হয়েছে। আমরা বিএনপি নেতাকর্মীরা সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করেছি। উৎসবমুখরভাবে এবার এই উৎসব পালন হয়েছে, এর আগে কখনো আর হয়নি। শুধু নাটোরেই নয়, সারা দেশেই এবার উৎসবের মধ্য দিয়ে হিন্দুরা তাদের এই উৎসব পালন করেছে। কোথাও কোনো বিশৃঙ্খলা হয়নি।’

শারদীয় দুর্গাপূজা শেষ হওয়ার পর সোমবার সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করেন বিএনপির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের নেতারা। তারা জানান, গত প্রায় ১৬ বছর আওয়ামী লীগ সরকার সব সময়ই পূজামণ্ডপে হামলাসহ বিশৃঙ্খলা করে বিএনপির ওপর দায় চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছে। কিন্তু যেটা তারা কখনোই প্রমাণ করতে পারেনি। বরং প্রমাণিত হয়েছে বিএনপি কখনোই এগুলোর সঙ্গে ছিল না। গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতন হয়েছে। আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীরা মাঠে নেই। বিএনপিসহ আন্দোলনে থাকা অন্যান্য রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীরাও এবারের দুর্গাপূজার নিরাপত্তা নিশ্চিতে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছেন। এবারই কোনো নেতিবাচক ঘটনা ছাড়া উৎসবমুখরভাবে পালন করা হয়েছে দুর্গাপূজা।

সূত্রমতে, পূজা উপলক্ষ্যে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের নির্দেশে নিজ নিজ এলাকায় গিয়েছেন কেন্দ্রীয় সব নেতা। সাংগঠনিক জেলা ও মহানগরের নেতারাও ছিলেন তৎপর। তারা পূজামণ্ডপ পরিদর্শন করে সব ধরনের সহযোগিতা করেছেন। স্থানীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে পূজামণ্ডপ পাহারা দিয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পাশাপাশি বিএনপি নিরাপত্তা নিশ্চিতে দিন-রাত কাজ করেছে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় সহদপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপু বলেন, ‘আমার নির্বাচনি এলাকায় (নাটোর-১ আসন) এবারের মতো উৎসবমুখর পরিবেশে এর আগে কখনো পূজা হয়নি। তাদের যত নিরাপত্তা তা নিশ্চিত করতে আমাদের নেতাকর্মীরা সব ধরনের সহযোগিতা করেছেন। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের পক্ষ থেকে তাদের শুভেচ্ছা পৌঁছে দিয়েছি। নির্বাচনি এলাকার ৪৫টি পূজামণ্ডপে গিয়েছি। বাকিগুলোতেও নেতাকর্মীদের পাঠিয়েছি।’

ঢাকা মহানগর উত্তর বিএনপির সাবেক সদস্যসচিব আমিনুল হক বলেন, ‘আমার নির্বাচনি এলাকা ঢাকা-১৬ (পল্লবী-রূপনগর)সহ মহানগর উত্তরের প্রায় প্রতিটি পূজামণ্ডপে গিয়েছি। হিন্দু ভাইবোন, মা-বাবাদের মধ্যে যে আনন্দ দেখেছি, তা অন্য কোনো বছর দেখিনি। সেনাবাহিনী, পুলিশ, আনসারসহ বিএনপি আমরা সবাই চাই এ ধরনের পাহারা ভবিষ্যতে যাতে দেওয়া না লাগে। হিন্দু সম্প্রদায়ের ভাইদের সংখ্যালঘু বলে, এই সংখ্যালঘুই আমরা বলতে চাই না। আমরা চাই আমাদের ভাই, বন্ধু, প্রতিবেশী হিসাবে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করব।’

মানিকগঞ্জ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এসএ জিন্নাহ কবির বলেন, ‘ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নির্দেশে দলীয় নেতাকর্মীরা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত নিরবচ্ছিন্নভাবে দায়িত্ব পালন করেছে। আমার নির্বাচনি এলাকা মানিকগঞ্জ-১ আসনেরও প্রায় প্রত্যেকটি পূজামণ্ডপে গিয়েছি। এযাবৎকালের সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ এবং আনন্দঘন পূজা উদযাপন হয়েছে।