ঢাকা , শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দ্রুতগতিতে নির্বাচনী মাঠ গোছাচ্ছে বিএনপি

ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর পরিস্থিতি সামাল দিতে গত ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর গঠন হয় অন্তর্বর্তী সরকার। রাষ্ট্র সংস্কারের কাজে নজর দিচ্ছে নতুন সরকার। সাম্প্রতিক সময়ে নির্বাচন কবে হবে এনিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। বিশেষ করে বিএনপি চাচ্ছে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দিক অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামী জোর দিচ্ছেন সংস্কারে। বাংলাদেশে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। একই সাথে নির্বাচনের কোনো দিনক্ষণও ঠিক করেনি  অন্তর্বর্তী সরকার।

এদিকে  সারাদেশে আগামী সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন বিএনপির প্রার্থীরা। দলটির নেতারা জনসংযোগের পাশাপাশি সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোতে যোগ দিচ্ছে। তারা নিজ এলাকায় প্রত্যেক ইউনিটকে পুনর্গঠন করে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার দিকে বেশি নজর দিচ্ছে

বিএনপির নেতারা বলছেন, গত পনেরো বছরে শেখ হাসিনা সরকারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় থাকা দলের নেতাদের পাশাপাশি সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর যারা শীর্ষ নেতা আছেন তাদের সহায়তার জন্য কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের নেতাদের চিঠি দিয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

নির্বাচনে বিএনপি জিতলে ‘সমমনা দলগুলোকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন’ এবং ‘দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্টে’র ঘোষণা দিয়েছিলেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এখন সম্ভাব্য সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশজুড়ে বিএনপির প্রস্তুতি ও কর্মকাণ্ডে সেটিই প্রাধান্য পাচ্ছে।

সমমনা দলগুলোর শীর্ষ নেতাদেরও নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় বিএনপি যে সহযোগিতা করবে সেটি তাদেরকেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তবে নেতারা বলছেন, বিএনপির সার্বিক নির্বাচনী প্রস্তুতিতে এবার মূলত প্রাধান্য পাবে ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশ নেওয়া দলীয় প্রার্থী, বিশেষ করে বিএনপির সহযোগী সংগঠন ছাত্রদল থেকে উঠে আসা নেতারা। এছাড়া দলের সাবেক এমপিদের মধ্যে যারা আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন তারাও নির্বাচনের জন্য দলের বিবেচনায় থাকার ইঙ্গিত পেয়েছেন।

দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলছেন, নির্বাচনমুখী দল হিসেবে নির্বাচন কেন্দ্রিক একটি প্রস্তুতি সবসময়ই দলের থাকে এবং সে অনুযায়ীই এখন তারা কাজ করছেন।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি সবসময়ই আমাদের ছিল এবং এটি থাকেও। তবে সময়ে সময়ে এর নানাদিক আপডেট কিংবা কিছু পরিবর্তন হয়। সেগুলো আমরা করছি।

সম্প্রতি বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলছেন, অনেকগুলো ফ্যাক্টর বিবেচনায় রেখে দলের কার্যক্রম এখন এগুচ্ছে। আমাদের দলের চেয়ারম্যান বলেছেন নির্বাচনে জিতে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সবাইকে সাথে নিয়ে অর্থাৎ জাতীয় সরকার করে দল পরিচালনা করা হবে। যেসব দল আন্তরিকভাবে বিএনপির সাথে ছিল, তারাও সেই সরকারে থাকবেন। ফলে নির্বাচনী প্রস্তুতিতেও এ বিষয়টিও নিঃসন্দেহে বিবেচনায় থাকবে। কোনো কোনো এলাকায় তারাও দলের বিবেচনায় থাকবেন।

প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি। এর আগে ২০১৮ সালে দলটি অংশ নিয়েছিলো ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জোটের অংশ হয়ে। ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করেছিল দলটি।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

দ্রুতগতিতে নির্বাচনী মাঠ গোছাচ্ছে বিএনপি

আপডেট টাইম : ০৪:৪৬ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ অক্টোবর ২০২৪

ছাত্র-জনতার গণ-অভ্যুত্থানের পর পরিস্থিতি সামাল দিতে গত ৫ আগস্ট ভারতে পালিয়ে যান সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এরপর গঠন হয় অন্তর্বর্তী সরকার। রাষ্ট্র সংস্কারের কাজে নজর দিচ্ছে নতুন সরকার। সাম্প্রতিক সময়ে নির্বাচন কবে হবে এনিয়ে আলোচনা তুঙ্গে। বিশেষ করে বিএনপি চাচ্ছে যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন দিক অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামী জোর দিচ্ছেন সংস্কারে। বাংলাদেশে আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কবে হবে, তা এখনো স্পষ্ট নয়। একই সাথে নির্বাচনের কোনো দিনক্ষণও ঠিক করেনি  অন্তর্বর্তী সরকার।

এদিকে  সারাদেশে আগামী সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির অংশ হিসেবে সক্রিয় হয়ে উঠেছেন বিএনপির প্রার্থীরা। দলটির নেতারা জনসংযোগের পাশাপাশি সামাজিক ও ধর্মীয় অনুষ্ঠানগুলোতে যোগ দিচ্ছে। তারা নিজ এলাকায় প্রত্যেক ইউনিটকে পুনর্গঠন করে সাংগঠনিক কার্যক্রম পরিচালনার দিকে বেশি নজর দিচ্ছে

বিএনপির নেতারা বলছেন, গত পনেরো বছরে শেখ হাসিনা সরকারবিরোধী আন্দোলনে সক্রিয় থাকা দলের নেতাদের পাশাপাশি সমমনা রাজনৈতিক দলগুলোর যারা শীর্ষ নেতা আছেন তাদের সহায়তার জন্য কেন্দ্র থেকে তৃণমূলের নেতাদের চিঠি দিয়ে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

নির্বাচনে বিএনপি জিতলে ‘সমমনা দলগুলোকে নিয়ে জাতীয় সরকার গঠন’ এবং ‘দ্বি-কক্ষ বিশিষ্ট পার্লামেন্টে’র ঘোষণা দিয়েছিলেন দলটির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান। এখন সম্ভাব্য সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে দেশজুড়ে বিএনপির প্রস্তুতি ও কর্মকাণ্ডে সেটিই প্রাধান্য পাচ্ছে।

সমমনা দলগুলোর শীর্ষ নেতাদেরও নিজ নিজ নির্বাচনী এলাকায় বিএনপি যে সহযোগিতা করবে সেটি তাদেরকেও জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।

তবে নেতারা বলছেন, বিএনপির সার্বিক নির্বাচনী প্রস্তুতিতে এবার মূলত প্রাধান্য পাবে ২০১৮ সালের নির্বাচনে অংশ নেওয়া দলীয় প্রার্থী, বিশেষ করে বিএনপির সহযোগী সংগঠন ছাত্রদল থেকে উঠে আসা নেতারা। এছাড়া দলের সাবেক এমপিদের মধ্যে যারা আন্দোলনে সক্রিয় ছিলেন তারাও নির্বাচনের জন্য দলের বিবেচনায় থাকার ইঙ্গিত পেয়েছেন।

দলটির সর্বোচ্চ নীতিনির্ধারণী ফোরাম জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ বলছেন, নির্বাচনমুখী দল হিসেবে নির্বাচন কেন্দ্রিক একটি প্রস্তুতি সবসময়ই দলের থাকে এবং সে অনুযায়ীই এখন তারা কাজ করছেন।

তিনি আরও বলেন, নির্বাচনের প্রস্তুতি সবসময়ই আমাদের ছিল এবং এটি থাকেও। তবে সময়ে সময়ে এর নানাদিক আপডেট কিংবা কিছু পরিবর্তন হয়। সেগুলো আমরা করছি।

সম্প্রতি বিএনপি চেয়ারপার্সনের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল বলছেন, অনেকগুলো ফ্যাক্টর বিবেচনায় রেখে দলের কার্যক্রম এখন এগুচ্ছে। আমাদের দলের চেয়ারম্যান বলেছেন নির্বাচনে জিতে বিএনপি ক্ষমতায় গেলে সবাইকে সাথে নিয়ে অর্থাৎ জাতীয় সরকার করে দল পরিচালনা করা হবে। যেসব দল আন্তরিকভাবে বিএনপির সাথে ছিল, তারাও সেই সরকারে থাকবেন। ফলে নির্বাচনী প্রস্তুতিতেও এ বিষয়টিও নিঃসন্দেহে বিবেচনায় থাকবে। কোনো কোনো এলাকায় তারাও দলের বিবেচনায় থাকবেন।

প্রসঙ্গত, শেখ হাসিনা সরকারের অধীনে অনুষ্ঠিত চলতি বছরের জানুয়ারিতে দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়নি বিএনপি। এর আগে ২০১৮ সালে দলটি অংশ নিয়েছিলো ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বাধীন জোটের অংশ হয়ে। ২০১৪ সালের নির্বাচন বর্জন করেছিল দলটি।