ঢাকা , মঙ্গলবার, ২৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ব্যবসায়ীর যে আচরণ আল্লাহ পছন্দ করেন

আমাদের সবার প্রতিদিন কিছু না কিছু লেনদেন হয়। বাজারে গেলে ক্রয়-বিক্রয় হয়। একেক ক্রেতা ও বিক্রেতা একেক ধরনের। স্বভাবের মাঝে সাধারণত তারতম্য হয়েই থাকে।

এই লেনদেনের ক্ষেত্রে ইসলামের অন্যতম একটি সৌন্দর্য হচ্ছে নম্রতা। সাধারণত ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে ক্রয়-বিক্রয়ের সময় দর-কষাকষি হয়।

এ ক্ষেত্রে উভয়ের মধ্যে অনেক সময় মনোমালিন্য হয়, কিংবা একে অন্যের প্রতি অবিশ্বাস তৈরি হয়। অথচ এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে শরিয়ত নম্রতা ও সদ্ব্যবহার করার আদেশ দিয়েছেন।

এই নম্রতার মাধ্যমে উভয়ের মধ্যে ভালোবাসা ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন তৈরি হবে। হাদিসে এসেছে, যারা ক্রয়-বিক্রয়ে নম্রতা অবলম্বন করবে আল্লাহ তাআলা তাদের প্রতি অনুগ্রহ করবেন। একটু চিন্তা করুন তো, যদি আমি আমার এই ব্যবসা-বাণিজ্যে নম্রতা অবলম্বন করি, তাহলে আল্লাহ তাআলা স্বয়ং আমার প্রতি দয়া করবেন।

এটি আমার জন্য কত বড় নিয়ামত। আল্লাহর রহমত ছাড়া আমরা তো কোনো কিছু করতে পারব না। কিন্তু ব্যবসা-বাণিজ্যে একটু সতর্কতা আমার জীবন আল্লাহর রহমতে ঢেকে থাকতে পারে। জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ক্রয়-বিক্রয় ও পাওনা আদায়ে নম্র ব্যবহার করে, আল্লাহ তাআলা তার ওপর রহম করেন। ’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৯৪৬)

ক্রয়-বিক্রয়ে নম্রতার যেমন পরকালীন উপকার আছে, তেমনিভাবে জাগতিকভাবেও এর লাভ রয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্যে যারা নম্রতা অবলম্বন করে, মানুষের সঙ্গে সুন্দর আচরণ করে, তারা বাণিজ্যিকভাবেও অনেক লাভবান হয়। তাদের কাছেই ক্রেতা ভিড় জমায়। কারণ সুন্দর ব্যবহার সবার কাছেই পছন্দনীয়। দেখুন, আমরা যদি প্রত্যেকেই বিষয়টি এভাবে চিন্তা করি তাহলে কতই না সুন্দর হয়। ব্যবসায়ী বা বিক্রেতা যদি চিন্তা করে, ক্রেতা না থাকলে তো আমার আয়-উপার্জন বন্ধ হয়ে যাবে। এসব ক্রেতার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা আমাকে রিজিকের ব্যবস্থা করেন। তাই তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে সুন্দর আচরণ করা কর্তব্য। যদি কোনো বিক্রেতা এই মনোভাব লালন করে, তাহলে অবশ্যই সে ক্রেতাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করবে।

অন্যদিকে ক্রেতাও যদি এভাবে চিন্তা করে যে এই বিক্রেতা আমাদের জন্য কষ্ট করে পণ্য সরবরাহ করে। তারা যদি না থাকত বা এই পণ্যের ব্যবস্থাপনা না করত, তাহলে আমরা সহজেই তা সংগ্রহ করতে পারতাম না। তারা আমাদের হিতাকাঙ্ক্ষী, আমাদের কল্যাণকামী। তাদের সঙ্গে কোনোভাবেই মন্দ ব্যবহার করা উচিত নয়। তারা আমাদের উপকার করে, আমরা কিভাবে তাদের সঙ্গে মন্দ ব্যবহার করব! ক্রেতারা যদি এভাবে চিন্তা করে তাহলে উভয়ের মাঝে নম্রতা ও ভদ্রতার সুন্দর চিত্র ফুটে উঠবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের এভাবে চিন্তা করার তাওফিক দান করুন।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

ব্যবসায়ীর যে আচরণ আল্লাহ পছন্দ করেন

আপডেট টাইম : ০৫:০৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৮ জুলাই ২০২৪

আমাদের সবার প্রতিদিন কিছু না কিছু লেনদেন হয়। বাজারে গেলে ক্রয়-বিক্রয় হয়। একেক ক্রেতা ও বিক্রেতা একেক ধরনের। স্বভাবের মাঝে সাধারণত তারতম্য হয়েই থাকে।

এই লেনদেনের ক্ষেত্রে ইসলামের অন্যতম একটি সৌন্দর্য হচ্ছে নম্রতা। সাধারণত ক্রেতা ও বিক্রেতার মধ্যে ক্রয়-বিক্রয়ের সময় দর-কষাকষি হয়।

এ ক্ষেত্রে উভয়ের মধ্যে অনেক সময় মনোমালিন্য হয়, কিংবা একে অন্যের প্রতি অবিশ্বাস তৈরি হয়। অথচ এটি কোনোভাবেই কাম্য নয়। ক্রয়-বিক্রয়ের ক্ষেত্রে শরিয়ত নম্রতা ও সদ্ব্যবহার করার আদেশ দিয়েছেন।

এই নম্রতার মাধ্যমে উভয়ের মধ্যে ভালোবাসা ও ভ্রাতৃত্বের বন্ধন তৈরি হবে। হাদিসে এসেছে, যারা ক্রয়-বিক্রয়ে নম্রতা অবলম্বন করবে আল্লাহ তাআলা তাদের প্রতি অনুগ্রহ করবেন। একটু চিন্তা করুন তো, যদি আমি আমার এই ব্যবসা-বাণিজ্যে নম্রতা অবলম্বন করি, তাহলে আল্লাহ তাআলা স্বয়ং আমার প্রতি দয়া করবেন।

এটি আমার জন্য কত বড় নিয়ামত। আল্লাহর রহমত ছাড়া আমরা তো কোনো কিছু করতে পারব না। কিন্তু ব্যবসা-বাণিজ্যে একটু সতর্কতা আমার জীবন আল্লাহর রহমতে ঢেকে থাকতে পারে। জাবের ইবনে আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি ক্রয়-বিক্রয় ও পাওনা আদায়ে নম্র ব্যবহার করে, আল্লাহ তাআলা তার ওপর রহম করেন। ’ (সহিহ বুখারি, হাদিস : ১৯৪৬)

ক্রয়-বিক্রয়ে নম্রতার যেমন পরকালীন উপকার আছে, তেমনিভাবে জাগতিকভাবেও এর লাভ রয়েছে। ব্যবসা-বাণিজ্যে যারা নম্রতা অবলম্বন করে, মানুষের সঙ্গে সুন্দর আচরণ করে, তারা বাণিজ্যিকভাবেও অনেক লাভবান হয়। তাদের কাছেই ক্রেতা ভিড় জমায়। কারণ সুন্দর ব্যবহার সবার কাছেই পছন্দনীয়। দেখুন, আমরা যদি প্রত্যেকেই বিষয়টি এভাবে চিন্তা করি তাহলে কতই না সুন্দর হয়। ব্যবসায়ী বা বিক্রেতা যদি চিন্তা করে, ক্রেতা না থাকলে তো আমার আয়-উপার্জন বন্ধ হয়ে যাবে। এসব ক্রেতার মাধ্যমে আল্লাহ তাআলা আমাকে রিজিকের ব্যবস্থা করেন। তাই তাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার না করে সুন্দর আচরণ করা কর্তব্য। যদি কোনো বিক্রেতা এই মনোভাব লালন করে, তাহলে অবশ্যই সে ক্রেতাদের সঙ্গে ভালো ব্যবহার করবে।

অন্যদিকে ক্রেতাও যদি এভাবে চিন্তা করে যে এই বিক্রেতা আমাদের জন্য কষ্ট করে পণ্য সরবরাহ করে। তারা যদি না থাকত বা এই পণ্যের ব্যবস্থাপনা না করত, তাহলে আমরা সহজেই তা সংগ্রহ করতে পারতাম না। তারা আমাদের হিতাকাঙ্ক্ষী, আমাদের কল্যাণকামী। তাদের সঙ্গে কোনোভাবেই মন্দ ব্যবহার করা উচিত নয়। তারা আমাদের উপকার করে, আমরা কিভাবে তাদের সঙ্গে মন্দ ব্যবহার করব! ক্রেতারা যদি এভাবে চিন্তা করে তাহলে উভয়ের মাঝে নম্রতা ও ভদ্রতার সুন্দর চিত্র ফুটে উঠবে। আল্লাহ তাআলা আমাদের এভাবে চিন্তা করার তাওফিক দান করুন।