বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ প্রবৃত্তি প্রতিটি মানুষকেই তাড়িত করে। প্রবৃত্তি চায় মানুষকে লাগামহীনভাবে চালাতে। ভেতরের অদৃশ্য এই স্পৃহা মানুষকে অনিয়ন্ত্রিত জীবনাচারের প্রতি উদ্বুদ্ধ করে। প্রতি মুহূর্তে মানুষের ভেতরে আশ্রিত প্রবৃত্তি তাকে বিপথগামী করার অপচেষ্টায় লিপ্ত। যারা প্রবৃত্তির লাগাম নিজেদের হাতে নিতে পেরেছেন, প্রবৃত্তির ফাঁদে যারা পা দেননি, তারাই দুনিয়াতে সফলকাম হয়েছেন। অনেকেই প্রবৃত্তির টালবাহানায় পড়ে মূল্যবান জীবনকে নষ্ট করেছেন। অপব্যয় করেছেন অপার সম্ভাবনার জীবনীশক্তি।
প্রবৃত্তির চাহিদার কোনো অন্ত নেই। প্রবৃত্তি সব সময়ই কামনা-বাসনা, লোভ-হিংসায় লিপ্ত থাকতে চায়। যারা প্রবৃত্তি দ্বারা তাড়িত হয়ে জীবনের ধারা প্রবাহিত করেন, তারা আর কখনো শান্তি ও স্বস্তির ঠিকানা খুঁজে পান না। প্রবৃত্তির সংজ্ঞায় জনৈক বুজুর্গ ব্যক্তি লিখেছেন, ‘প্রবৃত্তি দুগ্ধপোষ্য শিশুর মতো। তাকে দুধপানের সুযোগ দিলে বড় হয়েও দুধপানে অভ্যস্ত থেকে যাবে। আর যদি দুগ্ধপান বন্ধ করে দাও, তবে কিছুদিন কান্নাকাটি করে এমনিতে তা ছেড়ে দেবে।’
প্রবৃত্তির ফাঁদে একবার পা রাখলে তা থেকে বের হয়ে আসা কঠিন। প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণে আনতে কঠোর সাধনা প্রয়োজন। কোরানে বলা হয়েছে, ‘যারা আমার রাস্তায় ক্লেশ-কষ্ট আর সাধনা করবে, পরিবার-সমাজ ও প্রবৃত্তির অন্যায় আবদার ভূলুণ্ঠিত করে আমার পথে চলবে, অবশ্যই আমি তাদের আমার পথে পরিচালিত করব।’ প্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণ করতে পারলে ইবাদতে ফল লাভ হয়। প্রবৃত্তিকে যত অবদমিত করা যাবে, ততই স ষ্টার কাছে প্রিয় হওয়া যাবে। হাদিসে আছে, প্রকৃত মুজাহিদ সেই, যে তার প্রবৃত্তির সঙ্গে লড়াই করতে পারে। আমাদের সমাজে যত অন্যায়-অপকর্ম সবই প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ না করতে পারার পরিণতি।
সবাই যদি নিজেদের প্রবৃত্তিতে লাগাম টেনে ধরে এবং ইসলামের নির্দেশনা অনুযায়ী জীবনযাপনে অভ্যস্ত হয়, তাহলে সমাজের অনেক অপরাধ কমে যাবে। আধ্যাত্মিক সাধনা ও চর্চা ছাড়া প্রবৃত্তিকে নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। এ জন্য ইসলাম আধ্যাত্মিক রাহবার বা পথপ্রদর্শকের প্রতি গুরুত্বারোপ করেছে। সংশোধিত ও পূর্ণাঙ্গ কোনো মানুষের নির্দেশনা পেলে জীবনতরী সহজেই তীরে ভেড়ানো সম্ভব। এ জন্য সবার আগে চাই, প্রবৃত্তি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা এবং তাকে কুপোকাত করার কৌশল।