ঢাকা , শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ইসলামে মানবাধিকারের ধারণা

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর জাতিসংঘ ঘোষণা করে মানবাধিকার সনদ। এ সনদ ঘোষণার প্রায় দেড় হাজার বছর আগে ইসলাম মানবাধিকারের সপক্ষে যে অবস্থান নিয়েছিল, তা ছিল অনেক বেশি কার্যকরী। ৬২২ সালে মদিনার রাষ্ট্রনায়ক মুহাম্মদ (সা.) প্রণীত ইসলামী রাষ্ট্রের লিখিত সংবিধান মদিনা সনদ ও বিদায় হজের ভাষণে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার অধিকার ও মর্যাদার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। মদিনা সনদ ও বিদায় হজের ভাষণে ঘোষিত নীতিগুলো বিপন্ন মানবতার মুক্তি ও তাদের অধিকার সুরক্ষার প্রকৃত দিকনির্দেশক। এর প্রত্যেকটি ধারাই মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার শ্রেষ্ঠ নীতিমালা হিসেবে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের কাছে বিবেচিত।

ইসলামে মানবাধিকারের ধারণা
যখন পৃথিবীবাসী মানবাধিকার সম্পর্কে ছিল সম্পূর্ণ উদাসীন, মহানবী (সা.) তখন সর্বজনীন মানবাধিকারের সপক্ষে যে জোরালো ভাষণ দিয়েছিলেন, তা কেয়ামত পর্যন্ত মানবাধিকার সুরক্ষার শ্রেষ্ঠ দলিল হয়ে থাকবে। বিদায় হজের ঐতিহাসিক ভাষণে মানবাধিকারের প্রতি গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেছেন, ‘কোনো আরবের ওপর কোনো অনারবের প্রাধান্য নেই। সাদা মানুষের ওপর কালো মানুষের এবং কালো মানুষের ওপর সাদা মানুষের কোনোই শ্রেষ্ঠত্ব নেই। আল্লাহভীতি ও মানবকল্যাণ হলো মর্যাদার একমাত্র মানদ-।’ (মুসনাদে আহমদ : ২৩৪৮৯)। তিনি আরও বলেছেন, ‘তোমাদের পরস্পরের জীবন, ধনসম্পদ ও সম্মান পরস্পরের জন্য সম্মানার্হ, যেমন তোমাদের এ দিনটি সম্মানার্হ।’ (বোখারি : ৬৭)। পৃথিবীর সব মানুষের পারিবারিক পরিচিতি তুলে ধরতে গিয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে মানুষ, আমি তোমাদের সৃষ্টি করেছি এক নর ও নারী হতে।’ (সূরা হুজরাত : ১৩)। এ আয়াতের মাঝে সব মানুষের বংশপরম্পরা যে এক সূত্রে গাঁথা এবং তাদের সম্পর্ক যে ভ্রাতৃত্ববোধের, সে কথা উচ্চারিত হয়েছে পরম মমতার সঙ্গে।

মানবজীবনের অধিকার
ইসলাম যেভাবে মানবতাকে মূল্যায়ন করেছে, অন্য কোনো ধর্ম সেটা করতে পারেনি। মানবজাতির মর্যাদা ও দায়িত্ব সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা যে ধারণা বিশ্ববাসীকে দিয়েছেন, তা এক কথায় অবিস্মরণীয়। মানুষ মানুষের প্রতিপক্ষ নয়, বরং তারা একে অন্যের অধিকার রক্ষা ও কল্যাণকামিতার দিক দিয়ে কতটা দায়বদ্ধ, সে ব্যাপারটি ফুটে উঠেছে নিম্নোক্ত আয়াতে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি হিসেবে বাছাই করা হয়েছে, মানবতার কল্যাণের জন্য।’ (সূরা আলে ইমরান : ১১০)। একমাত্র ইসলাম দিয়েছে মানুষকে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক তথা সব সুবিধা ভোগ করার অধিকার। যেমন ব্যক্তিস্বাধীনতা, চলাচলের স্বাধীনতা, লেখা, বলা ও মতপ্রকাশের অধিকার প্রভৃতি। তেমনি দিয়েছে প্রত্যেক নাগরিকের থাকা, খাওয়া, পরা, চিকিৎসা ও শিক্ষালাভের অধিকার; দিয়েছে মালিকানার অধিকার এবং শাসকের গঠনমূলক সমালোচনার অধিকার। ইসলাম মানবজীবনের নিরাপত্তার অধিকারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ঘোষণা দিয়েছে, ‘বিনাকারণে কেউ কাউকে হত্যা করলে সে যেন দুনিয়ার সব মানুষকে হত্যা করল; আর কেউ কারও প্রাণ রক্ষা করলে সে যে দুনিয়ার সব মানুষের প্রাণ রক্ষা করল।’ (সূরা মায়িদা : ৩২)। হাদিসে এরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখেরাতের ওপর বিশ্বাস রাখে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়।’ (বোখারি : ৫৬৭২)। সমাজে সম্মানের সঙ্গে বাস করা এবং জানমালের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা হচ্ছে একজন মানুষের সামাজিক অধিকার। এ অধিকার যাতে লঙ্ঘিত না হয়, সেজন্য মানুষের মর্যাদাহানি, কুৎসা রটানো, ঠাট্টা-বিদ্রপ করাকেও ইসলাম সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। এরশাদ হচ্ছে, তোমাদের কোনো সম্প্রদায় অন্য সম্প্রদায়কে হেয়প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে যেন বিদ্রপ না করে।’ (সূরা হুজরাত : ১১)।

মানবাধিকার প্রাপ্তির নিশ্চয়তা
বর্তমান পৃথিবীতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে দীর্ঘ তালিকা, তা কখনও বলে শেষ করা যাবে না। শুধু সনদ রচনা ও আইন করে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করা যাবে না; মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে আল্লাহ তায়ালা ও মানুষের অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাবোধের চেতনা জাগ্রত করতে হবে সবার আগে। এ চেতনা দিয়ে যদি মানবতাকে মূল্যায়ন করা যায়, তাহলেই মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। মানবহৃদয়ে মানবাধিকার চর্চার চেতনা শুধু ইসলাম ধর্মই প্রবেশ করাতে পারে। কারণ ইসলামের প্রত্যেকটি নির্দেশনার মাধ্যমেই মানুষের মধ্যে মানবতাবোধ প্রোথিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে সবার অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সবার আগে প্রয়োজন আল্লাহর অধিকার আদায় করা। অন্যথায় কোনো অধিকার পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। কারণ মানুষ সুযোগ পেলেই অন্যের অধিকার লঙ্ঘন করতে চাইবে। জনমনে আল্লাহ তায়ালা ও পরকালের ভয় সৃষ্টি করা ছাড়া পৃথিবীর কোনো সনদ, কোনো আইন দিয়ে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভর নয়। ইসলাম সবচেয়ে নিরাপদ জীবন ব্যবস্থা। মানবাধিকারের সর্বোচ্চ নিশ্চয়তা এখানেই বিদ্যমান। ইসলাম শুধু মানবাধিকারের ঘোষণা দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, বরং ইসলামের সোনালি ইতিহাসে তার সফল বাস্তবায়নও করেছে।

মানবাধিকার সুরক্ষার চেতনা
এককজন প্রকৃত মুসলমানের মৌলিক গুণাবলি কখনও মানবাধিকারের সীমা লঙ্ঘন করার অনুমতি দেয় না। ইসলাম মানবাধিকার সুরক্ষাকে দুনিয়া ও আখেরাতের শান্তি, সমৃদ্ধি, মুক্তির উপায় বলে ঘোষণা করেছে। মানুষ যদি প্রকৃত ঈমানদার হয় এবং আল্লাহর অধিকার যথাযথ আদায় করে, তখন তার ভেতরে একধরনের জবাবদিহিতার ভয় সৃষ্টি হবে। এতে সে কারও অধিকার লঙ্ঘন করবে না। কারণ সে ভাববে, কারও অধিকার লঙ্ঘন করলে তাকে কবর, হাশর, মিজান, পুলসিরাত, জাহান্নাম ইত্যাদির সম্মুখীন হতে হবে। আর এ চেতনা মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হলেই মানুষ মানুষের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ হয়ে উঠবে। বিশ্ববাসী যদি মানবাধিকার রক্ষায় মদিনা সনদ, বিদায় হজের ভাষণ ও ইসলামী চেতনাকে বুকে ধারণ করতে পারত, তাহলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের যাবতীয় আশঙ্কা থেকে মুক্তি পেত বিশ্বমানবতা।

লেখক : এমফিল গবেষক, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

ইসলামে মানবাধিকারের ধারণা

আপডেট টাইম : ০৯:৫৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১১ ডিসেম্বর ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ ১৯৪৮ সালের ১০ ডিসেম্বর জাতিসংঘ ঘোষণা করে মানবাধিকার সনদ। এ সনদ ঘোষণার প্রায় দেড় হাজার বছর আগে ইসলাম মানবাধিকারের সপক্ষে যে অবস্থান নিয়েছিল, তা ছিল অনেক বেশি কার্যকরী। ৬২২ সালে মদিনার রাষ্ট্রনায়ক মুহাম্মদ (সা.) প্রণীত ইসলামী রাষ্ট্রের লিখিত সংবিধান মদিনা সনদ ও বিদায় হজের ভাষণে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার অধিকার ও মর্যাদার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। মদিনা সনদ ও বিদায় হজের ভাষণে ঘোষিত নীতিগুলো বিপন্ন মানবতার মুক্তি ও তাদের অধিকার সুরক্ষার প্রকৃত দিকনির্দেশক। এর প্রত্যেকটি ধারাই মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার শ্রেষ্ঠ নীতিমালা হিসেবে রাষ্ট্রবিজ্ঞানীদের কাছে বিবেচিত।

ইসলামে মানবাধিকারের ধারণা
যখন পৃথিবীবাসী মানবাধিকার সম্পর্কে ছিল সম্পূর্ণ উদাসীন, মহানবী (সা.) তখন সর্বজনীন মানবাধিকারের সপক্ষে যে জোরালো ভাষণ দিয়েছিলেন, তা কেয়ামত পর্যন্ত মানবাধিকার সুরক্ষার শ্রেষ্ঠ দলিল হয়ে থাকবে। বিদায় হজের ঐতিহাসিক ভাষণে মানবাধিকারের প্রতি গুরুত্বারোপ করে তিনি বলেছেন, ‘কোনো আরবের ওপর কোনো অনারবের প্রাধান্য নেই। সাদা মানুষের ওপর কালো মানুষের এবং কালো মানুষের ওপর সাদা মানুষের কোনোই শ্রেষ্ঠত্ব নেই। আল্লাহভীতি ও মানবকল্যাণ হলো মর্যাদার একমাত্র মানদ-।’ (মুসনাদে আহমদ : ২৩৪৮৯)। তিনি আরও বলেছেন, ‘তোমাদের পরস্পরের জীবন, ধনসম্পদ ও সম্মান পরস্পরের জন্য সম্মানার্হ, যেমন তোমাদের এ দিনটি সম্মানার্হ।’ (বোখারি : ৬৭)। পৃথিবীর সব মানুষের পারিবারিক পরিচিতি তুলে ধরতে গিয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘হে মানুষ, আমি তোমাদের সৃষ্টি করেছি এক নর ও নারী হতে।’ (সূরা হুজরাত : ১৩)। এ আয়াতের মাঝে সব মানুষের বংশপরম্পরা যে এক সূত্রে গাঁথা এবং তাদের সম্পর্ক যে ভ্রাতৃত্ববোধের, সে কথা উচ্চারিত হয়েছে পরম মমতার সঙ্গে।

মানবজীবনের অধিকার
ইসলাম যেভাবে মানবতাকে মূল্যায়ন করেছে, অন্য কোনো ধর্ম সেটা করতে পারেনি। মানবজাতির মর্যাদা ও দায়িত্ব সম্পর্কে আল্লাহ তায়ালা যে ধারণা বিশ্ববাসীকে দিয়েছেন, তা এক কথায় অবিস্মরণীয়। মানুষ মানুষের প্রতিপক্ষ নয়, বরং তারা একে অন্যের অধিকার রক্ষা ও কল্যাণকামিতার দিক দিয়ে কতটা দায়বদ্ধ, সে ব্যাপারটি ফুটে উঠেছে নিম্নোক্ত আয়াতে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘তোমাদের সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি হিসেবে বাছাই করা হয়েছে, মানবতার কল্যাণের জন্য।’ (সূরা আলে ইমরান : ১১০)। একমাত্র ইসলাম দিয়েছে মানুষকে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক তথা সব সুবিধা ভোগ করার অধিকার। যেমন ব্যক্তিস্বাধীনতা, চলাচলের স্বাধীনতা, লেখা, বলা ও মতপ্রকাশের অধিকার প্রভৃতি। তেমনি দিয়েছে প্রত্যেক নাগরিকের থাকা, খাওয়া, পরা, চিকিৎসা ও শিক্ষালাভের অধিকার; দিয়েছে মালিকানার অধিকার এবং শাসকের গঠনমূলক সমালোচনার অধিকার। ইসলাম মানবজীবনের নিরাপত্তার অধিকারকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে ঘোষণা দিয়েছে, ‘বিনাকারণে কেউ কাউকে হত্যা করলে সে যেন দুনিয়ার সব মানুষকে হত্যা করল; আর কেউ কারও প্রাণ রক্ষা করলে সে যে দুনিয়ার সব মানুষের প্রাণ রক্ষা করল।’ (সূরা মায়িদা : ৩২)। হাদিসে এরশাদ হয়েছে, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহ ও আখেরাতের ওপর বিশ্বাস রাখে, সে যেন তার প্রতিবেশীকে কষ্ট না দেয়।’ (বোখারি : ৫৬৭২)। সমাজে সম্মানের সঙ্গে বাস করা এবং জানমালের নিরাপত্তার নিশ্চয়তা হচ্ছে একজন মানুষের সামাজিক অধিকার। এ অধিকার যাতে লঙ্ঘিত না হয়, সেজন্য মানুষের মর্যাদাহানি, কুৎসা রটানো, ঠাট্টা-বিদ্রপ করাকেও ইসলাম সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। এরশাদ হচ্ছে, তোমাদের কোনো সম্প্রদায় অন্য সম্প্রদায়কে হেয়প্রতিপন্ন করার উদ্দেশ্যে যেন বিদ্রপ না করে।’ (সূরা হুজরাত : ১১)।

মানবাধিকার প্রাপ্তির নিশ্চয়তা
বর্তমান পৃথিবীতে মানবাধিকার লঙ্ঘনের যে দীর্ঘ তালিকা, তা কখনও বলে শেষ করা যাবে না। শুধু সনদ রচনা ও আইন করে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করা যাবে না; মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করতে হলে আল্লাহ তায়ালা ও মানুষের অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাবোধের চেতনা জাগ্রত করতে হবে সবার আগে। এ চেতনা দিয়ে যদি মানবতাকে মূল্যায়ন করা যায়, তাহলেই মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব। মানবহৃদয়ে মানবাধিকার চর্চার চেতনা শুধু ইসলাম ধর্মই প্রবেশ করাতে পারে। কারণ ইসলামের প্রত্যেকটি নির্দেশনার মাধ্যমেই মানুষের মধ্যে মানবতাবোধ প্রোথিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। তবে সবার অধিকার নিশ্চিত করার জন্য সবার আগে প্রয়োজন আল্লাহর অধিকার আদায় করা। অন্যথায় কোনো অধিকার পুরোপুরি বাস্তবায়ন করা সম্ভব নয়। কারণ মানুষ সুযোগ পেলেই অন্যের অধিকার লঙ্ঘন করতে চাইবে। জনমনে আল্লাহ তায়ালা ও পরকালের ভয় সৃষ্টি করা ছাড়া পৃথিবীর কোনো সনদ, কোনো আইন দিয়ে মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভর নয়। ইসলাম সবচেয়ে নিরাপদ জীবন ব্যবস্থা। মানবাধিকারের সর্বোচ্চ নিশ্চয়তা এখানেই বিদ্যমান। ইসলাম শুধু মানবাধিকারের ঘোষণা দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, বরং ইসলামের সোনালি ইতিহাসে তার সফল বাস্তবায়নও করেছে।

মানবাধিকার সুরক্ষার চেতনা
এককজন প্রকৃত মুসলমানের মৌলিক গুণাবলি কখনও মানবাধিকারের সীমা লঙ্ঘন করার অনুমতি দেয় না। ইসলাম মানবাধিকার সুরক্ষাকে দুনিয়া ও আখেরাতের শান্তি, সমৃদ্ধি, মুক্তির উপায় বলে ঘোষণা করেছে। মানুষ যদি প্রকৃত ঈমানদার হয় এবং আল্লাহর অধিকার যথাযথ আদায় করে, তখন তার ভেতরে একধরনের জবাবদিহিতার ভয় সৃষ্টি হবে। এতে সে কারও অধিকার লঙ্ঘন করবে না। কারণ সে ভাববে, কারও অধিকার লঙ্ঘন করলে তাকে কবর, হাশর, মিজান, পুলসিরাত, জাহান্নাম ইত্যাদির সম্মুখীন হতে হবে। আর এ চেতনা মানুষের মধ্যে সৃষ্টি হলেই মানুষ মানুষের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ হয়ে উঠবে। বিশ্ববাসী যদি মানবাধিকার রক্ষায় মদিনা সনদ, বিদায় হজের ভাষণ ও ইসলামী চেতনাকে বুকে ধারণ করতে পারত, তাহলে মানবাধিকার লঙ্ঘনের যাবতীয় আশঙ্কা থেকে মুক্তি পেত বিশ্বমানবতা।

লেখক : এমফিল গবেষক, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়, কুষ্টিয়া