পশ্চিম উত্তর প্রদেশের আগ্রা শহরের সঞ্জয় নগর কলোনি। একদিকে যখন এ রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে সাম্প্রদায়িকতা মাথা চাড়া দিয়েছে, সেখানেই এই ছোট্ট কলোনিতে এলে দেখা যাবে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির এক সুন্দর ছবি।
দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী ১৮ বছরের পূজা কুশওয়াহা সকালে আর পাঁচটা পড়ুয়ার মতো হলেও সন্ধ্যাবেলা সে পাড়ার টিচার দিদি। ৩৫ মুসলিম বাচ্চাকে কোরআন পড়ান পূজা।
স্পষ্ট আরবি উচ্চারণে যখন পূজা কোরআনের পাঠ দেন, তখন একবারের জন্যও মনে হয় না এ ভাষা তার মাতৃভাষা নয়। পূজার গুণে মুগ্ধ খুদে পড়ুয়াদের
অভিভাবকরাও।
কিন্তু কীভাবে আরবি ভাষায় এমন পারদর্শী হলো পূজা? টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে দেয়া একটি সাক্ষাত্কাষরে পূজা জানিয়েছেন, তাদের পাড়ায় সঙ্গীতা বেগম নামে এক মহিলা থাকতেন। তার বাবা মুসলিম ছিলেন এবং মা হিন্দু। ছোটবেলায় তার কাছে কোরআন পড়তে যেত সে। সেখান থেকেই রপ্ত করেছেন এই গুণ।
ব্যক্তিগত কারণে সঙ্গীতা বেগম নিজে আর পড়াতে না পারলেও তারই অনুরোধে শিক্ষকের ভূমিকায় উপনীত হয়েছেন পূজা।
তবে এর জন্য কোনো পারিশ্রমিক নেন না তিনি। কারণ বেশির ভাগ পড়ুয়াই গরিব ঘরের। ক্রমে পড়ুয়ার সংখ্যা বেড়ে যাওয়াতে বাড়িতে আর জায়গা হত না পড়ানোর। তখনই পাড়ার বড়রা তার স্কুলের জন্য মন্দিরের প্রাঙ্গনে জায়গা করে দেন। এখন মন্দিরের একদিকে বসেই পূজা মুসলিম বাচ্চাদের কোরআনের পাঠ দেন।
শহরের অন্যতম খ্যাতনামা মুসলিম নেতা ৭০ বছরের হাজী জামিলুদ্দিন কুরেশি জানিয়েছেন, পূজার জন্য তিনি গর্ববোধ করেন।
টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে দেয়া সাক্ষাত্কারে তিনি জানিয়েছেন, শিক্ষকের কোনো ধর্ম হয় না। আর ইসলাম কাউকে কোরআন পড়ার থেকে আটকায়নি। যেকোনো ধর্মের মানুষই কোরআন পড়তে পারেন।