ঢাকা , শনিবার, ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

৪৪ বছর আগে শৈশবে মা-বাবাকে হারিয়েছেন দু’ভাই , আবেগাপ্লুত পরশ-তাপস

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ আওয়ামী লীগ থেকে আজ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে প্রার্থী হিসেবে শেখ ফজলে নূর তাপসের নাম ঘোষণা করা হলো। রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের কার্যালয় তখন লোকে লোকারণ্য। নেতা-কর্মীদের ভিড়ের মধ্যে দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী হিসেবে তাপসের নাম ঘোষণা করা হয়। প্রায় সবাই তখন উল্লাস প্রকাশ করতে থাকেন।

ঠিক এই সময়টাতেই নেতা-কর্মীদের ভিড়ের মাঝে একজন মানুষ পুরোটা সময় ছিলেন তাপসের পাশে। তিনি হলেন শেখ ফজলে শামস পরশ। তাপসের একমাত্র ভাই। সবাই যখন তাপসকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন, তার সামনে বিভিন্ন মিডিয়ার মাইক্রোফোন জড়ো করা হচ্ছে, সেসময় অন্য এক পরশকে দেখা গেল। তার চোখে-মুখে তখন বাঁধভাঙা আনন্দের ছাপ। কখনও আবার আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ছেন। সবসময় যেই লোকটাকে নির্লীপ্ত, ভাবলেশহীন দেখতে অভ্যস্ত সবাই, আজ সেই পরশকেই দেখা গেল অন্য রূপে।

শৈশবেই মা-বাবাকে হারিয়েছেন দু’ভাই। জীবনের বন্ধুর চলার পথটা দুজন মিলে পাড়ি দিয়েছেন একসঙ্গে। বহু ঝড়-ঝঞ্ঝা পেড়িয়েছেন হাতে হাত ধরে। একজনের দুঃখে যেমন অন্যজন কেঁদেছেন, তেমনি একজনের প্রাপ্তিতেও অন্যজন আনন্দে ভেসেছেন। সেটাই আজ আবারও দেখা গেল।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাবা শেখ মনি ও মা আরজু মণিকে চিরতরে হারান পরশ-তাপস। পরশের বয়স তখন মাত্র ৬। আর ছোট ভাই তাপস তখন ৪ বছরের শিশু। পঁচাত্তরের পর দুর্বিষহ জীবন কাটাতে হয় পরশ-তাপসকে। কখনও আত্মীয়দের বাসায় লুকিয়ে থাকতে হয়েছে, কখনো বা পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে। অস্তিত্বরক্ষার এই পুরো সময়টাতেই এক সঙ্গে থেকেছেন দু’ভাই। সেই থেকে কেটে গেছে ৪৪ বছর। আজ সাফল্যের সময়টাতেও একে অন্যের সাথে একেবারে মিশে থাকছেন তারা।

গত ২৪ নভেম্বর যখন বাবার হাতে গড়া সংগঠন যুবলীগের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন পরশ, তখন সবার আগে তার কাছে ছুটে গিয়েছিলেন তাপস। বড় ভাইকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন তিনি। আর আজ যখন সিটি মেয়র হওয়ার পথে পা বাড়ালেন ছোট ভাই তাপস, তখন পুরোটা সময় সঙ্গে থাকলেন পরশ।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

৪৪ বছর আগে শৈশবে মা-বাবাকে হারিয়েছেন দু’ভাই , আবেগাপ্লুত পরশ-তাপস

আপডেট টাইম : ১২:২৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ১ জানুয়ারী ২০২০

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ আওয়ামী লীগ থেকে আজ ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র পদে প্রার্থী হিসেবে শেখ ফজলে নূর তাপসের নাম ঘোষণা করা হলো। রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগের কার্যালয় তখন লোকে লোকারণ্য। নেতা-কর্মীদের ভিড়ের মধ্যে দক্ষিণের মেয়র প্রার্থী হিসেবে তাপসের নাম ঘোষণা করা হয়। প্রায় সবাই তখন উল্লাস প্রকাশ করতে থাকেন।

ঠিক এই সময়টাতেই নেতা-কর্মীদের ভিড়ের মাঝে একজন মানুষ পুরোটা সময় ছিলেন তাপসের পাশে। তিনি হলেন শেখ ফজলে শামস পরশ। তাপসের একমাত্র ভাই। সবাই যখন তাপসকে অভিনন্দন জানাচ্ছেন, তার সামনে বিভিন্ন মিডিয়ার মাইক্রোফোন জড়ো করা হচ্ছে, সেসময় অন্য এক পরশকে দেখা গেল। তার চোখে-মুখে তখন বাঁধভাঙা আনন্দের ছাপ। কখনও আবার আবেগাপ্লুত হয়ে পড়ছেন। সবসময় যেই লোকটাকে নির্লীপ্ত, ভাবলেশহীন দেখতে অভ্যস্ত সবাই, আজ সেই পরশকেই দেখা গেল অন্য রূপে।

শৈশবেই মা-বাবাকে হারিয়েছেন দু’ভাই। জীবনের বন্ধুর চলার পথটা দুজন মিলে পাড়ি দিয়েছেন একসঙ্গে। বহু ঝড়-ঝঞ্ঝা পেড়িয়েছেন হাতে হাত ধরে। একজনের দুঃখে যেমন অন্যজন কেঁদেছেন, তেমনি একজনের প্রাপ্তিতেও অন্যজন আনন্দে ভেসেছেন। সেটাই আজ আবারও দেখা গেল।

১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বাবা শেখ মনি ও মা আরজু মণিকে চিরতরে হারান পরশ-তাপস। পরশের বয়স তখন মাত্র ৬। আর ছোট ভাই তাপস তখন ৪ বছরের শিশু। পঁচাত্তরের পর দুর্বিষহ জীবন কাটাতে হয় পরশ-তাপসকে। কখনও আত্মীয়দের বাসায় লুকিয়ে থাকতে হয়েছে, কখনো বা পালিয়ে বেড়াতে হয়েছে। অস্তিত্বরক্ষার এই পুরো সময়টাতেই এক সঙ্গে থেকেছেন দু’ভাই। সেই থেকে কেটে গেছে ৪৪ বছর। আজ সাফল্যের সময়টাতেও একে অন্যের সাথে একেবারে মিশে থাকছেন তারা।

গত ২৪ নভেম্বর যখন বাবার হাতে গড়া সংগঠন যুবলীগের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন পরশ, তখন সবার আগে তার কাছে ছুটে গিয়েছিলেন তাপস। বড় ভাইকে ফুল দিয়ে অভিনন্দন জানিয়েছিলেন তিনি। আর আজ যখন সিটি মেয়র হওয়ার পথে পা বাড়ালেন ছোট ভাই তাপস, তখন পুরোটা সময় সঙ্গে থাকলেন পরশ।