ঢাকা , শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বান্দরবানের লামায় বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি, পানিবন্দী ৫০ হাজার মানুষ

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ  বান্দরবান থেকে: বান্দরবানের লামায় গত তিন দিনের বৃষ্টিপাত ও পাহাড় থেকে নেমে আসা পানিতে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে উপজেলার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ।

লামা উপজেলা চেয়ারম্যান থোয়াইনু অং চৌধুরী জানিয়েছেন, প্রচুর বৃষ্টিপাত হচ্ছে। পাহাড়ে ঝুঁকিতে বসবাসকারী ও পনিবন্দী মানুষকে নিরাপদে সরে যেতে সরকারিভাবে মাইকিং করা হয়েছে। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সরকারি স্থাপনাকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করার জন্য বলা হয়েছে।

লামা পৌরসভার মেয়র মো. জহিরুল ইসলাম বলেছেন, লামা বাজারসহ পৌর এলাকা এখন পানির নিচে। সোমবার থেকে পানিবন্দী মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। সবাইকে নৌকা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। শুধু পৌর এলাকাতেই
প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দী। ভুক্তভোগী মানুষের সংখ্যা বেশি হওয়ায় ত্রাণ, নিরাপদ পানি ও শুকনো খাবারের অভাব দেখা দিয়েছে।

রুপসীপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ছাচিং প্রু মার্মা জানান, পাহাড়ি ঢলে সমগ্র এলাকা এখন পানির নিচে। পানি আরো বাড়বে। পাহাড়ি বাঙ্গালি মানুষের দুর্ভোগ চরমে।

৩ নং ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান জাকের হোসেন মজুমদার বলেন, গতকাল সোমবার থেকে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। প্রচুর স্থানে পাহাড় ধস হয়েছে তবে প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। এসময় ত্রাণের প্রয়োজন ছিল। অধিকাংশ মানুষ ক্ষয়ক্ষতির শিকার।

লামা বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাপান বড়ুয়া বলেন, যে পরিমাণ পানি হয়েছে তাতে শুধু বাজার ব্যবসায়ীদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হবে কয়েক কোটি টাকা। মাতামুহুরী নদীর গতিপদ পরিবর্তন ছাড়া বারবার সৃষ্ট এই বন্যা ঠেকানো সম্ভব নয়। ব্যবসায়ীদের আশ্রয় নেয়া কোনো জায়গা নেই। লামা বাজারে একটি আশ্রয় কেন্দ্র করা প্রয়োজন।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, লামা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়, আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ফাজিল মাদ্রাসা, নুনার বিল ও চেয়ারম্যান পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৮/৯ শতাধিক পানিবন্দী পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। সেখানে জরুরি খাবার ও পানির প্রয়োজন বলে ভূক্তভোগীরা জানায়।

লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেন, আমরা সচেষ্ট রয়েছি। যে কোন দুর্ঘটনার খবর পাওয়া মাত্র সহায়তা করার জন্য ফায়ার সার্ভিস ও অন্যান্য সহযোগী প্রতিষ্ঠানকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। খাদ্য গুদামে প্রায় একশত মেট্রিক টন চাল ও গম মজুদ রয়েছে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

বান্দরবানের লামায় বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি, পানিবন্দী ৫০ হাজার মানুষ

আপডেট টাইম : ০১:৪৭ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৪ জুলাই ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ  বান্দরবান থেকে: বান্দরবানের লামায় গত তিন দিনের বৃষ্টিপাত ও পাহাড় থেকে নেমে আসা পানিতে সৃষ্ট বন্যা পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়েছে। পানিবন্দী হয়ে পড়েছে উপজেলার প্রায় ৫০ হাজার মানুষ।

লামা উপজেলা চেয়ারম্যান থোয়াইনু অং চৌধুরী জানিয়েছেন, প্রচুর বৃষ্টিপাত হচ্ছে। পাহাড়ে ঝুঁকিতে বসবাসকারী ও পনিবন্দী মানুষকে নিরাপদে সরে যেতে সরকারিভাবে মাইকিং করা হয়েছে। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও সরকারি স্থাপনাকে আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহার করার জন্য বলা হয়েছে।

লামা পৌরসভার মেয়র মো. জহিরুল ইসলাম বলেছেন, লামা বাজারসহ পৌর এলাকা এখন পানির নিচে। সোমবার থেকে পানিবন্দী মানুষকে নিরাপদে সরিয়ে নেয়া হচ্ছে। সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। সবাইকে নৌকা দিয়ে চলাচল করতে হচ্ছে। শুধু পৌর এলাকাতেই
প্রায় ২০ হাজার মানুষ পানিবন্দী। ভুক্তভোগী মানুষের সংখ্যা বেশি হওয়ায় ত্রাণ, নিরাপদ পানি ও শুকনো খাবারের অভাব দেখা দিয়েছে।

রুপসীপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান ছাচিং প্রু মার্মা জানান, পাহাড়ি ঢলে সমগ্র এলাকা এখন পানির নিচে। পানি আরো বাড়বে। পাহাড়ি বাঙ্গালি মানুষের দুর্ভোগ চরমে।

৩ নং ফাঁসিয়াখালী ইউপি চেয়ারম্যান জাকের হোসেন মজুমদার বলেন, গতকাল সোমবার থেকে সড়ক যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন। প্রচুর স্থানে পাহাড় ধস হয়েছে তবে প্রাণহানির খবর পাওয়া যায়নি। এসময় ত্রাণের প্রয়োজন ছিল। অধিকাংশ মানুষ ক্ষয়ক্ষতির শিকার।

লামা বাজার ব্যবসায়ী কমিটির সাধারণ সম্পাদক জাপান বড়ুয়া বলেন, যে পরিমাণ পানি হয়েছে তাতে শুধু বাজার ব্যবসায়ীদের ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ হবে কয়েক কোটি টাকা। মাতামুহুরী নদীর গতিপদ পরিবর্তন ছাড়া বারবার সৃষ্ট এই বন্যা ঠেকানো সম্ভব নয়। ব্যবসায়ীদের আশ্রয় নেয়া কোনো জায়গা নেই। লামা বাজারে একটি আশ্রয় কেন্দ্র করা প্রয়োজন।

সরেজমিনে ঘুরে দেখা যায়, লামা সরকারী উচ্চ বিদ্যালয়, আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়, ফাজিল মাদ্রাসা, নুনার বিল ও চেয়ারম্যান পাড়া সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ৮/৯ শতাধিক পানিবন্দী পরিবার আশ্রয় নিয়েছে। সেখানে জরুরি খাবার ও পানির প্রয়োজন বলে ভূক্তভোগীরা জানায়।

লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বলেন, আমরা সচেষ্ট রয়েছি। যে কোন দুর্ঘটনার খবর পাওয়া মাত্র সহায়তা করার জন্য ফায়ার সার্ভিস ও অন্যান্য সহযোগী প্রতিষ্ঠানকে প্রস্তুত রাখা হয়েছে। খাদ্য গুদামে প্রায় একশত মেট্রিক টন চাল ও গম মজুদ রয়েছে।