ঢাকা , শনিবার, ২৭ জুলাই ২০২৪, ১২ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

আ.লীগের সম্ভাব্য তরুণ প্রার্থী তালিকায় যারা এগিয়ে

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে এলাকায় তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। নিজ নিজ সংসদীয় আসনের মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধি এবং জনপ্রিয়তা অর্জনে তারা এলাকায় যাচ্ছেন, গণসংযোগ করছেন।  ঈদ উপলক্ষে নবীন-প্রবীণ মনোনয়নপ্রত্যাশীদের প্রায় সকলেই ঘুরে এসেছেন নিজ নিজ এলাকা।

আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী সংসদ নির্বাচনে দলের প্রার্থী তালিকার বেশ বড় একটা অংশে থাকবে তরুণদের নাম। নতুন মুখগুলোর বেশির ভাগই সাবেক ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও বর্তমান আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ-সমর্থিত বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতারাও রয়েছেন এই দলে।

এসব নেতা নির্বাচন সামনে রেখে অনেক দিন আগে থেকে এলাকায় যাওয়া-আসা করছেন। ঈদের ছুটিকে কেন্দ্র করে তাদের জনসংযোগ ছিলো চোখে পড়ার মত। রাজধানী বা অন্যান্য শহরে বসবাসরত এসব নেতা একটু সময়-সুযোগ পেলেই ছুটে যাচ্ছেন নির্বাচনী এলাকায়। তারা দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি নিয়মিত এলাকার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন। রাজনৈতিক কর্মসূচির পাশাপাশি যোগ দিচ্ছেন সামাজিক অনুষ্ঠানে।

ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী এই নেতাদের অনেকে এলাকায় ইতিমধ্যে বেশ আলোচিত হয়ে উঠেছেন। মনোনয়নের দৌড়ে পুরনো প্রার্থীদের সামনে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে দাঁড়িয়েছেন তারা। তাদের মধ্যে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ নেতা যেমন রয়েছেন তেমনি আছেন ছাত্রলীগ কিংবা অঙ্গসংগঠনের নেতাও।

মনোনয়নপ্রত্যাশী এসব আলোচিত নেতাদের মধ্যে রয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল (নেত্রকোনা-৩), আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, সচিব আব্দুল মালেক(পটুয়াখালী-১), সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম (শরীয়তপুর-২), কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী (লক্ষ্মীপুর-৪) ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী (চাঁদপুর-৩), উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন (চট্টগ্রাম-১৫), কেন্দ্রীয় সদস্য অ্যাডভোকেট এ বি এম রিয়াজুল কবীর কাউসার (নরসিংদী-৫), নেত্রকোনা থেকে আাওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, সিলেট থেকে মিসবাহউদ্দিন সিরাজ।

ফরিদপুর-১ আসনে রীতিমতো জাগরণ তৈরি করেছেন সাবেক ছাত্রনেতা এবং সাংবাদিক আরিফুর রহমান দোলন। পিরোজপুর-১ আসনে আলোচিত হয়ে উঠেছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাজ্জাদ সাকিব বাদশা।

কুমিল্লা-৯ আসনে তরুণ প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন লাভে চমক দেখাতে চান সাবেক ছাত্রলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন ফারুক। তিনি বলেন, আওয়ামীলীগে তরুণ নেতৃত্ব এখন সময়ের দাবি। দল আমাকে যোগ্য মনে করলে আমি কুমিল্লা-৯ (লাকসাম-মনোহরগঞ্জ) আসনে নির্বাচন করবো। অন্যথায় দল অন্য কাউকে মনোনয়ন দিলে আমি দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করে যাব।

আলোচিত অন্যদের মধ্যে রয়েছেন কেন্দ্রীয় সদস্য মারুফা আক্তার পপি (জামালপুর), নুরুল ইসলাম ঠান্ডু, হাসান আলী (সিরাজগঞ্জ-১), হাবিবুর রহমান স্বপন, চয়ন ইসলাম (সিরাজগঞ্জ-৫) ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন (গাইবান্ধা-৫), ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ (বাগেরহাট-৪), নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এ এইচ এম মাসুদ দুলাল, কোহেলি কুদ্দুস মুক্তি (নাটোর-৪)।

আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত আব্দুল জলিলের ছেলে নিজাম উদ্দিন জন নওগাঁয়-৫ আসনে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। নড়াইল-১ আসন কিংবা ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে নারী সংসদ সদস্য ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পী, সাইফুজ্জামান শিখর (মাগুরা-১), শাহে আলম (বরিশাল-২), মনিরুজ্জামান মনির (ঝালকাঠি-১), শফি আহমেদ (নেত্রকোনা-৪), অজয় কর খোকন কিশোরগঞ্জ-৫ আসনে আসনে আলোচিত মনোনয়নপ্রত্যাশী।

ঢাকার আসনগুলোতে নতুনদের মধ্যে আলোচিত মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন পনিরুজ্জামান তরুণ (ঢাকা-১), ড. আওলাদ হোসেন (ঢাকা-৪), স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোল্লা মো. আবু কাউসার, যুবলীগের ইসমাঈল চৌধুরী সম্রাট (ঢাকা-৮), সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য সাবিনা আক্তার তুহিন (ঢাকা-১৪), , স্বেচ্ছাসেবক লীগের গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু (ঢাকা-১৫)।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের যেকোনো একটি আসন থেকে মনোনয়ন চাইবেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ। আর ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান মনোনয়নপ্রত্যাশী ঢাকা-১৩ আসনে।

এ ছাড়া আলোচনায় আছেন শেখ সোহেল রানা টিপু (রাজবাড়ী-১), নারী সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নূরজাহান বেগম মুক্তা (চাঁদপুর-৫), মাইনুদ্দিন হাসান চৌধুরী (চট্টগ্রাম-১৪), জহিরউদ্দীন মাহমুদ লিপটন (ফেনী-৩)। সাবেক ছাত্রনেতা ও মঠবাড়িয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফুর রহমান (পিরোজপুর-৩), নারী সংসদ সদস্য সেলিনা আক্তার লিটা, এমদাদুল হক (ঠাকুরগাঁও-৩), জামালপুরের ইসলামপুর থেকে নারী সংসদ সদস্য মাহজাবিন খালেদ, বিশ্বনাথ সরকার বিটু (রংপুর-২), সাফিয়া রহমান (রংপুর-৩), রাশেক রহমান, জাকির হোসেন সরকার (রংপুর-৫), কামাল আহমেদ তালুকদার, অ্যাডভোকেট মমতাজ (নীলফামারী-২) মাজহারুল হক প্রধান, আনোয়ার সাদাত সম্রাট (পঞ্চগড়-১), আব্দুল মালেক চিশতি (পঞ্চগড়-২)।

 

মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতারা সবাই নিজের যোগ্যতা ও বিজয়ের ব্যাপারে আস্থাশীল। তারা বলছেন, এলাকার মানুষের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগের কারণে তাদের একটা গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়েছে। নির্বাচনে দলের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেলে তারা নিজের আসনটি দলীয় সভাপতিকে উপহার দিতে পারবেন।

নিজের মনোনয়নের প্রত্যাশার কথা বলতে গিয়ে আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল বলেন, ‘আমরা রাজনীতি করি জনগণের কল্যাণের জন্য। সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে সেই কল্যাণের ক্ষেত্র অনেক বৃদ্ধি পায়। আর সংসদীয় রাজনীতিতে একজন রাজনীতিবিদের পরিপূর্ণতা আসে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে। আমি সেই লক্ষ্যে এলাকার উন্নয়নে কাজ করছি। দলের কাছে মনোনয়নপ্রত্যাশী। আশা করি দল আমাকে মূল্যায়ন করবে।’

মনোনয়নের জন্য দলের সভাপতি শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা রাখছেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরেই জনগণের সঙ্গে কাজ করছি। নেত্রী আমাকে মহানগরে বড় দায়িত্ব দিয়েছেন। এখন যদি তিনি আমাকে সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন দেন, আশা করি আমি তার প্রত্যাশা পূরণ করতে পারব। তবে সবকিছুই নেত্রীর ওপর নির্ভর করবে।’

তৃণমূলে গ্রহণযোগ্য, সৎ, পরীক্ষিতদের আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়া হবে- দলীয় প্রধানের এই বক্তব্য উল্লেখ করে স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু বলেন, ‘ আমি বলতে পারি ৩২ বছরের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা রয়েছে আমার। দীর্ঘদিন রাজনীতি করার কারণে এলাকার মানুষের সঙ্গে আমার একটা সম্পর্ক রয়েছে। আমি একজন মনোনয়নপ্রত্যাশী।’

ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন বলেন, ‘আমি এলাকার উন্নয়নের কাজ করছি। নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় ভালো আমার। যদি নেত্রী আমাকে মনোনয়ন দেন তাহলে আসনটি আমি তাকে উপহার দিতে পারব বলে আশা করছি।’

নির্বাচনে অংশ নেয়ার প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, ‘এলাকার জনগণের সুখে-দুঃখে পাশে থাকতে চাই সব সময়ই। দলের হয়েই জনগণের পাশে থাকার চেষ্টা করি। দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা মনোনয়ন দিলে নির্বাচনে অংশ নেব।’

আগামী নির্বাচনে নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে প্রার্থী বাছাই করা হবে বলে জানান দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও দলীয় সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ। তিনি বলেন, ‘নবীন ও প্রবীণের সমন্বয়ে সারা দেশে আমরা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রার্থী বাছাই করব।’

তিনি বলেন, ‘এলাকায় জনপ্রিয় নেতারাই এবার মনোনয়ন পাবেন। এ জন্য তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের গ্রহণযোগ্যতাও থাকতে হবে। এর বাইরে বিভিন্ন রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশ তো থাকবেই।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ সাকিব বাদশাহ জানান, ‘স্থানীয় দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে আমি কাজ করছি। দলকে গুছিয়ে রেখে এলাকার মানুষের উন্নয়নে কাজ করছি। আগামী নির্বাচনে আমাদের নেত্রী আমার উপর আস্থা রাখবে বলেই আমি বিশ্বাস করি।’

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

আ.লীগের সম্ভাব্য তরুণ প্রার্থী তালিকায় যারা এগিয়ে

আপডেট টাইম : ০৪:১৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৬ জুলাই ২০১৭

একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে এলাকায় তোড়জোড় শুরু করে দিয়েছেন ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগের মনোনয়নপ্রত্যাশীরা। নিজ নিজ সংসদীয় আসনের মানুষের সঙ্গে সম্পর্ক বৃদ্ধি এবং জনপ্রিয়তা অর্জনে তারা এলাকায় যাচ্ছেন, গণসংযোগ করছেন।  ঈদ উপলক্ষে নবীন-প্রবীণ মনোনয়নপ্রত্যাশীদের প্রায় সকলেই ঘুরে এসেছেন নিজ নিজ এলাকা।

আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্রে জানা গেছে, আগামী সংসদ নির্বাচনে দলের প্রার্থী তালিকার বেশ বড় একটা অংশে থাকবে তরুণদের নাম। নতুন মুখগুলোর বেশির ভাগই সাবেক ছাত্রলীগ, যুবলীগ, স্বেচ্ছাসেবক লীগ ও বর্তমান আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় নেতা। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ-সমর্থিত বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতারাও রয়েছেন এই দলে।

এসব নেতা নির্বাচন সামনে রেখে অনেক দিন আগে থেকে এলাকায় যাওয়া-আসা করছেন। ঈদের ছুটিকে কেন্দ্র করে তাদের জনসংযোগ ছিলো চোখে পড়ার মত। রাজধানী বা অন্যান্য শহরে বসবাসরত এসব নেতা একটু সময়-সুযোগ পেলেই ছুটে যাচ্ছেন নির্বাচনী এলাকায়। তারা দলীয় নেতাকর্মীদের পাশাপাশি নিয়মিত এলাকার মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করছেন। রাজনৈতিক কর্মসূচির পাশাপাশি যোগ দিচ্ছেন সামাজিক অনুষ্ঠানে।

ক্ষমতাসীন দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী এই নেতাদের অনেকে এলাকায় ইতিমধ্যে বেশ আলোচিত হয়ে উঠেছেন। মনোনয়নের দৌড়ে পুরনো প্রার্থীদের সামনে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে দাঁড়িয়েছেন তারা। তাদের মধ্যে দলের কেন্দ্রীয় কমিটির গুরুত্বপূর্ণ নেতা যেমন রয়েছেন তেমনি আছেন ছাত্রলীগ কিংবা অঙ্গসংগঠনের নেতাও।

মনোনয়নপ্রত্যাশী এসব আলোচিত নেতাদের মধ্যে রয়েছেন দলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল (নেত্রকোনা-৩), আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক আফজাল হোসেন, সচিব আব্দুল মালেক(পটুয়াখালী-১), সাংগঠনিক সম্পাদক এনামুল হক শামীম (শরীয়তপুর-২), কৃষি ও সমবায়বিষয়ক সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী (লক্ষ্মীপুর-৪) ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী (চাঁদপুর-৩), উপ-প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন (চট্টগ্রাম-১৫), কেন্দ্রীয় সদস্য অ্যাডভোকেট এ বি এম রিয়াজুল কবীর কাউসার (নরসিংদী-৫), নেত্রকোনা থেকে আাওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন, সিলেট থেকে মিসবাহউদ্দিন সিরাজ।

ফরিদপুর-১ আসনে রীতিমতো জাগরণ তৈরি করেছেন সাবেক ছাত্রনেতা এবং সাংবাদিক আরিফুর রহমান দোলন। পিরোজপুর-১ আসনে আলোচিত হয়ে উঠেছেন স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা ও সাবেক ছাত্রলীগ নেতা সাজ্জাদ সাকিব বাদশা।

কুমিল্লা-৯ আসনে তরুণ প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন লাভে চমক দেখাতে চান সাবেক ছাত্রলীগ নেতা দেলোয়ার হোসেন ফারুক। তিনি বলেন, আওয়ামীলীগে তরুণ নেতৃত্ব এখন সময়ের দাবি। দল আমাকে যোগ্য মনে করলে আমি কুমিল্লা-৯ (লাকসাম-মনোহরগঞ্জ) আসনে নির্বাচন করবো। অন্যথায় দল অন্য কাউকে মনোনয়ন দিলে আমি দলীয় সিদ্ধান্তের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন করে দলীয় প্রার্থীর পক্ষে কাজ করে যাব।

আলোচিত অন্যদের মধ্যে রয়েছেন কেন্দ্রীয় সদস্য মারুফা আক্তার পপি (জামালপুর), নুরুল ইসলাম ঠান্ডু, হাসান আলী (সিরাজগঞ্জ-১), হাবিবুর রহমান স্বপন, চয়ন ইসলাম (সিরাজগঞ্জ-৫) ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন (গাইবান্ধা-৫), ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি বদিউজ্জামান সোহাগ (বাগেরহাট-৪), নারায়ণগঞ্জ-৩ আসনে সাবেক ছাত্রলীগ নেতা এ এইচ এম মাসুদ দুলাল, কোহেলি কুদ্দুস মুক্তি (নাটোর-৪)।

আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক প্রয়াত আব্দুল জলিলের ছেলে নিজাম উদ্দিন জন নওগাঁয়-৫ আসনে নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছেন। নড়াইল-১ আসন কিংবা ব্রাহ্মণবাড়িয়া থেকে নারী সংসদ সদস্য ফজিলাতুন্নেসা বাপ্পী, সাইফুজ্জামান শিখর (মাগুরা-১), শাহে আলম (বরিশাল-২), মনিরুজ্জামান মনির (ঝালকাঠি-১), শফি আহমেদ (নেত্রকোনা-৪), অজয় কর খোকন কিশোরগঞ্জ-৫ আসনে আসনে আলোচিত মনোনয়নপ্রত্যাশী।

ঢাকার আসনগুলোতে নতুনদের মধ্যে আলোচিত মনোনয়নপ্রত্যাশীরা হলেন পনিরুজ্জামান তরুণ (ঢাকা-১), ড. আওলাদ হোসেন (ঢাকা-৪), স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট মোল্লা মো. আবু কাউসার, যুবলীগের ইসমাঈল চৌধুরী সম্রাট (ঢাকা-৮), সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য সাবিনা আক্তার তুহিন (ঢাকা-১৪), , স্বেচ্ছাসেবক লীগের গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু (ঢাকা-১৫)।

ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের যেকোনো একটি আসন থেকে মনোনয়ন চাইবেন ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহে আলম মুরাদ। আর ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান মনোনয়নপ্রত্যাশী ঢাকা-১৩ আসনে।

এ ছাড়া আলোচনায় আছেন শেখ সোহেল রানা টিপু (রাজবাড়ী-১), নারী সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট নূরজাহান বেগম মুক্তা (চাঁদপুর-৫), মাইনুদ্দিন হাসান চৌধুরী (চট্টগ্রাম-১৪), জহিরউদ্দীন মাহমুদ লিপটন (ফেনী-৩)। সাবেক ছাত্রনেতা ও মঠবাড়িয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আশরাফুর রহমান (পিরোজপুর-৩), নারী সংসদ সদস্য সেলিনা আক্তার লিটা, এমদাদুল হক (ঠাকুরগাঁও-৩), জামালপুরের ইসলামপুর থেকে নারী সংসদ সদস্য মাহজাবিন খালেদ, বিশ্বনাথ সরকার বিটু (রংপুর-২), সাফিয়া রহমান (রংপুর-৩), রাশেক রহমান, জাকির হোসেন সরকার (রংপুর-৫), কামাল আহমেদ তালুকদার, অ্যাডভোকেট মমতাজ (নীলফামারী-২) মাজহারুল হক প্রধান, আনোয়ার সাদাত সম্রাট (পঞ্চগড়-১), আব্দুল মালেক চিশতি (পঞ্চগড়-২)।

 

মনোনয়নপ্রত্যাশী নেতারা সবাই নিজের যোগ্যতা ও বিজয়ের ব্যাপারে আস্থাশীল। তারা বলছেন, এলাকার মানুষের সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগের কারণে তাদের একটা গ্রহণযোগ্যতা তৈরি হয়েছে। নির্বাচনে দলের প্রার্থী হিসেবে মনোনয়ন পেলে তারা নিজের আসনটি দলীয় সভাপতিকে উপহার দিতে পারবেন।

নিজের মনোনয়নের প্রত্যাশার কথা বলতে গিয়ে আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল বলেন, ‘আমরা রাজনীতি করি জনগণের কল্যাণের জন্য। সংসদ সদস্য নির্বাচিত হলে সেই কল্যাণের ক্ষেত্র অনেক বৃদ্ধি পায়। আর সংসদীয় রাজনীতিতে একজন রাজনীতিবিদের পরিপূর্ণতা আসে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার মধ্য দিয়ে। আমি সেই লক্ষ্যে এলাকার উন্নয়নে কাজ করছি। দলের কাছে মনোনয়নপ্রত্যাশী। আশা করি দল আমাকে মূল্যায়ন করবে।’

মনোনয়নের জন্য দলের সভাপতি শেখ হাসিনার প্রতি আস্থা রাখছেন ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান। তিনি ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরেই জনগণের সঙ্গে কাজ করছি। নেত্রী আমাকে মহানগরে বড় দায়িত্ব দিয়েছেন। এখন যদি তিনি আমাকে সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন দেন, আশা করি আমি তার প্রত্যাশা পূরণ করতে পারব। তবে সবকিছুই নেত্রীর ওপর নির্ভর করবে।’

তৃণমূলে গ্রহণযোগ্য, সৎ, পরীক্ষিতদের আগামী নির্বাচনে মনোনয়ন দেয়া হবে- দলীয় প্রধানের এই বক্তব্য উল্লেখ করে স্বেচ্ছাসেবক লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক গাজী মেজবাউল হোসেন সাচ্চু বলেন, ‘ আমি বলতে পারি ৩২ বছরের রাজনৈতিক অভিজ্ঞতা রয়েছে আমার। দীর্ঘদিন রাজনীতি করার কারণে এলাকার মানুষের সঙ্গে আমার একটা সম্পর্ক রয়েছে। আমি একজন মনোনয়নপ্রত্যাশী।’

ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মাহমুদ হাসান রিপন বলেন, ‘আমি এলাকার উন্নয়নের কাজ করছি। নেতা-কর্মীদের সঙ্গে সমন্বয় ভালো আমার। যদি নেত্রী আমাকে মনোনয়ন দেন তাহলে আসনটি আমি তাকে উপহার দিতে পারব বলে আশা করছি।’

নির্বাচনে অংশ নেয়ার প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের উপপ্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, ‘এলাকার জনগণের সুখে-দুঃখে পাশে থাকতে চাই সব সময়ই। দলের হয়েই জনগণের পাশে থাকার চেষ্টা করি। দলীয় সভাপতি শেখ হাসিনা মনোনয়ন দিলে নির্বাচনে অংশ নেব।’

আগামী নির্বাচনে নবীন-প্রবীণের সমন্বয়ে প্রার্থী বাছাই করা হবে বলে জানান দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও দলীয় সংসদীয় মনোনয়ন বোর্ডের সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ। তিনি বলেন, ‘নবীন ও প্রবীণের সমন্বয়ে সারা দেশে আমরা আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য প্রার্থী বাছাই করব।’

তিনি বলেন, ‘এলাকায় জনপ্রিয় নেতারাই এবার মনোনয়ন পাবেন। এ জন্য তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে মনোনয়নপ্রত্যাশীদের গ্রহণযোগ্যতাও থাকতে হবে। এর বাইরে বিভিন্ন রাজনৈতিক হিসাব-নিকাশ তো থাকবেই।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদ সাকিব বাদশাহ জানান, ‘স্থানীয় দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে আমি কাজ করছি। দলকে গুছিয়ে রেখে এলাকার মানুষের উন্নয়নে কাজ করছি। আগামী নির্বাচনে আমাদের নেত্রী আমার উপর আস্থা রাখবে বলেই আমি বিশ্বাস করি।’