খুলনা উপকূলে টানা বর্ষণ, জলাবদ্ধতা

বাঙালী কণ্ঠ ডেস্কঃ মৌসুমের টানা বর্ষণে কপালে নতুন করে দুশ্চিন্তার ভাজ পড়েছে খুলনা উপকুলবাসীর। ইয়াসের রেশ কাটতে না কাটতেই অতিবর্ষণে তলিয়ে গেছে মৎস্য ঘের, পুকুর, ঘর-বাড়ি।

খুলনা অঞ্চলে বৃহস্পতিবার (১৭ জুন) সকাল থেকে এক টানা বৃষ্টিপাত শুক্রবার (১৮ জুন) সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত অব্যহত রয়েছে। বৃষ্টিপাতে খুলনা মহানগরীর নিম্নাঞ্চলও প্লাবিত হয়েছে।

এদিকে, আষাঢ়ের শুরুতেই ভারীবৃষ্টিতে উপকূলীয় উপজেলা কয়রায় তলিয়ে গেছে গ্রামের পর গ্রাম। ডুবেছে মৎস্য ঘের, পুকুর, ঘর-বাড়িও। দুই-তিন দিনের টানা বৃষ্টিপাতে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে উপকূলবাসীর জনজীবন। পানিবদ্ধতায় স্থবির হয়ে পড়েছে জীবনযাত্রা। নেমে এসেছে দুর্ভোগ। বৃষ্টিতে উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে, বীজতলা, ফসলের মাঠ, পুকুর, রাস্তাঘাট ও বাড়ির আঙিনা তলিয়ে গেছে।

এর আগে গত ২৬ মে ঘূর্ণিঝড় ইয়াসের প্রভাবে বেড়িবাঁধ ভেঙে উপজেলার ৪টি ইউনিয়ন প্লাবিত হয়। এতে পানিবন্দি হয়ে পড়ে লক্ষাধিক মানুষ। স্থানীয়রা কোনোমতে বাঁধ মেরামত করে জোয়ারের পানি আটকে দিলেও এবার টানা বৃষ্টির খাল-বিল, পুকুর ও রাস্তাঘাট ডুবে গেছে। ভঙ্গুর বেড়িবাঁধ নিয়ে বন্যা আতঙ্কে পড়েছেন নদী পাড়ের মানুষেরা।

উপজেলার দক্ষিণ বেদকাশী ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য গাজী বেলাল হোসেন জানান, দুই-তিন দিনের বৃষ্টিতে গোলখালী, ঘড়িলাল, মাটিয়াভাঙ্গা ও ছোট আংটিহারা গ্রাম তলিয়ে গেছে। এসব লোকালয়ের পানির সঠিক নিষ্কাশন ব্যবস্থা না থাকায় বৃষ্টিতে তলিয়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে কতিপয় স্বার্থন্বেষী চিংড়ি ঘের মালিকরা রাতের আঁধারে বেড়িবাঁধে নাইনটি পাইপ দিয়ে ঘেরে লবণ পানি ঢোকাচ্ছে। এতে জনগণের ভোগান্তি আরও বাড়ছে। টানা বৃষ্টিতে খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষরা কাজে যেতে না পারায় পরিবার-পরিজন নিয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন। তাছাড়া যেকোনো মুহূর্তে ভেঙে যেতে পারে বেড়িবাঁধ। বিলীন হয়ে যেতে পারে বিস্তৃর্ণ এলাকা।

কয়রা উন্নয়ন সংগ্রাম সমন্বয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক ইমতিয়াজ উদ্দিন জানান, দুর্ভোগ পিছু ছাড়ছে না কয়রাবাসীর। কখনও নোনা পানির তোড়ে আবার কখনও অতি বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হচ্ছে। বর্তমানে কয়রা সদর ইউনিয়নে অতি বর্ষণের ফলে যে জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে তাতে চরম পর্যায়ে জনভোগান্তির তৈরি হয়েছে। পুরো ইউনিয়নের পানি নিষ্কাশন ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে। বিশাল এ এলাকার পানি নিষ্কাশন কিছু সংখ্যক স্লুইসগেট দিয়ে সম্ভব হচ্ছে না।

খুলনা আঞ্চলিক আবহাওয়া অধিদপ্তরের ইনচার্জ মো. আমিরুল আজাদ শুক্রবার সকালে রাইজিংবিডিকে জানান, বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুক্রবার সকাল ৯টা পর্যন্ত খুলনায় ৬৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে। এখন বর্ষাকাল থাকায় আরও দু’দিন অবিরাম বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে, কোনো সিগনাল এই মুহূর্তে নেই।

Print Friendly, PDF & Email

এই ক্যাটাগরীর আরো খবর