ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৫ জুলাই ২০২৪, ১০ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

গানে গানে ফুল ও পাখি

পুষ্পে পুষ্পে ভরা শাখী, কুঞ্জে কুঞ্জে গাহে পাখি, গুঞ্জরিয়া আসে অলি কুঞ্জে কুঞ্জে ধেয়ে তারা ফুলের ওপর ঘুমিয়ে পড়ে ফুলের মধু খেয়ে।’ দ্বিজেন্দ্র লাল রায়ের কবিতার এ চরণগুলো মনে হলে কার না ইচ্ছে হয় ফুলের বাগান করার। কিন্তু ঢাকা মহানগরীতে কী আর এখন ফুলের বাগান করা সম্ভব। জায়গার যে বড়ই অভাব। হয়তো তখন অনেকের স্মৃতিতে ভেসে ওঠবে শৈশবের কথা। মফস্বল শহর ১০ থেকে ১৫ কাঠা জায়গার মাঝখানে একতলা টিনের ঘর নয়তো একতলা দালান। এরই সম্মুখে ফুলের বাগান। এমনি জায়গা থাকলে আপনিও করতে পারেন ফুলের বাগান, শুধু তাই না বাড়ির ছাদেও করা যাবে নানান রকমের ফুলের চাষ। জুঁই, চামেলী, রজনীগন্ধা, গোলাপ, কামিনী, জবা, বেলী, কেতকী কত না ফুলের গাছ। যিনি একটু সৌখিন তিনি এখনো মফস্বল শহরে বাড়ির সামনে নয়তো নগরীতে নিজ বাসার সামনে অথবা ছাদে টবে দু’চারটি গোলাপ, ২টি কামিনী, ১টি বেলী, ১ টি রজনীগন্ধা কিংবা অন্যান্য পছন্দের ফুলের গাছ লাগান।

গোলাপ যেখানে রয়েছে সেখানে দাঁড়ালে মনে পড়বে-“মোর গান ফাগুণ খেলায় গোলাপের বুকে বুকে গন্ধ এলায়/উদাসীর বাঁশী আমি গোধূলী ছায়ে, নিশি- গন্ধারে কিছু যাই জানায়ে…..” কানন দেবীর গাওয়া গানের এই কথা গুলি। পছন্দের প্রিয় শেফালী গাছটি লাগাতেও যেন ভুলে না যান। বর্ষায় কিংবা শরতের প্রভাতে উঠে হয়তো মনে পড়বেই ‘শেফালির বক্ষ ভরি প্রীতির সুবাসে øিগ্ধতা ভরিয়া ঘাসে ঘাসে…।’ শৈশবে শেফালি ফুলের মালা গাঁথা হয়তো এখন অনেকের স্মৃতি। শেফালির কথা মনে হলে তিনি একটি বারের জন্য হলেও ভাবেন- ‘তোমারি তরুর তলে কুড়ায়েছি ফুল, তোমারি ফুলে গাঁথিয়াছি মালা….।’ আর যেখানে আছে রজনীগন্ধা সেখানে দাঁড়ালে মনে পড়বে শচীন দেব বর্মনের গাওয়া-“ প্রিয় রজনী গন্ধা বনে বলেছিলে তুমি ফাগুণ এলে দেখা হবে তব সনে/ ফাগুণ এলো লয়ে সাথে তার ফুলের স্বপন তরু লতিকার কানন বাসরে গুঞ্জরে অলী উৎসব শুভক্ষন… ফুলের জীবনে সফল হয়েছে ফাগুণে চেয়ে পাওয়া…” গানের এই কথা গুলি। শখ করে ফুলের বাগান করার কথাও আজকাল অনেকে ভুলে গেছেন। তবুও ফুলের বাগান কেউ কেউ করেন। ফুলের যতœ করতে গিয়ে হয়তো তখন কবিদের ফুলপ্রীতির কথা হৃদয়ে জেগে উঠলেও উঠতে পারে। কায়কোবাদ লিখেছেন- ‘অই নদী মনোহরা গোলাপের গন্ধে ভরা’, ‘পুষ্পিত সে কুঞ্জবন ফুলে ফুলে ফুটেছে, দোলে নবীন পাতা’। কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছিলেন- ‘ঝরিছে শিশির- সিক্ত শেফালি নিশি ভোরে অনুপমা’ আরও কত কী।

বেলী, হাসনাহেনা, শেফালি- এই তিন ফুলের তুলনা হয় না। এ ফুলের গন্ধ খুবই মিষ্টি। বাসার সামনে অনেকেই এসব ফুলের গাছ লাগান। যখন গাছে ফুল বড় হয়ে ওঠে তখন বাসা বাড়ির সৌন্দর্যও বাড়ায়। বেলী ফুল তিন জাতের হয়ে থাবে। রাই বেলী জাতের ফুল সব থেকে ছোট হয়। তবে এর গন্ধ সব থেকে উগ্র। মাতিয়া বেলীর গন্ধ মাঝামাঝি। এর পাপড়ি এলোমেলো ও খোঁচা খোঁচা। ভরিয়া বেলী গাছের আকার সবচেয়ে বড়। এর গন্ধ খুবই মিষ্টি মনে হবে। হাসনাহেনা ফুল বর্ষাকালে ফোটে। এর সুগন্ধ সর্বত্র মোহনীয় করে তোলে। হাসনাহেনার চারা মাটির টবেও লাগানো যায়। ছোট ছোট সবুজ পাতা আর সাদা রঙয়ের ছোট ফুল নিয়ে কামিনী গাছ। যখন ফুল ফোটে তখন এর সুমিষ্ট গন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। শোনা যায়, তখন নাকি বিশেষ করে রাতেরবেলা গাছের তলায় সাপ আশ্রয় নেয়।

আব্বাস উদ্দীন আহমদের গানেও ফুলের কথা রয়েছে, যেমন ‘ওই কালা ক্যাশে ফুলের মালা বুকেতে তোর আসে জ্বালা’,’ হলুদ বরণ পাখি, হলুদ আর সরিষার ফুলগো’,’ ফুলে যখন মধু ছিল ভ্রমর আসত দলে দলে’,’ খোঁপার উপর তুইলা দিল গন্ধরাজ চাঁপা’,’ তুমি হইও ফুলরে বন্ধু’,’ লাইলী কাঁদে ফুল বাগানে’- প্রভৃতি। আর শচীন দেব বর্মণ গেয়েছিলেন নিশীথে যাইয়ো ফুলে বনেরে ভ্রমরা’ আর ‘চিঠি’ র গানের স্মরণীয় শিল্পী জগন্ময় মিত্র গেয়েছিলেন ‘ যে মাধবী তলে দাঁড়িয়ে তুমি বলেছিলে ভালবাসি আজও সে লতায় ফুল ফোটে’ এ সব গান কী ভোলার। ফুলের বাগান মানে সেখানে উঁিক ঝুঁকি দিবেই কত না পাখি। পাখির কূজনে মুখরিত ফুল বাগানে বসে মনে পড়বেই ফুল আর পাখিকে নিয়ে রচিত গানের অমর কন্ঠ শিল্পীদের গাওয়া বহু গানের চরণ। গানের কথায় ফুল আর পাখি আছে এমনি হলো- অনিমা সেন গুপ্তার গাওয়া: “ আমি গোলাপের মত ফুটবো জানি পাপিয়া দূরে রয় আমি স্বপনের কথা বলিয়া স্বপনে ভাসিয়া যাই আমি চাঁপার কুঞ্জে কুহু আমি কেতকী বনের কেকা” কিংবা “ আমি দেখেছি নয়নও মেলে পাখির কূজন সুষমা জাগায়ে স্বপন মোহন এলে তব আঁখির নিবিড় নীলে মোর নীল নভ এ দিনে মলয়ার কাছে মৃদুল আভাসে…” গান দু’খানি।

আজ দেশে ফুল বাগানের বড় অভাব। একদা ফুল বাগানে বেড়ায়ে ফুলের সুবাস নিতো বাঙালিরা। যে জন্য আজ ফুলের বাগান গড়ে উঠতে পারে দেশের প্রতিটি শহরের নদী তীরবর্তী এলাকায়। থাকবে সেখানে বকুল, চামেলী, গোলাপ, পলাশ, শাপলা, শিউলি, কৃষ্ণচূড়া, শেফালীর ছড়াছড়ি। প্রেমিক যিনি তার তো ইচ্ছে জাগবে বকুল তলে বসে প্রিয়তমার হাতে হাত রেখে- “এই বকুলের বনের ছায়ায় জানি বন্ধু চিনবে দেখে/ মোর চিতারি চিহ্ন রেখায় এই মিনতি দিনের শেষে/চিতার পাশে নিতুই এসে বিরাম নিও, প্রণাম নিও ঝরা বকুল ও দুটি পায়….” এই গান গাইতে। কিংবা এওতো গাইতে ইচ্ছে হবে-“ সেই চম্পা বকুল তলে তোমারে দেখেছি/ বন পথ চলিতে চলিতে/ ঝরা ফুল মঞ্জুরি তুলিতে আঁচলে… শুধু বকুল কলি আর চাঁপার কলি/ তুমি মোর কাছে দিয়ে গিয়েছো চলি…”। আর কৃষ্ণচূড়ার ডালে পাখি দেখলে তো মনে পড়বেই- “ কৃষ্ণচূড়ার রঙ লেগেছে প্রান্তরে নীল পাখিরা কাজ ভুলে তাই গান করে…” গানের কথা গুলি। আহা কত গানে ফুল আর পাখি আছে যেমন-“ কাননে কূহু ডাকা ফাগুণ সমীরে ভেঙোনা ভেঙোনা প্রিয় এ মধুরাতি” ; “ আমার পলাশ ডাল মহুয়ার নেশায় মাতাল পাখির গানে দোল যে ঝরেছে বুনো হাঁসের পাখায় দু’জন কোথায় ভেসে যাই” ; “ কি ব্যথা দোলায় সমীরণে পাখিরা যে তাই আনমনে উদাসী হ’য়ে যায়” ; “ যে পাখি হারায় নীড় সুদূর আকাশে সে কী কভু আশে ফিরে শিউলি ঝরানো আজি সন্ধ্যার বাতাসে” প্রভৃতি।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

গানে গানে ফুল ও পাখি

আপডেট টাইম : ০৩:০৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১৯ এপ্রিল ২০১৬

পুষ্পে পুষ্পে ভরা শাখী, কুঞ্জে কুঞ্জে গাহে পাখি, গুঞ্জরিয়া আসে অলি কুঞ্জে কুঞ্জে ধেয়ে তারা ফুলের ওপর ঘুমিয়ে পড়ে ফুলের মধু খেয়ে।’ দ্বিজেন্দ্র লাল রায়ের কবিতার এ চরণগুলো মনে হলে কার না ইচ্ছে হয় ফুলের বাগান করার। কিন্তু ঢাকা মহানগরীতে কী আর এখন ফুলের বাগান করা সম্ভব। জায়গার যে বড়ই অভাব। হয়তো তখন অনেকের স্মৃতিতে ভেসে ওঠবে শৈশবের কথা। মফস্বল শহর ১০ থেকে ১৫ কাঠা জায়গার মাঝখানে একতলা টিনের ঘর নয়তো একতলা দালান। এরই সম্মুখে ফুলের বাগান। এমনি জায়গা থাকলে আপনিও করতে পারেন ফুলের বাগান, শুধু তাই না বাড়ির ছাদেও করা যাবে নানান রকমের ফুলের চাষ। জুঁই, চামেলী, রজনীগন্ধা, গোলাপ, কামিনী, জবা, বেলী, কেতকী কত না ফুলের গাছ। যিনি একটু সৌখিন তিনি এখনো মফস্বল শহরে বাড়ির সামনে নয়তো নগরীতে নিজ বাসার সামনে অথবা ছাদে টবে দু’চারটি গোলাপ, ২টি কামিনী, ১টি বেলী, ১ টি রজনীগন্ধা কিংবা অন্যান্য পছন্দের ফুলের গাছ লাগান।

গোলাপ যেখানে রয়েছে সেখানে দাঁড়ালে মনে পড়বে-“মোর গান ফাগুণ খেলায় গোলাপের বুকে বুকে গন্ধ এলায়/উদাসীর বাঁশী আমি গোধূলী ছায়ে, নিশি- গন্ধারে কিছু যাই জানায়ে…..” কানন দেবীর গাওয়া গানের এই কথা গুলি। পছন্দের প্রিয় শেফালী গাছটি লাগাতেও যেন ভুলে না যান। বর্ষায় কিংবা শরতের প্রভাতে উঠে হয়তো মনে পড়বেই ‘শেফালির বক্ষ ভরি প্রীতির সুবাসে øিগ্ধতা ভরিয়া ঘাসে ঘাসে…।’ শৈশবে শেফালি ফুলের মালা গাঁথা হয়তো এখন অনেকের স্মৃতি। শেফালির কথা মনে হলে তিনি একটি বারের জন্য হলেও ভাবেন- ‘তোমারি তরুর তলে কুড়ায়েছি ফুল, তোমারি ফুলে গাঁথিয়াছি মালা….।’ আর যেখানে আছে রজনীগন্ধা সেখানে দাঁড়ালে মনে পড়বে শচীন দেব বর্মনের গাওয়া-“ প্রিয় রজনী গন্ধা বনে বলেছিলে তুমি ফাগুণ এলে দেখা হবে তব সনে/ ফাগুণ এলো লয়ে সাথে তার ফুলের স্বপন তরু লতিকার কানন বাসরে গুঞ্জরে অলী উৎসব শুভক্ষন… ফুলের জীবনে সফল হয়েছে ফাগুণে চেয়ে পাওয়া…” গানের এই কথা গুলি। শখ করে ফুলের বাগান করার কথাও আজকাল অনেকে ভুলে গেছেন। তবুও ফুলের বাগান কেউ কেউ করেন। ফুলের যতœ করতে গিয়ে হয়তো তখন কবিদের ফুলপ্রীতির কথা হৃদয়ে জেগে উঠলেও উঠতে পারে। কায়কোবাদ লিখেছেন- ‘অই নদী মনোহরা গোলাপের গন্ধে ভরা’, ‘পুষ্পিত সে কুঞ্জবন ফুলে ফুলে ফুটেছে, দোলে নবীন পাতা’। কাজী নজরুল ইসলাম লিখেছিলেন- ‘ঝরিছে শিশির- সিক্ত শেফালি নিশি ভোরে অনুপমা’ আরও কত কী।

বেলী, হাসনাহেনা, শেফালি- এই তিন ফুলের তুলনা হয় না। এ ফুলের গন্ধ খুবই মিষ্টি। বাসার সামনে অনেকেই এসব ফুলের গাছ লাগান। যখন গাছে ফুল বড় হয়ে ওঠে তখন বাসা বাড়ির সৌন্দর্যও বাড়ায়। বেলী ফুল তিন জাতের হয়ে থাবে। রাই বেলী জাতের ফুল সব থেকে ছোট হয়। তবে এর গন্ধ সব থেকে উগ্র। মাতিয়া বেলীর গন্ধ মাঝামাঝি। এর পাপড়ি এলোমেলো ও খোঁচা খোঁচা। ভরিয়া বেলী গাছের আকার সবচেয়ে বড়। এর গন্ধ খুবই মিষ্টি মনে হবে। হাসনাহেনা ফুল বর্ষাকালে ফোটে। এর সুগন্ধ সর্বত্র মোহনীয় করে তোলে। হাসনাহেনার চারা মাটির টবেও লাগানো যায়। ছোট ছোট সবুজ পাতা আর সাদা রঙয়ের ছোট ফুল নিয়ে কামিনী গাছ। যখন ফুল ফোটে তখন এর সুমিষ্ট গন্ধ চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে। শোনা যায়, তখন নাকি বিশেষ করে রাতেরবেলা গাছের তলায় সাপ আশ্রয় নেয়।

আব্বাস উদ্দীন আহমদের গানেও ফুলের কথা রয়েছে, যেমন ‘ওই কালা ক্যাশে ফুলের মালা বুকেতে তোর আসে জ্বালা’,’ হলুদ বরণ পাখি, হলুদ আর সরিষার ফুলগো’,’ ফুলে যখন মধু ছিল ভ্রমর আসত দলে দলে’,’ খোঁপার উপর তুইলা দিল গন্ধরাজ চাঁপা’,’ তুমি হইও ফুলরে বন্ধু’,’ লাইলী কাঁদে ফুল বাগানে’- প্রভৃতি। আর শচীন দেব বর্মণ গেয়েছিলেন নিশীথে যাইয়ো ফুলে বনেরে ভ্রমরা’ আর ‘চিঠি’ র গানের স্মরণীয় শিল্পী জগন্ময় মিত্র গেয়েছিলেন ‘ যে মাধবী তলে দাঁড়িয়ে তুমি বলেছিলে ভালবাসি আজও সে লতায় ফুল ফোটে’ এ সব গান কী ভোলার। ফুলের বাগান মানে সেখানে উঁিক ঝুঁকি দিবেই কত না পাখি। পাখির কূজনে মুখরিত ফুল বাগানে বসে মনে পড়বেই ফুল আর পাখিকে নিয়ে রচিত গানের অমর কন্ঠ শিল্পীদের গাওয়া বহু গানের চরণ। গানের কথায় ফুল আর পাখি আছে এমনি হলো- অনিমা সেন গুপ্তার গাওয়া: “ আমি গোলাপের মত ফুটবো জানি পাপিয়া দূরে রয় আমি স্বপনের কথা বলিয়া স্বপনে ভাসিয়া যাই আমি চাঁপার কুঞ্জে কুহু আমি কেতকী বনের কেকা” কিংবা “ আমি দেখেছি নয়নও মেলে পাখির কূজন সুষমা জাগায়ে স্বপন মোহন এলে তব আঁখির নিবিড় নীলে মোর নীল নভ এ দিনে মলয়ার কাছে মৃদুল আভাসে…” গান দু’খানি।

আজ দেশে ফুল বাগানের বড় অভাব। একদা ফুল বাগানে বেড়ায়ে ফুলের সুবাস নিতো বাঙালিরা। যে জন্য আজ ফুলের বাগান গড়ে উঠতে পারে দেশের প্রতিটি শহরের নদী তীরবর্তী এলাকায়। থাকবে সেখানে বকুল, চামেলী, গোলাপ, পলাশ, শাপলা, শিউলি, কৃষ্ণচূড়া, শেফালীর ছড়াছড়ি। প্রেমিক যিনি তার তো ইচ্ছে জাগবে বকুল তলে বসে প্রিয়তমার হাতে হাত রেখে- “এই বকুলের বনের ছায়ায় জানি বন্ধু চিনবে দেখে/ মোর চিতারি চিহ্ন রেখায় এই মিনতি দিনের শেষে/চিতার পাশে নিতুই এসে বিরাম নিও, প্রণাম নিও ঝরা বকুল ও দুটি পায়….” এই গান গাইতে। কিংবা এওতো গাইতে ইচ্ছে হবে-“ সেই চম্পা বকুল তলে তোমারে দেখেছি/ বন পথ চলিতে চলিতে/ ঝরা ফুল মঞ্জুরি তুলিতে আঁচলে… শুধু বকুল কলি আর চাঁপার কলি/ তুমি মোর কাছে দিয়ে গিয়েছো চলি…”। আর কৃষ্ণচূড়ার ডালে পাখি দেখলে তো মনে পড়বেই- “ কৃষ্ণচূড়ার রঙ লেগেছে প্রান্তরে নীল পাখিরা কাজ ভুলে তাই গান করে…” গানের কথা গুলি। আহা কত গানে ফুল আর পাখি আছে যেমন-“ কাননে কূহু ডাকা ফাগুণ সমীরে ভেঙোনা ভেঙোনা প্রিয় এ মধুরাতি” ; “ আমার পলাশ ডাল মহুয়ার নেশায় মাতাল পাখির গানে দোল যে ঝরেছে বুনো হাঁসের পাখায় দু’জন কোথায় ভেসে যাই” ; “ কি ব্যথা দোলায় সমীরণে পাখিরা যে তাই আনমনে উদাসী হ’য়ে যায়” ; “ যে পাখি হারায় নীড় সুদূর আকাশে সে কী কভু আশে ফিরে শিউলি ঝরানো আজি সন্ধ্যার বাতাসে” প্রভৃতি।