ঢাকা , শুক্রবার, ২৬ জুলাই ২০২৪, ১১ শ্রাবণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

রাসুল (সা.) কি রসিকতা করা পছন্দ করতেন

মানবজীবনে আনন্দের অংশ হিসেবে বিনোদন, গল্প, চুটকি, কৌতুক, রসিকতা অনস্বীকার্য। কমবেশি প্রত্যেকেই রসগল্প করে থাকেন। তাই রসগল্পে শুধুমাত্র আত্মীয়-স্বজনের জন্য নয়, তা হতে পারে সবার সঙ্গে। ইসলামেও রসগল্প, কথ্যবিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে, তবে তা হতে হবে অবশ্যই সীমার মধ্যে। খেয়াল রাখতে হবে যেন পাপ বা বিশৃঙ্খলার কোনো সম্ভাবনা না থাকে।

ছোট-বড় সবার মধ্যেই রসিকতা হতে পারে। সেক্ষেত্রে, ছোটদের রসিকতা যেন বড়দের সঙ্গে আদবের গণ্ডি অতিক্রম না করে। আর বড়দের রসিকতায় যেন ছোটদের প্রতি আদর-স্নেহের আবহ থাকে। উদাহরণ স্বরূপ জনৈক সাহাবির ঘটনা উল্লেখ করা যায়। একদিন রাসুল


(সা.) তাঁবুর ভেতর অবস্থানকালে জনৈক সাহাবি এসে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চাইলেন। রাসুল (সা.) তাকে ভেতরে প্রবেশ করতে বললেন, কিন্তু তাঁবুটি ছিল বেশ ছোট। যে কারণে সাহাবি রসিকতা করে বললেন, ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার পুরো শরীরটাই প্রবেশ করাব, না আংশিক?’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘পুরোটাই।’ (আবু দাউদ)

হজরত আনাস (রা.) হতে বর্ণিত, একবার এক ব্যক্তি এসে রাসুল (সা.) এর কাছে একটা বাহনজন্তু চাইলেন। রাসুল (সা.) বললেন, ‘হ্যাঁ, আমরা তোমাকে একটা উটনীর বাচ্চা দেব।’ লোকটি বলল,‘ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি উটনীর বাচ্চা দিয়ে কী করব?’ রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘আরে উটেরা সব উটনীদেরই বাচ্চা নয় কি?’ (আবু দাউদ, তিরমিজি)

আমাদের রসিকতা অনেক সময় এতোটা লাগামহীন হয় যে হাসতে হাসতে কখনো মিথ্যা কথা বলি, কিংবা কাউকে আহত করি। এসবই কবিরা গুনাহ বা মহাপাপ। এ প্রসঙ্গে রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমার ভাইয়ের সঙ্গে বাক-বিতণ্ডা করো না এবং তার সঙ্গে পরিহাস করো না।’ অনেকে আবার শরীরে আঘাত করেও রসিকতা করেন। এমনটি রসিকতার নামে জুলুম। অহেতুক অন্যকে বিরক্ত করাও রসিকতা হতে পারে না। এমনটি করা কোনো সুস্থ মানসিকতার লক্ষণ নয়। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে খোসগল্প, রসিকতায় মিথ্যা ও অনৈসলামিক বিষয়াদি পরিহার করার তাওফিক দান করুন। আমিন।-প্রিয়.কম
লেখক : ফয়জুল আল আমীন

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

রাসুল (সা.) কি রসিকতা করা পছন্দ করতেন

আপডেট টাইম : ০৩:২৪ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৬ এপ্রিল ২০১৬

মানবজীবনে আনন্দের অংশ হিসেবে বিনোদন, গল্প, চুটকি, কৌতুক, রসিকতা অনস্বীকার্য। কমবেশি প্রত্যেকেই রসগল্প করে থাকেন। তাই রসগল্পে শুধুমাত্র আত্মীয়-স্বজনের জন্য নয়, তা হতে পারে সবার সঙ্গে। ইসলামেও রসগল্প, কথ্যবিনোদনের ব্যবস্থা রয়েছে, তবে তা হতে হবে অবশ্যই সীমার মধ্যে। খেয়াল রাখতে হবে যেন পাপ বা বিশৃঙ্খলার কোনো সম্ভাবনা না থাকে।

ছোট-বড় সবার মধ্যেই রসিকতা হতে পারে। সেক্ষেত্রে, ছোটদের রসিকতা যেন বড়দের সঙ্গে আদবের গণ্ডি অতিক্রম না করে। আর বড়দের রসিকতায় যেন ছোটদের প্রতি আদর-স্নেহের আবহ থাকে। উদাহরণ স্বরূপ জনৈক সাহাবির ঘটনা উল্লেখ করা যায়। একদিন রাসুল


(সা.) তাঁবুর ভেতর অবস্থানকালে জনৈক সাহাবি এসে তাঁর সঙ্গে দেখা করতে চাইলেন। রাসুল (সা.) তাকে ভেতরে প্রবেশ করতে বললেন, কিন্তু তাঁবুটি ছিল বেশ ছোট। যে কারণে সাহাবি রসিকতা করে বললেন, ‘ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমার পুরো শরীরটাই প্রবেশ করাব, না আংশিক?’ রাসুল (সা.) বললেন, ‘পুরোটাই।’ (আবু দাউদ)

হজরত আনাস (রা.) হতে বর্ণিত, একবার এক ব্যক্তি এসে রাসুল (সা.) এর কাছে একটা বাহনজন্তু চাইলেন। রাসুল (সা.) বললেন, ‘হ্যাঁ, আমরা তোমাকে একটা উটনীর বাচ্চা দেব।’ লোকটি বলল,‘ইয়া রাসুলাল্লাহ! আমি উটনীর বাচ্চা দিয়ে কী করব?’ রাসুলুল্লাহ (সা.) বললেন, ‘আরে উটেরা সব উটনীদেরই বাচ্চা নয় কি?’ (আবু দাউদ, তিরমিজি)

আমাদের রসিকতা অনেক সময় এতোটা লাগামহীন হয় যে হাসতে হাসতে কখনো মিথ্যা কথা বলি, কিংবা কাউকে আহত করি। এসবই কবিরা গুনাহ বা মহাপাপ। এ প্রসঙ্গে রাসুল (সা.) বলেন, ‘তোমার ভাইয়ের সঙ্গে বাক-বিতণ্ডা করো না এবং তার সঙ্গে পরিহাস করো না।’ অনেকে আবার শরীরে আঘাত করেও রসিকতা করেন। এমনটি রসিকতার নামে জুলুম। অহেতুক অন্যকে বিরক্ত করাও রসিকতা হতে পারে না। এমনটি করা কোনো সুস্থ মানসিকতার লক্ষণ নয়। আল্লাহ তাআলা আমাদেরকে খোসগল্প, রসিকতায় মিথ্যা ও অনৈসলামিক বিষয়াদি পরিহার করার তাওফিক দান করুন। আমিন।-প্রিয়.কম
লেখক : ফয়জুল আল আমীন