ঢাকা , শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

প্রধানমন্ত্রীর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির বাণী

রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৩৫তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন।

“আজ ১৭ মে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৩৫তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। এ উপলক্ষে আমি গণতন্ত্রের মানসকন্যা শেখ হাসিনাকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।

বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি এবং গণতন্ত্র বিকাশে বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনার অবদান অপরিসীম। তাঁর দূরদৃষ্টি, বলিষ্ঠ নেতৃত্ব এবং জনকল্যাণমুখী কার্যক্রমে দেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও তিনি দেশকে ধাপে ধাপে সমৃদ্ধির সোপানে নিয়ে যাচ্ছেন তাঁর সুদূর প্রসারী পরিকল্পনার মাধ্যমে। কিন্তু তাঁর চলার পথ মসৃণ ছিল না। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা বিরোধী ঘাতকচক্রের হাতে সপরিবারে নির্মমভাবে নিহত হন। এ সময় তাঁর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা তৎকালীন পশ্চিম জার্মানীতে অবস্থান করায় তাঁরা প্রাণে বেঁচে যান।

পরবর্তীতে ৬ বছর লন্ডন ও দিল্লীতে তাঁদের চরম প্রতিকূল পরিবেশে নির্বাসিত জীবন কাটাতে হয়। গণতন্ত্রের মানসকন্যা শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালের ১৭ মে বাংলার মাটিতে ফিরে আসেন। বাংলাদেশের গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রায় এটা ছিল এক মাইলফলক। এর ফলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, স্বাধীনতার মূল্যবোধ ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়।

১৯৮১ সালে ১৪-১৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতে সর্বসম্মতিক্রমে তাঁকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। এ ছিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তৎকালীন নেতৃবৃন্দের এক দূরদর্শী সিদ্ধান্ত। ১৯৮১ সালের ১৭ মে ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে ১৯৭২ সালে ১০ই জানুয়ারি তাঁর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মতো তাঁকেও স্বাগত জানাতে লাখো মানুষের ঢল নামে। সেদিন তাঁদের অকৃত্রিম ভালবাসায় তিনি সিক্ত হন, আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। মাতৃভূমির কল্যাণে যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে তিনি শপথ নেন।

শেখ হাসিনা দেশে ফিরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন শুরু করেন এবং এরই ধারাবাহিকতায় ৯০’র গণআন্দোলনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের বিজয় হয়। ১৯৯৬ সালের ১২ জুন সাধারণ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জয়লাভ করে এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করে।

এ সময় পাহাড়ি-বাঙালি দীর্ঘমেয়াদি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বন্ধে পাবর্ত্য শান্তিচুক্তি এবং প্রতিবেশী ভারতের সাথে গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তাঁর নেতৃত্বে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচনে ১৪ দলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসে এবং জনকল্যাণে নানামুখী কর্মসূচি গ্রহণ করে। গণতন্ত্র, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, নারীর ক্ষমতায়ন, বিদ্যুৎ, তথ্যপ্রযুক্তি, গ্রামীণ অবকাঠামো, বৈদেশিক কর্মসংস্থানসহ নানা কর্মসূচি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বলতর করে।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি সাধারণ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জোট সরকার পুনরায় ক্ষমতায় এসে সরকার পরিচালনা করছে। জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। নিজস্ব অর্থায়নে দেশের বৃহত্তম প্রকল্প পদ্মা সেতু নির্মিত হচ্ছে। সমুদ্রে বাংলাদেশের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা, ভারতের সাথে দীর্ঘদিনের অমিমাংসিত স্থল সীমানা নির্ধারণ তথা ছিটমহল বিনিময় চুক্তিসহ গণমানুষের কল্যাণে তাঁর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

দেশকে একটি সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলায় পরিণত করতে তিনি ‘ভিশন ২০২১’ ও ‘ভিশন ২০৪১’ কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণে শেখ হাসিনার এসব যুগান্তকারী কর্মসূচি বাংলার ইতিহাসে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

আমি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে সরকারের অব্যাহত সাফল্যসহ তাঁর নিজের ও পরিবারের সকল সদস্যের সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু, সুখ-সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করছি।

খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক”

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

প্রধানমন্ত্রীর স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতির বাণী

আপডেট টাইম : ০৪:৩৯ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৬ মে ২০১৬

রাষ্ট্রপতি মোঃ আবদুল হামিদ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৩৫তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস উপলক্ষে নিম্নোক্ত বাণী প্রদান করেছেন।

“আজ ১৭ মে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৩৫তম স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবস। এ উপলক্ষে আমি গণতন্ত্রের মানসকন্যা শেখ হাসিনাকে আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই।

বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি এবং গণতন্ত্র বিকাশে বঙ্গবন্ধু তনয়া শেখ হাসিনার অবদান অপরিসীম। তাঁর দূরদৃষ্টি, বলিষ্ঠ নেতৃত্ব এবং জনকল্যাণমুখী কার্যক্রমে দেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। নানা প্রতিকূলতা সত্ত্বেও তিনি দেশকে ধাপে ধাপে সমৃদ্ধির সোপানে নিয়ে যাচ্ছেন তাঁর সুদূর প্রসারী পরিকল্পনার মাধ্যমে। কিন্তু তাঁর চলার পথ মসৃণ ছিল না। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীনতা বিরোধী ঘাতকচক্রের হাতে সপরিবারে নির্মমভাবে নিহত হন। এ সময় তাঁর দুই কন্যা শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানা তৎকালীন পশ্চিম জার্মানীতে অবস্থান করায় তাঁরা প্রাণে বেঁচে যান।

পরবর্তীতে ৬ বছর লন্ডন ও দিল্লীতে তাঁদের চরম প্রতিকূল পরিবেশে নির্বাসিত জীবন কাটাতে হয়। গণতন্ত্রের মানসকন্যা শেখ হাসিনা ১৯৮১ সালের ১৭ মে বাংলার মাটিতে ফিরে আসেন। বাংলাদেশের গণতন্ত্রের অগ্রযাত্রায় এটা ছিল এক মাইলফলক। এর ফলে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, স্বাধীনতার মূল্যবোধ ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার পথ সুগম হয়।

১৯৮১ সালে ১৪-১৬ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় কাউন্সিল অধিবেশনে শেখ হাসিনার অনুপস্থিতে সর্বসম্মতিক্রমে তাঁকে আওয়ামী লীগের সভাপতি নির্বাচিত করা হয়। এ ছিল বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের তৎকালীন নেতৃবৃন্দের এক দূরদর্শী সিদ্ধান্ত। ১৯৮১ সালের ১৭ মে ঢাকা আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে ১৯৭২ সালে ১০ই জানুয়ারি তাঁর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বদেশ প্রত্যাবর্তনের মতো তাঁকেও স্বাগত জানাতে লাখো মানুষের ঢল নামে। সেদিন তাঁদের অকৃত্রিম ভালবাসায় তিনি সিক্ত হন, আবেগে আপ্লুত হয়ে পড়েন। মাতৃভূমির কল্যাণে যে কোনো ত্যাগ স্বীকারে তিনি শপথ নেন।

শেখ হাসিনা দেশে ফিরে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলন শুরু করেন এবং এরই ধারাবাহিকতায় ৯০’র গণআন্দোলনের মাধ্যমে গণতন্ত্রের বিজয় হয়। ১৯৯৬ সালের ১২ জুন সাধারণ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বিপুল ভোটে জয়লাভ করে এবং শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সরকার গঠন করে।

এ সময় পাহাড়ি-বাঙালি দীর্ঘমেয়াদি রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ বন্ধে পাবর্ত্য শান্তিচুক্তি এবং প্রতিবেশী ভারতের সাথে গঙ্গার পানিবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। তাঁর নেতৃত্বে ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বর সাধারণ নির্বাচনে ১৪ দলীয় জোট সরকার ক্ষমতায় আসে এবং জনকল্যাণে নানামুখী কর্মসূচি গ্রহণ করে। গণতন্ত্র, মানবাধিকার প্রতিষ্ঠা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, নারীর ক্ষমতায়ন, বিদ্যুৎ, তথ্যপ্রযুক্তি, গ্রামীণ অবকাঠামো, বৈদেশিক কর্মসংস্থানসহ নানা কর্মসূচি জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি উজ্জ্বলতর করে।

২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি সাধারণ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জোট সরকার পুনরায় ক্ষমতায় এসে সরকার পরিচালনা করছে। জনগণের আর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। নিজস্ব অর্থায়নে দেশের বৃহত্তম প্রকল্প পদ্মা সেতু নির্মিত হচ্ছে। সমুদ্রে বাংলাদেশের ন্যায্য অধিকার প্রতিষ্ঠা, ভারতের সাথে দীর্ঘদিনের অমিমাংসিত স্থল সীমানা নির্ধারণ তথা ছিটমহল বিনিময় চুক্তিসহ গণমানুষের কল্যাণে তাঁর অবদান স্মরণীয় হয়ে থাকবে।

দেশকে একটি সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলায় পরিণত করতে তিনি ‘ভিশন ২০২১’ ও ‘ভিশন ২০৪১’ কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন। গণতন্ত্র, উন্নয়ন ও জনগণের কল্যাণে শেখ হাসিনার এসব যুগান্তকারী কর্মসূচি বাংলার ইতিহাসে দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।

আমি বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার স্বদেশ প্রত্যাবর্তন দিবসে সরকারের অব্যাহত সাফল্যসহ তাঁর নিজের ও পরিবারের সকল সদস্যের সুস্বাস্থ্য, দীর্ঘায়ু, সুখ-সমৃদ্ধি ও কল্যাণ কামনা করছি।

খোদা হাফেজ, বাংলাদেশ চিরজীবী হোক”