ঢাকা , শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

অভিভাবক ছাড়া বিয়ে কি জায়েজ না নাজায়েজ

বিয়ের আরবি শব্দ হলো নিকাহ। নিকাহ এর শাব্দিক অর্থ হলো, একত্রিত হওয়া, নারী পুরুষ মিলিত হওয়া। পারিভাষিক অর্থে নিকাহ বা বিবাহ বলা হয়। ইসলামী শরীয়াহ আইন অনুযায়ী, বিবাহ হলো একজন নারী ও একজন পুরুষের মধ্যে নিষ্পন্ন বৈধ বন্ধন ও সামাজিক চুক্তি।

ইসলামে বিবাহ হলো একটি সুন্নাহ বা মুহাম্মাদ এর আদর্শ এবং ইসলামে বিবাহ করার জন্য অত্যন্ত জোরালোভাবে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

ইসলামের দৃষ্টিতে বিবাহ শুধু জৈবিক প্রয়োজন পূরণের মাধ্যম নয়- বরং একটি মহান ইবাদত। এটি ধর্মীয় অনুশাসন ও রিচুয়ালের অন্যতম অংশ।

রাসুলুল্লাহ (সা.) দ্ব্যর্থহীনকণ্ঠে ঘোষণা করেছেন, বিবাহ আমার সুন্নত। যে আমার সুন্নত থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় সে আমাদের দলভুক্ত নয়। (সুনানু ইবনি মাযাহ, হাদিস নং-১৯১৯)

ইসলামে প্রতিটি বিষয়ে যেমন দিকনির্দেশনা রয়েছে তেমনি বিবাহের জন্যও রয়েছে অনেক বিধি-নিষেধ।

বিয়ের সঠিক সময় এবং সঠিক পদ্ধতি হচ্ছে উপযুক্ত বয়সে স্ত্রীর ভরণ পোষণের ক্ষমতা অর্জনের পর পিতা-মাতার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উপযুক্ত পাত্রীকে বিয়ে করা।

পারিবারিক ও সামাজিক শান্তি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এটা বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। সময়ের পূর্বে অভিভাবকের অজান্তে বিয়ে করা একেবারেই অনুচিত।

রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘অভিভাবক ছাড়া বিয়ে সংঘটিত হয় না। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ১১০১; আবু দাউদ, হাদিস : ২০৮৩)

এর কারণ হলো, পারিবারিক মূল্যবোধের জায়গা থেকে পরিবারের সদস্যদের অভিমত ও বংশীয় মর্যাদা পারিবারিক বন্ধনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। আবার অভিভাবকহীন বিয়েতে কখনো কখনো ‘কুফু’ (সমতা) রক্ষা হয় না। সে ক্ষেত্রে বংশের অপমান হয়। তাই অভিভাবকদের এ ক্ষেত্রে কিছু অধিকার দেওয়া হয়েছে।

আর অভিভাবকহীন বিয়ে বা গোপন বিয়ে অসামাজিক ও অকৃতজ্ঞতাপূর্ণ কাজ। এ জন্য বিয়ের ক্ষেত্রে গোপনীয়তা ইসলাম পছন্দ করে না। তাই ইসলামের নির্দেশনা হলো, ‘বিয়ে করবে ঘোষণা দিয়ে। ’ (মুসনাদে আহমাদ : ৪/৫)

এতদসত্ত্বেও যদি কেউ অন্যায় লালসায় তাড়িত হয়ে কমপক্ষে দু’জন সাক্ষীর উপস্থিতিতে বিয়ে করেই ফেলে, তাহলে যদিও শরিয়তের দৃষ্টিতে বিশেষ বিবেচনায় বিয়ে শুদ্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু পারিবারিক ও সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে তা সম্পূর্ণ অনুচিত।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

অভিভাবক ছাড়া বিয়ে কি জায়েজ না নাজায়েজ

আপডেট টাইম : ০১:৫৯ অপরাহ্ন, শনিবার, ২২ জুলাই ২০২৩

বিয়ের আরবি শব্দ হলো নিকাহ। নিকাহ এর শাব্দিক অর্থ হলো, একত্রিত হওয়া, নারী পুরুষ মিলিত হওয়া। পারিভাষিক অর্থে নিকাহ বা বিবাহ বলা হয়। ইসলামী শরীয়াহ আইন অনুযায়ী, বিবাহ হলো একজন নারী ও একজন পুরুষের মধ্যে নিষ্পন্ন বৈধ বন্ধন ও সামাজিক চুক্তি।

ইসলামে বিবাহ হলো একটি সুন্নাহ বা মুহাম্মাদ এর আদর্শ এবং ইসলামে বিবাহ করার জন্য অত্যন্ত জোরালোভাবে পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

ইসলামের দৃষ্টিতে বিবাহ শুধু জৈবিক প্রয়োজন পূরণের মাধ্যম নয়- বরং একটি মহান ইবাদত। এটি ধর্মীয় অনুশাসন ও রিচুয়ালের অন্যতম অংশ।

রাসুলুল্লাহ (সা.) দ্ব্যর্থহীনকণ্ঠে ঘোষণা করেছেন, বিবাহ আমার সুন্নত। যে আমার সুন্নত থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয় সে আমাদের দলভুক্ত নয়। (সুনানু ইবনি মাযাহ, হাদিস নং-১৯১৯)

ইসলামে প্রতিটি বিষয়ে যেমন দিকনির্দেশনা রয়েছে তেমনি বিবাহের জন্যও রয়েছে অনেক বিধি-নিষেধ।

বিয়ের সঠিক সময় এবং সঠিক পদ্ধতি হচ্ছে উপযুক্ত বয়সে স্ত্রীর ভরণ পোষণের ক্ষমতা অর্জনের পর পিতা-মাতার সিদ্ধান্ত অনুযায়ী উপযুক্ত পাত্রীকে বিয়ে করা।

পারিবারিক ও সামাজিক শান্তি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এটা বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। সময়ের পূর্বে অভিভাবকের অজান্তে বিয়ে করা একেবারেই অনুচিত।

রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘অভিভাবক ছাড়া বিয়ে সংঘটিত হয় না। ’ (তিরমিজি, হাদিস : ১১০১; আবু দাউদ, হাদিস : ২০৮৩)

এর কারণ হলো, পারিবারিক মূল্যবোধের জায়গা থেকে পরিবারের সদস্যদের অভিমত ও বংশীয় মর্যাদা পারিবারিক বন্ধনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ। আবার অভিভাবকহীন বিয়েতে কখনো কখনো ‘কুফু’ (সমতা) রক্ষা হয় না। সে ক্ষেত্রে বংশের অপমান হয়। তাই অভিভাবকদের এ ক্ষেত্রে কিছু অধিকার দেওয়া হয়েছে।

আর অভিভাবকহীন বিয়ে বা গোপন বিয়ে অসামাজিক ও অকৃতজ্ঞতাপূর্ণ কাজ। এ জন্য বিয়ের ক্ষেত্রে গোপনীয়তা ইসলাম পছন্দ করে না। তাই ইসলামের নির্দেশনা হলো, ‘বিয়ে করবে ঘোষণা দিয়ে। ’ (মুসনাদে আহমাদ : ৪/৫)

এতদসত্ত্বেও যদি কেউ অন্যায় লালসায় তাড়িত হয়ে কমপক্ষে দু’জন সাক্ষীর উপস্থিতিতে বিয়ে করেই ফেলে, তাহলে যদিও শরিয়তের দৃষ্টিতে বিশেষ বিবেচনায় বিয়ে শুদ্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু পারিবারিক ও সামাজিক দৃষ্টিকোণ থেকে তা সম্পূর্ণ অনুচিত।