কর্মকর্তাদের রোষানলে পড়ে গত বৃহস্পতিবার (১৯ ডিসেম্বর) অফিস ছাড়তে বাধ্য হন ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) মুহাম্মদ মনিরুল মওলা। এরপর থেকে তিনি আর অফিসে আসছেন না।
ইসলামী ব্যাংকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ব্যাংকিং খাতের বড় লুটপাটকারী এস আলম গ্রুপের এলসি খোলা সংক্রান্ত কারণে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে এমডির মনোমালিন্য সৃষ্টি হয়। এক পর্যায়ে কর্মকর্তাদের রোষানলে পড়ে অফিস ছাড়তে বাধ্য হন তিনি। এরপর থেকে তিনি আর অফিসে আসেননি।
ব্যাংকটির সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা নাম গোপন রাখার শর্তে জানান, বৃহস্পতিবার যাওয়ার পর আর অফিসে আসেননি এমডি। গুরুত্বপূর্ণ ফাইল তার বাসায় বসে সই করছেন।
তিনি বলেন, ‘যেহেতু একটি অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা ঘটে গেছে তাই হয়তো তিনি ভয়ে এখন আর আসছেন না। পর্ষদের সিদ্ধান্তের অপেক্ষা করছেন।’
পদত্যাগ করেছেন কি না জানতে চাইলে ওই কর্মকর্তা জানান, এখন পর্যন্ত পদত্যাগ করেননি বলে জানি। আদৌ পদত্যাগ করবেন কি না তাও জানি না। এটা তার বিষয়।
ইসলামী ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদের এক সদস্য জানান, এমডিকে নিয়ে ঝামেলা হচ্ছে। আগামী ২৯ ডিসেম্বর পর্ষদের বৈঠক আছে। সেখানে তার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
ইসলামী ব্যাংক এস আলম গ্রুপের নিয়ন্ত্রণে থাকাকালীন এমডি হিসেবে নিয়োগ পান মনিরুল মওলা। তার সময়ে এস আলম গ্রুপ নামে বেনামে ঋণ নিয়ে ব্যাংকটিকে দুর্বল করে ফেলেছে। এস আলমকে অনৈতিকভাবে ঋণ পাইয়ে দিতে সহযোগিতা করেন মনিরুল মওলা, এমন অভিযোগ রয়েছে।
এর জেরে ব্যাংকটির কর্মকর্তারা মনিরুলকে আর এমডি পদে দায়িত্ব পালন করতে দিতে রাজি নন। এজন্যই ১৯ ডিসেম্বর মনিরুলের বিষয় সিদ্ধান্ত নিতে পর্ষদে চাপ দিয়েছেন কর্মকর্তারা।
এ বিষয়ে কথা বলতে মনিরুল মওলার সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি কিছু বলতে রাজি হননি।
সম্প্রতি, দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) ইসলামী ব্যাংকের সাবেক চেয়ারম্যান ও এস আলম গ্রুপের মালিক মোহাম্মদ সাইফুল আলমের ছেলে আহসানুল আলম ও এমডি মনিরুল মওলাসহ ৫৮ জনের বিরুদ্ধে মামলা করেছে। তাদের বিরুদ্ধে ইসলামী ব্যাংক থেকে এক হাজার ৯২ কোটি টাকা ঋণ জালিয়াতির অভিযোগ আছে।