একই দিনে প্রশাসনের এক অতিরিক্ত সচিব ও দুই যুগ্ম সচিব মারা গেছেন। সোমবার একের পর এক তিনজনের মৃত্যুর খবর জানার পর প্রশাসনের কর্মকর্তাদের মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। দিনভর সচিবালয়ে অন্যতম আলোচনার বিষয় ছিল সহকর্মীদের মৃত্যুর খবর। প্রশাসনের সাবেক এবং বর্তমান কর্মকর্তাদের কেউ কেউ তাদের ফেসবুকে ‘আজ শোকের দিন’ উল্লেখ করে স্ট্যাটাস দিয়েছেন।
প্রশাসনের ১৩তম ব্যাচের কর্মকর্তা সানজিদা রহমান গত ২৪ জুলাই পিআরএলে গেছেন। তিনি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে অতিরিক্ত সচিব হিসেবে কর্মরত ছিলেন। নিউমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে তিনি ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে মারা গেছেন বলে জানা গেছে। এক স্বজন জানান, সানজিদা রহমানের কাশির সমস্যা ছিল। সেখান থেকে নিউমোনিয়ার সমস্যা ধরা পড়ে। এটা নিয়ে তেমন উদ্বেগের কিছু ছিল না, কিন্তু হঠাৎ করেই তিনি মারা যান। যারাই এ খবর শুনছেন প্রথমে বিশ্বাস করতে পারছেন না।
অন্যদিকে প্রশাসনের ২০ ব্যাচের দুই যুগ্মসচিব মারা গেছেন। এদের মধ্যে নাসরিন মুক্তি ক্যান্সার আক্রান্ত ছিলেন। তিনি লন্ডন হাই কমিশনে (মিনিস্টার, পলিটিক্যাল) কর্মরত অবস্থায় সোমবার পৌনে ২টার দিকে মারা যান। এ কর্মকর্তা লন্ডনের মিডলসেক্স হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন।
একই ব্যাচের ফিরোজ মাহমুদ খান পাভেল রাজধানীর বারডেম জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সোমবার মারা যান। তিনি তথ্য কমিশনের উপপরিচালক হিসেবে কর্মরত ছিলেন।
সরকারি কর্মকমিশনের চেয়ারম্যান ও সাবেক সিনিয়র সচিব সোহরাব হোসাইন তাঁর ফেসবুকে কর্মকর্তাদের ছবি দিয়ে লিখেছেন, ‘আজ বড় বেদনার দিন।’
প্রশাসনের ২০ ব্যাচের একাধিক কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, নাসরিন মুক্তি আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন। তাঁর চিকিৎসার সুবিধার জন্যই লণ্ডনে পদায়ন করা হয়েছিল। অন্যদিকে একইদিনে তাঁদের ব্যাচের ফিরোজ মাহমুদের মৃত্যুর খবর আসায় সচিবালয়ে সহকর্মীদের কেউ কেউ একে অন্যের কক্ষে গিয়ে স্মৃতিচারণ করেছেন। এক কর্মকর্তা সমকালকে বলেন, ‘মৃত্যু অবধারিত, আমরা সবাই মরব, কিন্তু কিন্তু একই দিনে দুই সহকর্মীর মৃত্যু বড় বেদনার পরিবেশ তৈরি করেছে।’
দুই যুগ্ম সচিবের মৃত্যুতে বাংলাদেশ অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে পৃথক পৃথক বার্তায় শোক প্রকাশ করা হয়েছে। অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের সচিব মোস্তফা কামাল এবং সাধারণ সম্পাদক শিল্প মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব এস. এম. আলম স্বাক্ষরিত শোক বার্তায় বলা হয়েছে, নাসরিন মুক্তি ও ফিরোজ মাহমুদ সৎ, দক্ষ, অমায়িক গুণাবলীর কর্মকর্তা ছিলেন। তাঁদের মৃত্যুতে দেশ ও জাতি মেধাবী কর্মকর্তা হারাল। আমরা বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসে তাঁদের অবদান কৃতজ্ঞতার সঙ্গে স্মরণ করছি। একইসঙ্গে প্রয়াতদের পরিবারের প্রতি অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকে সমবেদনা ও সহমর্মিতা জানানো হয়েছে।