গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতা পেশায় জবাবদিহিতা আনতে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচার প্রতিমন্ত্রী মোহাম্মদ আলী আরাফাত।
বুধবার (১৪ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর সার্কিট হাউজ রোডের তথ্য ভবন মিলনায়তনে বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলের ৫০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষকী ও বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিল দিবস-২০২৪ উপলক্ষে আয়োজিত শুভেচ্ছা বিনিময় অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘গণমাধ্যম ও সাংবাদিকতার মূল কাজ কর্তৃপক্ষকে ও সরকারকে জবাবদিহিতায় আনা। সমাজের দর্পণ হিসেবে সমাজের বিভিন্ন অসঙ্গতি, ভালো-মন্দ সবকিছু তুলে ধরা।
কিন্তু অন্যান্য পেশার মতো এ পেশার মধ্যেও আমরা অনেক ক্ষেত্রে দেখি সাংবাদিকতার নামে অপসংবাদিকতা, পেশাদারিত্বের জায়গায় অপেশাদারী মনোভাবের বহিঃপ্রকাশ অনেক সময় ঘটে।’তিনি বলেন, ‘যারা সমাজের সর্বক্ষেত্রে সবাইকে জবাবদিহির আওতায় আনবেন, সে পেশায়ও কিছুটা জবাবদিহি থাকার প্রয়োজন আছে। সে জায়গায় প্রেস কাউন্সিলের মতো প্রতিষ্ঠানের খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে।’
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যারা পেশাদারিত্বের সাথে দীর্ঘদিন ধরে সাংবাদিকতা করে আসছেন এবং এখনও করছেন তাদের সবার পেশাদারিত্বের প্রতি একধরনের আকর্ষণ আছে।
তাঁরা চান এ পেশার মধ্যেও একটা স্বচ্ছতা, জবাবদিহি এবং এক ধরনের শৃঙ্খলা থাকুক। এই চাহিদা সাংবাদিক সমাজের মধ্য থেকেই আমি দেখেছি। সেখানে সরকার এবং গণমাধ্যমের মধ্যে এক ধরনের মেলবন্ধন এবং একটা সহযোগিতার সম্পর্ক হতে পারে।’তিনি আরো বলেন, ‘সরকার সমালোচনা ও যেকোন ধরনের শক্ত প্রশ্ন স্বাগত জানায়।
যেকোন প্রশ্নের উত্তর দিতে বা কোন ব্যর্থতা-বিচ্যুতি থাকলে, সমালোচনা হলে সেগুলো স্বীকার করে নিতে এবং সামনের দিকে আরও ভালো কিছু করার প্রত্যয় ব্যক্ত করতে আমাদের কোন সমস্যা নেই। কিন্তু সাংবাদিকতাকে অপব্যবহার করে কোন গোষ্ঠী যাতে ষড়যন্ত্র করতে না পারে সেটা খেয়াল রাখতে হবে। সেখানে প্রেস কাউন্সিলের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে।’প্রতিমন্ত্রী আরো বলেন, ‘প্রেস কাউন্সিল আইন আরও যুগোপযোগী করা প্রয়োজন। আমাদের উদ্দেশ্য গণমাধ্যমের জায়গা ও পরিবেশ আরও স্বচ্ছ করা, সুন্দর করা এবং শক্তিশালী করা।
গণমাধ্যমের স্থান যাতে কোনোভাবেই সংকুচিত না হয়, তথ্যের অবাধ প্রবাহ যাতে নিশ্চিত হয়, গণমাধ্যমের স্বাধীনতা এবং মত প্রকাশের স্বাধীনতা যাতে আরও উন্মুক্ত হয় সেটিই সরকারের উদ্দেশ্য। একইসাথে অপতথ্য রোধ করা এবং গণমাধ্যমের নামে অপপ্রচার জবাবদিহিতায় আনাই উদ্দেশ্য। এই জায়গায় সরকার, রাজনৈতিক দল, রাজনীতিবিদ, গণমাধ্যম বা অন্য কোন পেশার কারো মধ্যে কোনো দ্বিমত নেই।’বর্তমান সরকার গণমাধ্যমবান্ধব উল্লেখ করে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাংবাদিকবান্ধব এবং গণমাধ্যমবান্ধব। গত ১৫ বছরে গণমাধ্যমের বিস্তৃতি ঘটেছে এবং এ সময়ে উদারনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ছিল গণমাধ্যমের ক্ষেত্রে। অথচ যারা অভিযোগ করে এ সরকার গণমাধ্যমের জায়গা সংকুচিত করেছে, তারা কখনো বলে না গণমাধ্যমের কল্যাণে কতটা সহানুভূতি নিয়ে এ সরকার কাজ করছে। এ বিষয়গুলো সামনে নিয়ে আসতে হবে এবং যারা বিভিন্ন ধরনের অপপ্রচার করছে তাদের জবাব দিতে হবে।’