ঢাকা , শুক্রবার, ১৮ অক্টোবর ২০২৪, ৩ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

কখনো ভাবিনি এই দুঃখজনক ঘটনার সঙ্গে আমার গান জুড়ে যাবে: লগ্নজিতা

ব্যান্ড সংগীতশিল্পী লগ্নজিতার ‘বেহায়া’ গানটি ছিল তাদের জীবনের গান। ‘আমাদের গল্পগুলো অল্প সময় ঘর পাতাল / তার পর পথ হারালো তোমায়-আমায় নিয়ে’— এই গানই ছিল তাদের জীবনের গান। সম্প্রতি আরজি করকাণ্ডে মৃতা চিকিৎসক পড়ুয়ার প্রেমিক সে কথাই জানিয়েছেন। প্রেমিকার পছন্দের এ গানটি  তার ফোনের কলার টিউনে রয়েছে। কী অদ্ভুত মিল। মৃতার প্রেমিক আরও জানালেন, সামনে তাদের বিয়ের পরিকল্পনাও ছিল। তার আগেই গল্প অসম্পূর্ণ রেখে চলে গেল সে। আনন্দবাজারের এক সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সংগীতশিল্পী লগ্নজিতা চক্রবর্তী।

আফসোস করে লগ্নজিতা বলেন, আমার গান যে কারও জীবন ছুঁয়ে গেছে, তা ভাবতে পারি না আমি। সেই মানুষটির যা পরিণতি সে নিয়ে আর নতুন করে কী বলব। আমার কাছে খুব মর্মান্তিক ঘটনা এটি।

তিনি বলেন, সকালে ঘুম ভেঙে হোয়াটসঅ্যাপে বাবার মেসেজ দেখতে পাই। বাবা লিখেছেন— মা, তোমার গান তারা শুনতেন। তোমার পথে নামা উচিত। লগ্নজিতা গান গাওয়াকে সর্বোচ্চভাবে পেশা হিসাবেই দেখে এসেছেন। কেউ যখন বলেন—আপনার গান মানুষের জীবন ছুঁয়ে যায়। তিনি সমর্থন করেননি কখনো। তবে এ ঘটনা তাকে ভীষণভাবে নাড়া দিয়েছে, ভীষণ কষ্ট অনুভব করছি। তিনি বলেন, কী আশ্চর্য! তার প্রিয় এই ‘বেহায়া’ গানের কথার সঙ্গে যেন মিলে গেল তাদের প্রেমের জীবন।

গানের কথার সঙ্গে মৃতা চিকিৎসক পড়ুয়া ও তার প্রেমিকের জীবন জুড়ে ছিল। এমনকি বিয়ের পরিকল্পনাও ছিল তাদের। সে কথা আরও একবার শিল্পীকে স্মরণ করিয়ে দেন তার শাশুড়িমা।
লগ্নজিতা বলেন, দশ বছর ধরে গান গাইছি ইন্ডাস্ট্রিতে। ভাবিনি এত দুঃখজনক ঘটনার সঙ্গে আমার গান জুড়ে যাবে। আমার অসহায় লাগছে তার (মৃতা চিকিৎসক পড়ুয়া) কথা ভেবে। তিনি বলেন, কী প্রতিক্রিয়া দেবেন বুঝতে পারছি না, মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি আমি।

এ সংগীতশিল্পী বলেন, কত অনুরাগী দেখা করেন, মেসেজ করেন। যদি একবার তার সঙ্গে দেখা হতো। যদি একবার ওকে সামনে বসে গানটি শোনাতে পারতাম…, কথা শেষ করতে পারলেন না লগ্নজিতা, কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

তাকে নিয়ে কি নতুন গান বাঁধার কোনো পরিকল্পনা রয়েছে—এমন প্রশ্নের জবাবে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমার ব্যান্ডের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলব, যদি ওকে নিয়ে একটা গান তৈরি করতে পারি।

শিল্পী একটা বিষয় ইতোমধ্যে ঠিক করে ফেলেছেন। সব সময় দেড় ঘণ্টার গানের অনুষ্ঠানে ১৫টি গান গেয়ে থাকেন তিনি। সাধারণত ১১তম গান ‘বেহায়া’। গান গাওয়ার আগে গান তৈরির নেপথ্য গল্প বলেন লগ্নজিতা। কে লিখেছেন, কীভাবে তৈরি ইত্যাদি কথা শেয়ার করে নেন শ্রোতাদের সঙ্গে।

কিন্তু আগামী এক বছর যখনই এই গান গাইব, ওর কথা বলব। দেশ-বিদেশে যেখানেই অনুষ্ঠান হোক। আমার কাছে এটিই হবে বিপ্লবের ভাষা।

উল্লেখ্য, আরজি করকাণ্ডে সিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্ট। আরজি করকাণ্ডে পুলিশের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি। আরজি কর মেডিকেল কলেজের চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় একের পর এক নতুন মোড় নিয়েছে। মঙ্গলবার একসঙ্গে আরজি করকাণ্ডে দায়ের হওয়া পাঁচটি জনস্বার্থ মামলার শুনানি হয়।

 

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

কখনো ভাবিনি এই দুঃখজনক ঘটনার সঙ্গে আমার গান জুড়ে যাবে: লগ্নজিতা

আপডেট টাইম : ০৫:৪৪ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৪ অগাস্ট ২০২৪

ব্যান্ড সংগীতশিল্পী লগ্নজিতার ‘বেহায়া’ গানটি ছিল তাদের জীবনের গান। ‘আমাদের গল্পগুলো অল্প সময় ঘর পাতাল / তার পর পথ হারালো তোমায়-আমায় নিয়ে’— এই গানই ছিল তাদের জীবনের গান। সম্প্রতি আরজি করকাণ্ডে মৃতা চিকিৎসক পড়ুয়ার প্রেমিক সে কথাই জানিয়েছেন। প্রেমিকার পছন্দের এ গানটি  তার ফোনের কলার টিউনে রয়েছে। কী অদ্ভুত মিল। মৃতার প্রেমিক আরও জানালেন, সামনে তাদের বিয়ের পরিকল্পনাও ছিল। তার আগেই গল্প অসম্পূর্ণ রেখে চলে গেল সে। আনন্দবাজারের এক সাক্ষাৎকারে এ বিষয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন সংগীতশিল্পী লগ্নজিতা চক্রবর্তী।

আফসোস করে লগ্নজিতা বলেন, আমার গান যে কারও জীবন ছুঁয়ে গেছে, তা ভাবতে পারি না আমি। সেই মানুষটির যা পরিণতি সে নিয়ে আর নতুন করে কী বলব। আমার কাছে খুব মর্মান্তিক ঘটনা এটি।

তিনি বলেন, সকালে ঘুম ভেঙে হোয়াটসঅ্যাপে বাবার মেসেজ দেখতে পাই। বাবা লিখেছেন— মা, তোমার গান তারা শুনতেন। তোমার পথে নামা উচিত। লগ্নজিতা গান গাওয়াকে সর্বোচ্চভাবে পেশা হিসাবেই দেখে এসেছেন। কেউ যখন বলেন—আপনার গান মানুষের জীবন ছুঁয়ে যায়। তিনি সমর্থন করেননি কখনো। তবে এ ঘটনা তাকে ভীষণভাবে নাড়া দিয়েছে, ভীষণ কষ্ট অনুভব করছি। তিনি বলেন, কী আশ্চর্য! তার প্রিয় এই ‘বেহায়া’ গানের কথার সঙ্গে যেন মিলে গেল তাদের প্রেমের জীবন।

গানের কথার সঙ্গে মৃতা চিকিৎসক পড়ুয়া ও তার প্রেমিকের জীবন জুড়ে ছিল। এমনকি বিয়ের পরিকল্পনাও ছিল তাদের। সে কথা আরও একবার শিল্পীকে স্মরণ করিয়ে দেন তার শাশুড়িমা।
লগ্নজিতা বলেন, দশ বছর ধরে গান গাইছি ইন্ডাস্ট্রিতে। ভাবিনি এত দুঃখজনক ঘটনার সঙ্গে আমার গান জুড়ে যাবে। আমার অসহায় লাগছে তার (মৃতা চিকিৎসক পড়ুয়া) কথা ভেবে। তিনি বলেন, কী প্রতিক্রিয়া দেবেন বুঝতে পারছি না, মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছি আমি।

এ সংগীতশিল্পী বলেন, কত অনুরাগী দেখা করেন, মেসেজ করেন। যদি একবার তার সঙ্গে দেখা হতো। যদি একবার ওকে সামনে বসে গানটি শোনাতে পারতাম…, কথা শেষ করতে পারলেন না লগ্নজিতা, কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি।

তাকে নিয়ে কি নতুন গান বাঁধার কোনো পরিকল্পনা রয়েছে—এমন প্রশ্নের জবাবে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তিনি বলেন, এ বিষয়ে আমার ব্যান্ডের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলব, যদি ওকে নিয়ে একটা গান তৈরি করতে পারি।

শিল্পী একটা বিষয় ইতোমধ্যে ঠিক করে ফেলেছেন। সব সময় দেড় ঘণ্টার গানের অনুষ্ঠানে ১৫টি গান গেয়ে থাকেন তিনি। সাধারণত ১১তম গান ‘বেহায়া’। গান গাওয়ার আগে গান তৈরির নেপথ্য গল্প বলেন লগ্নজিতা। কে লিখেছেন, কীভাবে তৈরি ইত্যাদি কথা শেয়ার করে নেন শ্রোতাদের সঙ্গে।

কিন্তু আগামী এক বছর যখনই এই গান গাইব, ওর কথা বলব। দেশ-বিদেশে যেখানেই অনুষ্ঠান হোক। আমার কাছে এটিই হবে বিপ্লবের ভাষা।

উল্লেখ্য, আরজি করকাণ্ডে সিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দিলেন কলকাতা হাইকোর্ট। আরজি করকাণ্ডে পুলিশের ভূমিকায় অসন্তোষ প্রকাশ করেন প্রধান বিচারপতি। আরজি কর মেডিকেল কলেজের চিকিৎসককে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনায় একের পর এক নতুন মোড় নিয়েছে। মঙ্গলবার একসঙ্গে আরজি করকাণ্ডে দায়ের হওয়া পাঁচটি জনস্বার্থ মামলার শুনানি হয়।