ঢাকা , বুধবার, ২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১১ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

তবু পর্যাপ্ত আসন নেই স্নাতকে

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ  চলতি বছর আট সাধারণ শিক্ষাবোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি বোর্ড মিলিয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় যত শিক্ষার্থী পাস করেছে, তার চেয়ে প্রায় ৫০ হাজার বেশি আসন রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ও ডিগ্রি পর্যায়ে। আবার এইচএসসি পাস করে সবাই উচ্চশিক্ষা নেয় এমন নয়, একটি অংশ আর পড়াশোনা এগিয়ে নিতে চায় না। তারপরও যত শিক্ষার্থী স্নাতকে ভর্তির জন্য ন্যূনতম যোগ্যতা অর্জন করেছে, তত আসন নেই দেশে।

বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সদ্য অধিভুক্ত কলেজগুলোতে স্নাতক (সম্মান) ও পাস কোর্সসহ দেশে উচ্চ শিক্ষায় আসনসংখ্যা প্রায় সাড়ে আট লাখ। তবে এবার পাস করেছে ৮ লাখ এক হাজার ৭১১ জন শিক্ষার্থী।

উচ্চ শিক্ষায় এসব আসনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় বা মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পাবে ৬২ হাজারের মতো শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ৪২টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শিক্ষা কার্যক্রম চলা ৩৭টি, বুয়েটসহ কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আসন আছে ৫২ হাজারের কিছু বেশি। সরকারি ৩০টি মেডিকেলে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তিযোগ্য আছে তিন হাজার ২৬২টি আসন। বেসরকারি ৬৫টি মেডিকেল কলেজে আসন প্রায় ছয় হাজার। ডেন্টাল কলেজগুলোতে আছে আরও কয়েকশ আসন। অর্থাৎ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল মিলিয়ে আসন আছে ৬২ থেকে ৬৩ হাজার। বেশির ভাগ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির আবেদনের ন্যূনতম জিপিএ-৩.৫। এই পরিমাণ জিপিএ নিশ্চিত করতে পেরেছে চার লাখ ৩০ হাজার ৫৩২ জন। অর্থাৎ চলতি বছর সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রতি আসনের বিপরীতে গড়ে লড়বে পাঁচজনের মতো শিক্ষার্থী। অবশ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বরাবর এই সংখ্যাটা থাকে বেশি। কারণ, বেশির ভাগ শিক্ষার্থীরই আগ্রহ থাকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির।

একইভাবে প্রকৌশল শিক্ষায় দেশের প্রধান বিশ্ববিদ্যালয় বুয়েটেও ভর্তির প্রতিযোগিতা থাকবে অন্যান্য প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে বেশি।

এর বাইরে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আসনসংখ্যা দুই লাখের মত। এর মধ্যে এ গ্রেডের বিশ্ববিদ্যালগুলো বেশি জিপিএ চাইলেও নতুন এবং ছোট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভর্তির ন্যূনতম যোগ্যতায় খুব বেশি জিপিএ চায় না।

স্বভাবতই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই সরকারিতে ভর্তি হতে না পেরে সেখানে যায়। ন্যূনতম জিপিএ-২ নিশ্চিত করতে পেরেছে সাত লাখ ৯১ হাজার ৫০ জন। এর মধ্যে ৬২ হাজার যদি সরকারিতে ভর্তি হয়, তাহলে বাকি থাকে সাত লাখ ৩০ হাজারের মতো শিক্ষার্থী।

এদের মধ্যে বড় অংশই অবশ্য যায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজগুলোতে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি কলেজগুলোতে এবার আসন রয়েছে তিন লাখ ৯৪ হাজারের মত।

অর্থাৎ সরকারি, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারি বেসরকারি কলেজে স্নাতক সম্মানের সব আসন পূরণ হলেও সংকট থেকেই যায়।

তবে যারা স্নাতকে ভর্তি হতে পারবেন না, তাদের জন্য ডিগ্রিতে আসন রয়েছে এক লাখ ৩২ হাজার। সব মিলিয়ে অবশ্য শিক্ষার্থী ভর্তির বাইরে থাকবে না। তবে সমস্যা হবে অন্য জায়গায়, পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয় বা পছন্দের বিষয় বা পছন্দের এলাকায় ভর্তি হওয়াটাই হবে প্রধান চ্যালেঞ্জ।

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সংবাদিককে বলেছেন, ‘এবার উচ্চশিক্ষায় কাঙ্ক্ষিত আসন পেতে শিক্ষার্থীদের কষ্ট হবে না। আর সব শিক্ষার্থীরাই ভর্তির সুযোগ পাবেন। এটা বরাবরই হয়ে থাকে। বরং প্রতিবছরই আমাদের আসন খালি থাকে।’

জানতে চাইলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকদের সংগঠন প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ কবির হোসেন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ভালো সাবজেক্ট পাওয়া নিয়ে বরাবরই প্রতিযোগিতা হয়। এবারও প্রতিযোগিতা হবে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

তবু পর্যাপ্ত আসন নেই স্নাতকে

আপডেট টাইম : ০৬:৩১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৭ জুলাই ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ  চলতি বছর আট সাধারণ শিক্ষাবোর্ড, মাদ্রাসা ও কারিগরি বোর্ড মিলিয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় যত শিক্ষার্থী পাস করেছে, তার চেয়ে প্রায় ৫০ হাজার বেশি আসন রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ও ডিগ্রি পর্যায়ে। আবার এইচএসসি পাস করে সবাই উচ্চশিক্ষা নেয় এমন নয়, একটি অংশ আর পড়াশোনা এগিয়ে নিতে চায় না। তারপরও যত শিক্ষার্থী স্নাতকে ভর্তির জন্য ন্যূনতম যোগ্যতা অর্জন করেছে, তত আসন নেই দেশে।

বিশ্ববিদ্যালয়, জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে সদ্য অধিভুক্ত কলেজগুলোতে স্নাতক (সম্মান) ও পাস কোর্সসহ দেশে উচ্চ শিক্ষায় আসনসংখ্যা প্রায় সাড়ে আট লাখ। তবে এবার পাস করেছে ৮ লাখ এক হাজার ৭১১ জন শিক্ষার্থী।

উচ্চ শিক্ষায় এসব আসনের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায় বা মেডিকেল কলেজে পড়ার সুযোগ পাবে ৬২ হাজারের মতো শিক্ষার্থী। এর মধ্যে ৪২টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শিক্ষা কার্যক্রম চলা ৩৭টি, বুয়েটসহ কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে আসন আছে ৫২ হাজারের কিছু বেশি। সরকারি ৩০টি মেডিকেলে এমবিবিএস কোর্সে ভর্তিযোগ্য আছে তিন হাজার ২৬২টি আসন। বেসরকারি ৬৫টি মেডিকেল কলেজে আসন প্রায় ছয় হাজার। ডেন্টাল কলেজগুলোতে আছে আরও কয়েকশ আসন। অর্থাৎ পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিকেল মিলিয়ে আসন আছে ৬২ থেকে ৬৩ হাজার। বেশির ভাগ সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির আবেদনের ন্যূনতম জিপিএ-৩.৫। এই পরিমাণ জিপিএ নিশ্চিত করতে পেরেছে চার লাখ ৩০ হাজার ৫৩২ জন। অর্থাৎ চলতি বছর সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে প্রতি আসনের বিপরীতে গড়ে লড়বে পাঁচজনের মতো শিক্ষার্থী। অবশ্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে বরাবর এই সংখ্যাটা থাকে বেশি। কারণ, বেশির ভাগ শিক্ষার্থীরই আগ্রহ থাকে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তির।

একইভাবে প্রকৌশল শিক্ষায় দেশের প্রধান বিশ্ববিদ্যালয় বুয়েটেও ভর্তির প্রতিযোগিতা থাকবে অন্যান্য প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের চেয়ে বেশি।

এর বাইরে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের আসনসংখ্যা দুই লাখের মত। এর মধ্যে এ গ্রেডের বিশ্ববিদ্যালগুলো বেশি জিপিএ চাইলেও নতুন এবং ছোট বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভর্তির ন্যূনতম যোগ্যতায় খুব বেশি জিপিএ চায় না।

স্বভাবতই বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশিরভাগ শিক্ষার্থীই সরকারিতে ভর্তি হতে না পেরে সেখানে যায়। ন্যূনতম জিপিএ-২ নিশ্চিত করতে পেরেছে সাত লাখ ৯১ হাজার ৫০ জন। এর মধ্যে ৬২ হাজার যদি সরকারিতে ভর্তি হয়, তাহলে বাকি থাকে সাত লাখ ৩০ হাজারের মতো শিক্ষার্থী।

এদের মধ্যে বড় অংশই অবশ্য যায় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় অধিভুক্ত কলেজগুলোতে। জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত সরকারি কলেজগুলোতে এবার আসন রয়েছে তিন লাখ ৯৪ হাজারের মত।

অর্থাৎ সরকারি, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় এবং সরকারি বেসরকারি কলেজে স্নাতক সম্মানের সব আসন পূরণ হলেও সংকট থেকেই যায়।

তবে যারা স্নাতকে ভর্তি হতে পারবেন না, তাদের জন্য ডিগ্রিতে আসন রয়েছে এক লাখ ৩২ হাজার। সব মিলিয়ে অবশ্য শিক্ষার্থী ভর্তির বাইরে থাকবে না। তবে সমস্যা হবে অন্য জায়গায়, পছন্দের বিশ্ববিদ্যালয় বা পছন্দের বিষয় বা পছন্দের এলাকায় ভর্তি হওয়াটাই হবে প্রধান চ্যালেঞ্জ।

শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ সংবাদিককে বলেছেন, ‘এবার উচ্চশিক্ষায় কাঙ্ক্ষিত আসন পেতে শিক্ষার্থীদের কষ্ট হবে না। আর সব শিক্ষার্থীরাই ভর্তির সুযোগ পাবেন। এটা বরাবরই হয়ে থাকে। বরং প্রতিবছরই আমাদের আসন খালি থাকে।’

জানতে চাইলে বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মালিকদের সংগঠন প্রাইভেট ইউনিভার্সিটি ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি শেখ কবির হোসেন ঢাকাটাইমসকে বলেন, ‘ভালো সাবজেক্ট পাওয়া নিয়ে বরাবরই প্রতিযোগিতা হয়। এবারও প্রতিযোগিতা হবে।