অবশেষে ব্যাপক সমালোচনার মুখে পতিত খুনী হাসিনার দোসর আওয়ামী ওলামাদের ছাড়াই ইসলামিক ফাউন্ডেশনের (ইফা) বোর্ড অব গভর্নরস গঠিত হচ্ছে। দিনভর ব্যাপক সমালোচনা এবং ক্ষোভের মুখে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বোর্ড সদস্য হিসেবে আওয়ামী ঘরানার আলেমদের নাম পরিবর্তন করলেন ধর্ম উপদেষ্টা ড, আ ফ ম খালিদ হোসেন। আজ রোববার এই সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব শেষ মুহূর্তে ধর্ম উপদেষ্টা সংশোধন করেন । এতে আওয়ামী ঘরানার দুইজনে আলেমের নাম বাদ দিয়েছেন এবং দুইজন আলেমের নাম নতুন করে যোগ করেছেন। সংশোধিত প্রস্তাব আজ রোববার বিকেলে প্রধান উপদেষ্টা দপ্তরে পাঠানো হয়েছে মর্মে ধর্ম মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে।
জানা গেছে, পতিত স্বৈরাচারী শেখ হাসিনা সরকারের ঘনিষ্ঠ কয়েকজন আলেমের নাম ইসলামিক ফাউন্ডেশন বোর্ড অফ গভর্নরস এর প্রস্তাবিত তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। এতে করে ধর্ম মন্ত্রণালয়সহ আলেম সমাজ এবং বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলন নেতাদের মাঝে তীব্র ক্ষোভ সৃষ্টি হয়। এব্যাপারে দৈনিক ইনকিলাবের অনলাইনে একটি খবর প্রকাশিত হয়।
রোববার দিনভর ব্যাপক সমালোচনার মুখে ধর্ম উপদেষ্টা ইফার বোর্ডের সাবেক সদস্য রাজশাহীর মাওলানা জামাল উদ্দিন মাদানী এবং চট্টগ্রামের ছিপাতলী মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা আবুল ফারাহকে প্রস্তাবিত তালিকা থেকে বাদ দেন। এদের মধ্যে রাজশাহীর জামিয়া ওসমানিয়া হুসাইনাবাদ মাদরাসার প্রিন্সিপাল মাওলানা জামাল উদ্দিন বিগত সরকারের আমলে ইসলামিক ফাউন্ডেশন বোর্ড ও গভর্নর এর সদস্য ছিলেন। ইসলামিক ফাউন্ডেশনে শেখ মুজিবুর রহমানের মূর্তি বানানোর যে বোর্ড মিটিং এ পাস হয় সে মিটিং এ উপস্থিত ছিলেন। ঐ মিটিং এ আরো ছিলেন মাওলানা ফরিদউদ্দিন মাসউদ এবং সচিবালয় মসজিদের ইমাম মাওলানা ওমর ফারুক।
অপর দিকে চট্টগ্রামের ছিপাতলী কামিল মাদরাসার মাওলানা আবুল ফারাহ বিগত সরকারের আমলে শিক্ষা মন্ত্রী ডাক্তার দীপু মনি এবং পরবর্তীতে শিক্ষা মন্ত্রী মহিবুল হাসান নওফেলের ডান হাত ছিলেন। বিতকিত মাওলানা আবুল ফারাহ জুলাই বিপ্লবের আগের মাসে খুনী হাসিনার সাবেক শিক্ষা মন্ত্রী নওফেলকে ছিপাতলী কামিল মাদরাসায় নিয়ে বিভাগীয় সম্মেলন করে শিক্ষকদের জোর করে নিয়ে ঘোষণা দিয়েছিল সাবেক শিক্ষা মন্ত্রী দিপু মনির বিতকিত শিক্ষা সিলেবাস নিয়ে কওমি আলেম ওলামারা কেন আপত্তি তোলে । পতিত সরকারের সাবেক শিক্ষা মন্ত্রী দিপু মনিকেও তার মাদরাসায় নিয়ে আওয়ামী লীগের সাফাই গাইছিলেন।
আবুল ফারাহ বিগত সরকারের আমলে ইসলামী ও আরবি বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধারে সিন্ডিকেট সদস্য এবং একাডেমিক কাউন্সিলের সদস্য ছিলেন। তাদের নাম প্রস্তাবিত বোর্ড সদস্যদের নামের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। প্রস্তাবিত তালিকায় বিগত সরকারের আমলে প্রধানমন্ত্রীর তৎকালীন মুখ্য সচিব আবুল কালাম আজাদের একটি বেসরকারি সংস্থা মক্তব ফাউন্ডেশনের অনুষ্ঠানে সম্পৃক্ত থাকা এবং প্রধানমন্ত্রীর নির্লজ্জ দালালীর অভিযোগ রয়েছে। প্রস্তাবিত বোর্ড সদস্যদের তালিকা আজ বিকেলে প্রধান উপদেষ্টা দপ্তরে মেইল করে পাঠানো হয়েছে বলে ধর্মমন্ত্রণালয়ের সূত্র নিশ্চিত করেছে। ইফার বোর্ড অব গভর্নসের সদস্যদের তালিকায় যারা রয়েছেন তাদের মধ্যে হচ্ছেন, বিএনপির জাতীয়তাবাদী ওলামা দলের নেতা মাওলানা শাহ মো. নেছারুল হক, জামায়াতে ইসলামির নেতা মুফতি খলিলুর রহমান মাদানী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের শীর্ষ নেতা মাওলানা মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানী, বেফাকের মহাপরিচালক মাওলানা উবায়দুর রহমান খান নদভীসহ আরো একজন।