ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বঙ্গভবন থেকে শেখ মুজিবের ছবি সরানো ঠিক হয়নি: রিজভী

বঙ্গভবন থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি নামানো ঠিক হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, ‘খন্দকার মোশতাকও তার ছবি নামিয়েছিলেন। পরে জিয়াউর রহমান আবার টাঙিয়েছিলেন সেই ছবি।’

আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও রক্তদান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘জাতীয় পর্যায় যাদের অবদান আছে, তাদের স্বীকার করতেই হবে। কেউ অপরাধ করলে ইতিহাস ও জনগণ তা সিদ্ধান্ত নেবে। আওয়ামী লীগের মত সংকীর্ণমনা দল বিএনপি নয়। বঙ্গভবন থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি নামানো ঠিক হয়নি।’

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘স্বাধীনতার পরে সব দল নিষিদ্ধ করে শেখ মুজিবুর রহমান বাকশাল কায়েম করেছিলেন, গণতন্ত্র হত্যার ধারা তার হাত দিয়েই এসেছিল। অথচ ৬০’র দশকে স্বাধিকার আন্দোলন করেছিলেন। মানুষ তাকে বিশ্বাস করেছিল। ৭০ এ তাকে ভোট দিয়েছিল। কিন্তু তার অঙ্গীকার তিনি রক্ষা করতে পারেননি। স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি কোন ভূমিকা রাখেননি, স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে স্বাধিকার আন্দোলনে তার কিছুটা ভূমিকার কথা জনগণ মনে রেখেছে। স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণা তো দিয়েছে অদম্য সাহসী মেজর জিয়াউর রহমান। দেশ স্বাধীনের পরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা গ্রহণ করল। আমরা দেখেছি, তাদের হাত দিয়ে হত্যা, গুম এবং রক্ষিবাহিনীর অত্যাচার। এরপর ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘটল।’

রিজভী বলেন, ‘এরপর পর খন্দকার মোশতাক শেখ মুজিবের ছবি নামিয়ে নিল। জিয়াউর রহমান ৭ নভেম্বর সিপাহি জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে রাষ্ট্র ক্ষমতায় এলেন। জিয়াউর রহমান কিন্তু বঙ্গভবনে শেখ মুজিবের ছবি ফিরিয়ে আনেন।’

তিনি বলেন, ‘আজকে যারা অন্তবর্তীকালীন সরকারে আছেন, আমি একটা সংবাদ দেখেছি, সেটা ধরেই বলছি- অন্তবর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বঙ্গভবন থেকে শেখ মুজিবের ছবি নামিয়েছেন। দেখুন, করেছেন ঠিক আছে, সময় তো সব সময় এক রকম যায় না। যার যতটুকু ইতিহাসে অবস্থান আছে, সেটুকু থাক। আমি মনে করি তার (শেখ মুজিবুর রহমান) ছবি নামিয়ে ফেলাটা ঠিক হয়নি। আমরা আওয়ামী লীগের মতো সংকীর্ণ নই।’

এ সময় আওয়ামী লীগ শাসনামলের সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘ভালো ডাক্তার হওয়া সত্ত্বেও শেখ হাসিনার শাসনামলে বিভাজন করা হয়েছিল। বিএনপির সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে পদোন্নতি দেওয়া হয়নি অনেককে। রাজনৈতিক কারণে বঞ্চিত করা হয়েছে তাদের। একই পদে ১৫ থেকে ১৬ বছর চাকরি করেছেন তারা।’

তিনি আরও বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি কম অত্যাচার করত তাহলে তাকে পালাতে হতো না। তিনি জানেন কাকে কাকে গুম করা হয়েছে, কার প্রতি অন্যায় করেছেন। অন্যায় করলে তাকে পালাতে হবে। অবিচার করলে নিজ দেশে থাকতে পারবেন না কেউ।’

এসময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডাক্তার ফরহাদ হালিম ডোনার, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা: রফিকুল ইসলাম, সহ-স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা: পারভেজ রেজা কাকন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, গতকাল সোমবার বঙ্গভবনের দরবার হল থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরানো হয়। অন্তর্বর্তী সরকারের নতুন উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

বঙ্গভবন থেকে শেখ মুজিবের ছবি সরানো ঠিক হয়নি: রিজভী

আপডেট টাইম : ১২:০৫ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১২ নভেম্বর ২০২৪

বঙ্গভবন থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি নামানো ঠিক হয়নি বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী।

তিনি বলেন, ‘খন্দকার মোশতাকও তার ছবি নামিয়েছিলেন। পরে জিয়াউর রহমান আবার টাঙিয়েছিলেন সেই ছবি।’

আজ মঙ্গলবার সকালে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে ৭ নভেম্বর বিপ্লব ও সংহতি দিবস উপলক্ষে ফ্রি মেডিকেল ক্যাম্প ও রক্তদান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব বলেন, ‘জাতীয় পর্যায় যাদের অবদান আছে, তাদের স্বীকার করতেই হবে। কেউ অপরাধ করলে ইতিহাস ও জনগণ তা সিদ্ধান্ত নেবে। আওয়ামী লীগের মত সংকীর্ণমনা দল বিএনপি নয়। বঙ্গভবন থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি নামানো ঠিক হয়নি।’

রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘স্বাধীনতার পরে সব দল নিষিদ্ধ করে শেখ মুজিবুর রহমান বাকশাল কায়েম করেছিলেন, গণতন্ত্র হত্যার ধারা তার হাত দিয়েই এসেছিল। অথচ ৬০’র দশকে স্বাধিকার আন্দোলন করেছিলেন। মানুষ তাকে বিশ্বাস করেছিল। ৭০ এ তাকে ভোট দিয়েছিল। কিন্তু তার অঙ্গীকার তিনি রক্ষা করতে পারেননি। স্বাধীনতা যুদ্ধে তিনি কোন ভূমিকা রাখেননি, স্বাধীনতা যুদ্ধের আগে স্বাধিকার আন্দোলনে তার কিছুটা ভূমিকার কথা জনগণ মনে রেখেছে। স্বাধীনতা যুদ্ধের ঘোষণা তো দিয়েছে অদম্য সাহসী মেজর জিয়াউর রহমান। দেশ স্বাধীনের পরে আওয়ামী লীগ ক্ষমতা গ্রহণ করল। আমরা দেখেছি, তাদের হাত দিয়ে হত্যা, গুম এবং রক্ষিবাহিনীর অত্যাচার। এরপর ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট ঘটল।’

রিজভী বলেন, ‘এরপর পর খন্দকার মোশতাক শেখ মুজিবের ছবি নামিয়ে নিল। জিয়াউর রহমান ৭ নভেম্বর সিপাহি জনতার বিপ্লবের মাধ্যমে রাষ্ট্র ক্ষমতায় এলেন। জিয়াউর রহমান কিন্তু বঙ্গভবনে শেখ মুজিবের ছবি ফিরিয়ে আনেন।’

তিনি বলেন, ‘আজকে যারা অন্তবর্তীকালীন সরকারে আছেন, আমি একটা সংবাদ দেখেছি, সেটা ধরেই বলছি- অন্তবর্তী সরকারের উপদেষ্টা মাহফুজ আলম বঙ্গভবন থেকে শেখ মুজিবের ছবি নামিয়েছেন। দেখুন, করেছেন ঠিক আছে, সময় তো সব সময় এক রকম যায় না। যার যতটুকু ইতিহাসে অবস্থান আছে, সেটুকু থাক। আমি মনে করি তার (শেখ মুজিবুর রহমান) ছবি নামিয়ে ফেলাটা ঠিক হয়নি। আমরা আওয়ামী লীগের মতো সংকীর্ণ নই।’

এ সময় আওয়ামী লীগ শাসনামলের সরকারের সমালোচনা করে তিনি বলেন, ‘ভালো ডাক্তার হওয়া সত্ত্বেও শেখ হাসিনার শাসনামলে বিভাজন করা হয়েছিল। বিএনপির সঙ্গে যুক্ত থাকার কারণে পদোন্নতি দেওয়া হয়নি অনেককে। রাজনৈতিক কারণে বঞ্চিত করা হয়েছে তাদের। একই পদে ১৫ থেকে ১৬ বছর চাকরি করেছেন তারা।’

তিনি আরও বলেন, ‘সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি কম অত্যাচার করত তাহলে তাকে পালাতে হতো না। তিনি জানেন কাকে কাকে গুম করা হয়েছে, কার প্রতি অন্যায় করেছেন। অন্যায় করলে তাকে পালাতে হবে। অবিচার করলে নিজ দেশে থাকতে পারবেন না কেউ।’

এসময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ডাক্তার ফরহাদ হালিম ডোনার, স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা: রফিকুল ইসলাম, সহ-স্বাস্থ্যবিষয়ক সম্পাদক ডা: পারভেজ রেজা কাকন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, গতকাল সোমবার বঙ্গভবনের দরবার হল থেকে শেখ মুজিবুর রহমানের ছবি সরানো হয়। অন্তর্বর্তী সরকারের নতুন উপদেষ্টা মাহফুজ আলমের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দেওয়া এক পোস্টে এ তথ্য জানানো হয়।