ঢাকা , শুক্রবার, ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

সো-কয়েলে পড়ে শিশুর মৃত্যু

দু’ভাই বোন লুকোচুরি খেলতে গিয়ে পঁচিশ থেকে ত্রিশ ফুট গভীর অরক্ষিত সো-কয়েলে পড়ে যায় ছোট ভাই আরিয়ান। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় এক ব্যক্তি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ডুব দেন ওই সো-কয়েলে। মুহুর্তের মধ্যে আরিয়ানকে নিয়ে ভেসে উঠেন।কিন্তু ততক্ষণে মৃত্যু হয় আরিয়ানের। মর্মস্পর্শী এ ঘটনা ঘটে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রামে।

নিহত আরিয়ান সরকার (৬) ওই গ্রামের মো. জয়নাল আবেদিন সরকারের ছেলে। সে স্থানীয় এইচ এ কে একাডেমির প্লে শ্রেণির ছাত্র। সো-কয়েলের মালিক মো. কফিল উদ্দিন ওই গ্রামের মো. আ. হাইয়ের ছেলে। খবর পেয়ে পুলিশ রাতে শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে।

নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, বড় বোন পুতুল ও আরিয়ান বিকেলে বাড়ির পাশে লুকোচুরি খেলছিল। লুকাতে গিয়ে আরিয়ান জনৈক কফিল উদ্দিনের বাসার পেছনে উন্মুক্ত সো-কয়েলে পড়ে যায়। পুতুল তাকে খুঁজতে গিয়ে পায়নি। লুকিয়ে থাকা ভাইকে খুঁজতে থাকে সে। ভাইকে না পেয়ে বিষয়টি বাসায় জানায় সে। পরে স্বজন ও প্রতিবেশীরা খুঁজতে শুরু করে। এক পর্যায়ে কফিল উদ্দিনের অরক্ষিত সো-কয়েলের পাশে আরিয়ানের জুতা পড়ে থাকতে দেখে স্বজনরা। পঁচিশ থেকে ত্রিশ ফুট গভীর সো-কয়েলে বাঁশ দিয়ে খোঁজার চেষ্টা করে তারা। এক পর্যায়ে স্থানীয় এক ব্যক্তি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ওই সো-কয়েলে ডুব দেন। কিছু সময় পর আরিয়ানকে ডুবন্ত অবস্থা থেকে তুলে আনেন সেই ব্যক্তি। ততক্ষণে শিশুটি আর বেঁচে নেই।

এদিকে শিশু আরিয়ানের মৃত্যুর খবরে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানায়, ‘কফিল উদ্দিন তার বাসার পেছনে পঁচিশ থেকে ত্রিশ ফুট গভীর সো-কয়েল খনন করেছেন। ওই সো-কয়েলের কোনো ঢাকনা নেই। অরক্ষিত সো-কয়েলে এর আগেও দুটি শিশু পড়ে গিয়েছিল। সৌভাগ্যক্রমে ওরা বেঁচে যায়। এলাকাবাসী তাকে সতর্ক করার পরেও তিনি সো-কয়েলে ঢাকনা দেননি।আরিয়ানের মৃত্যুর জন্য কফিল উদ্দিন দায়ী। আমরা এলাকাবাসী তার বিচার দাবি করছি।’

নিহতের চাচা আ. লতিফ বলেন, ‘ভাতিজার আকষ্মিক মৃত্যুতে বড় ভাই বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। কফিল উদ্দিন তার সো-কয়েলটি দীর্ঘদিন উন্মুক্ত রেখেছেন। তার দায়িত্বহীনতার কারণে ভাতিজার মৃত্যু হলো।’

অভিযুক্ত কফিল উদ্দিনকে বাড়িতে গিয়ে পাওয়া যায়নি। এমনকি মোবাইলে ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (ওসি) মো. জয়নাল আবেদীন মন্ডল জানান, খবর পেয়ে রাতে পুলিশ ওই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

জনপ্রিয় সংবাদ

সো-কয়েলে পড়ে শিশুর মৃত্যু

আপডেট টাইম : ০৪:৪৫ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৩ নভেম্বর ২০২৪

দু’ভাই বোন লুকোচুরি খেলতে গিয়ে পঁচিশ থেকে ত্রিশ ফুট গভীর অরক্ষিত সো-কয়েলে পড়ে যায় ছোট ভাই আরিয়ান। বিষয়টি জানাজানি হলে স্থানীয় এক ব্যক্তি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ডুব দেন ওই সো-কয়েলে। মুহুর্তের মধ্যে আরিয়ানকে নিয়ে ভেসে উঠেন।কিন্তু ততক্ষণে মৃত্যু হয় আরিয়ানের। মর্মস্পর্শী এ ঘটনা ঘটে মঙ্গলবার সন্ধ্যায় গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার গাজীপুর ইউনিয়নের ফরিদপুর গ্রামে।

নিহত আরিয়ান সরকার (৬) ওই গ্রামের মো. জয়নাল আবেদিন সরকারের ছেলে। সে স্থানীয় এইচ এ কে একাডেমির প্লে শ্রেণির ছাত্র। সো-কয়েলের মালিক মো. কফিল উদ্দিন ওই গ্রামের মো. আ. হাইয়ের ছেলে। খবর পেয়ে পুলিশ রাতে শিশুর মরদেহ উদ্ধার করে।

নিহতের স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, বড় বোন পুতুল ও আরিয়ান বিকেলে বাড়ির পাশে লুকোচুরি খেলছিল। লুকাতে গিয়ে আরিয়ান জনৈক কফিল উদ্দিনের বাসার পেছনে উন্মুক্ত সো-কয়েলে পড়ে যায়। পুতুল তাকে খুঁজতে গিয়ে পায়নি। লুকিয়ে থাকা ভাইকে খুঁজতে থাকে সে। ভাইকে না পেয়ে বিষয়টি বাসায় জানায় সে। পরে স্বজন ও প্রতিবেশীরা খুঁজতে শুরু করে। এক পর্যায়ে কফিল উদ্দিনের অরক্ষিত সো-কয়েলের পাশে আরিয়ানের জুতা পড়ে থাকতে দেখে স্বজনরা। পঁচিশ থেকে ত্রিশ ফুট গভীর সো-কয়েলে বাঁশ দিয়ে খোঁজার চেষ্টা করে তারা। এক পর্যায়ে স্থানীয় এক ব্যক্তি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ওই সো-কয়েলে ডুব দেন। কিছু সময় পর আরিয়ানকে ডুবন্ত অবস্থা থেকে তুলে আনেন সেই ব্যক্তি। ততক্ষণে শিশুটি আর বেঁচে নেই।

এদিকে শিশু আরিয়ানের মৃত্যুর খবরে পুরো এলাকায় শোকের ছায়া নেমে আসে।

স্থানীয়রা ক্ষোভ প্রকাশ করে জানায়, ‘কফিল উদ্দিন তার বাসার পেছনে পঁচিশ থেকে ত্রিশ ফুট গভীর সো-কয়েল খনন করেছেন। ওই সো-কয়েলের কোনো ঢাকনা নেই। অরক্ষিত সো-কয়েলে এর আগেও দুটি শিশু পড়ে গিয়েছিল। সৌভাগ্যক্রমে ওরা বেঁচে যায়। এলাকাবাসী তাকে সতর্ক করার পরেও তিনি সো-কয়েলে ঢাকনা দেননি।আরিয়ানের মৃত্যুর জন্য কফিল উদ্দিন দায়ী। আমরা এলাকাবাসী তার বিচার দাবি করছি।’

নিহতের চাচা আ. লতিফ বলেন, ‘ভাতিজার আকষ্মিক মৃত্যুতে বড় ভাই বাকরুদ্ধ হয়ে পড়েছেন। কফিল উদ্দিন তার সো-কয়েলটি দীর্ঘদিন উন্মুক্ত রেখেছেন। তার দায়িত্বহীনতার কারণে ভাতিজার মৃত্যু হলো।’

অভিযুক্ত কফিল উদ্দিনকে বাড়িতে গিয়ে পাওয়া যায়নি। এমনকি মোবাইলে ফোন করলেও তিনি রিসিভ করেননি।

শ্রীপুর থানার পরিদর্শক (ওসি) মো. জয়নাল আবেদীন মন্ডল জানান, খবর পেয়ে রাতে পুলিশ ওই শিশুর মরদেহ উদ্ধার করেছে। এ বিষয়ে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন আছে।