ঢাকা , সোমবার, ১৩ জানুয়ারী ২০২৫, ৩০ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যুক্তরাজ্যে টিউলিপের পর আলোচনায় সালমানপুত্র শায়ান

দুর্নীতির অভিযোগে শেখ হাসিনার ভাগ্নি, ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে নিয়ে যুক্তরাজ্যে তোলপাড়ের মধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমানকে নিয়ে। তিনি ব্রিটিশ রাজার হাত ধরে যুক্তরাজ্যে গড়ে ওঠা একটি দাতব্য সংস্থার বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের প্রধান।

সালমান ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে অনুসন্ধান করছে দুদক। বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) গত অগাস্টেই সালমান, তার ছেলে শায়ান ও পুত্রবধূ শাজরেহ রহমানের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করেছে।

সেই খবর প্রকাশ করে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল এক প্রতিবেদনে লিখেছে, শায়ান ব্রিটিশ মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের ‘পারিবারিক বন্ধু’। তিনি বাংলাদেশের ‘ধনকুবের’ সালমান এফ রহমানের ছেলে। টিউলিপের খালা শেখ হাসিনা লন্ডনে এলে শায়ানের ১৩ মিলিয়ন পাউন্ডের বাড়িতে ‘বিনাভাড়ায়’ থাকতেন। টিউলিপের মা শেখ রেহানা লন্ডনের গোল্ডার্স গ্রিনে যে বাড়িতে বিনা ভাড়ায় থাকেন, সেটির মালিক শায়ান রহমানের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি অফেশোর কোম্পানি।

ডেইলি মেইল বলছে, দারিদ্র দূরীকরণের লক্ষ্যে ব্রিটিশ রাজা চার্লসের হাত ধরে ২০০৭ সালে গড়ে ওঠে দাতব্য সংস্থা ‘ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্ট’। শায়ান রহমান বর্তমানে এই তহবিলে বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের উপদেষ্টা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান।

এক সময় তিনি তাদের পারিবারিক নিয়ন্ত্রণে থাকা বেক্সিমকো গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ছিলেন। ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্টের ওয়েবসাইটে এখনো তার সেই পরিচয়ই দেখানো হচ্ছে।

ডেইলি মেইল লিখেছে, দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পরও ট্রাস্টের চেয়ারম্যান পদে বহাল আছেন শায়ান।

এ বিষয়ে এক বিবৃতিতে ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্ট বলেছে, ‘আমরা শায়ান রহমানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে অবগত। আমরা বাংলাদেশের ঘটনাপ্রবাহের দিকে নজর রাখছি।’

অভিযোগের বিষয়ে শায়ানের এক মুখপাত্রের বক্তব্যও তুলে ধরেছে ডেইলি মেইল। তিনি বলেন, ‘শায়ান রহমানের জন্ম যুক্তরাজ্যে। তিনি একজন ব্রিটিশ নাগরিক এবং আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ী। তিনি কিংবা তার স্ত্রী কখনো কোনো অপরাধে অভিযুক্ত হননি। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সম্পৃক্ততার কারণে অন্য ৩০০ জনের সঙ্গে কেবল বাংলাদেশেই তাদের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে। এটা পুরোপুরি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পদক্ষেপ।’

ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্টে আড়াই লাখ পাউন্ড অনুদান রয়েছে শায়ানের।

সম্প্রতি সানডে টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের অর্থপাচার নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সেই অনুদানের প্রসঙ্গ তোলেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসও। শায়ানের ‘দানশীলতা’ নিয়ে তিনি রসিকতাও করেন।

শায়ান এক সময় আইএফআইসি ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন। ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর ব্যাংকের বোর্ড পুনর্গঠনে তিনি পরিচালক পদও হারান।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

যুক্তরাজ্যে টিউলিপের পর আলোচনায় সালমানপুত্র শায়ান

আপডেট টাইম : ২ ঘন্টা আগে

দুর্নীতির অভিযোগে শেখ হাসিনার ভাগ্নি, ব্রিটিশ প্রতিমন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিককে নিয়ে যুক্তরাজ্যে তোলপাড়ের মধ্যেই আলোচনা শুরু হয়েছে সালমান এফ রহমানের ছেলে আহমেদ শায়ান ফজলুর রহমানকে নিয়ে। তিনি ব্রিটিশ রাজার হাত ধরে যুক্তরাজ্যে গড়ে ওঠা একটি দাতব্য সংস্থার বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের প্রধান।

সালমান ও তার পরিবারের সদস্যদের বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ নিয়ে অনুসন্ধান করছে দুদক। বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ) গত অগাস্টেই সালমান, তার ছেলে শায়ান ও পুত্রবধূ শাজরেহ রহমানের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করেছে।

সেই খবর প্রকাশ করে যুক্তরাজ্যের সংবাদমাধ্যম ডেইলি মেইল এক প্রতিবেদনে লিখেছে, শায়ান ব্রিটিশ মন্ত্রী টিউলিপ সিদ্দিকের ‘পারিবারিক বন্ধু’। তিনি বাংলাদেশের ‘ধনকুবের’ সালমান এফ রহমানের ছেলে। টিউলিপের খালা শেখ হাসিনা লন্ডনে এলে শায়ানের ১৩ মিলিয়ন পাউন্ডের বাড়িতে ‘বিনাভাড়ায়’ থাকতেন। টিউলিপের মা শেখ রেহানা লন্ডনের গোল্ডার্স গ্রিনে যে বাড়িতে বিনা ভাড়ায় থাকেন, সেটির মালিক শায়ান রহমানের নিয়ন্ত্রণাধীন একটি অফেশোর কোম্পানি।

ডেইলি মেইল বলছে, দারিদ্র দূরীকরণের লক্ষ্যে ব্রিটিশ রাজা চার্লসের হাত ধরে ২০০৭ সালে গড়ে ওঠে দাতব্য সংস্থা ‘ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্ট’। শায়ান রহমান বর্তমানে এই তহবিলে বাংলাদেশ চ্যাপ্টারের উপদেষ্টা কাউন্সিলের চেয়ারম্যান।

এক সময় তিনি তাদের পারিবারিক নিয়ন্ত্রণে থাকা বেক্সিমকো গ্রুপের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ছিলেন। ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্টের ওয়েবসাইটে এখনো তার সেই পরিচয়ই দেখানো হচ্ছে।

ডেইলি মেইল লিখেছে, দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পরও ট্রাস্টের চেয়ারম্যান পদে বহাল আছেন শায়ান।

এ বিষয়ে এক বিবৃতিতে ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্ট বলেছে, ‘আমরা শায়ান রহমানের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের বিষয়ে অবগত। আমরা বাংলাদেশের ঘটনাপ্রবাহের দিকে নজর রাখছি।’

অভিযোগের বিষয়ে শায়ানের এক মুখপাত্রের বক্তব্যও তুলে ধরেছে ডেইলি মেইল। তিনি বলেন, ‘শায়ান রহমানের জন্ম যুক্তরাজ্যে। তিনি একজন ব্রিটিশ নাগরিক এবং আন্তর্জাতিক ব্যবসায়ী। তিনি কিংবা তার স্ত্রী কখনো কোনো অপরাধে অভিযুক্ত হননি। সাবেক প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সম্পৃক্ততার কারণে অন্য ৩০০ জনের সঙ্গে কেবল বাংলাদেশেই তাদের ব্যাংক হিসাব অবরুদ্ধ করা হয়েছে। এটা পুরোপুরি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত পদক্ষেপ।’

ব্রিটিশ এশিয়ান ট্রাস্টে আড়াই লাখ পাউন্ড অনুদান রয়েছে শায়ানের।

সম্প্রতি সানডে টাইমসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বাংলাদেশের অর্থপাচার নিয়ে কথা বলতে গিয়ে সেই অনুদানের প্রসঙ্গ তোলেন প্রধান উপদেষ্টা মুহাম্মদ ইউনূসও। শায়ানের ‘দানশীলতা’ নিয়ে তিনি রসিকতাও করেন।

শায়ান এক সময় আইএফআইসি ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্বে ছিলেন। ক্ষমতার পট পরিবর্তনের পর ব্যাংকের বোর্ড পুনর্গঠনে তিনি পরিচালক পদও হারান।