বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ আর নয় ঝরে পড়া, আনন্দ স্কুলে লেখাপড়া’ এ স্লোগানে শিক্ষার আলো ছড়াচ্ছে আনন্দ স্কুল। বিভিন্ন কারণে প্রাথমিক শিক্ষা থেকে ঝরে পড়া, শিক্ষার সুযোগ পায়নি- এমন শিশু-কিশোরদের প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে ময়মনসিংহের নান্দাইলে প্রায় ২ হাজার ৩০০ শিক্ষার্থী ৯৫টি আনন্দ স্কুলের মাধ্যমে নতুন করে শিক্ষার আলোয় আলোকিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছে।
নান্দাইল প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা গেছে, পিছিয়ে পড়া অঞ্চলের দুস্থ ও শিক্ষার সুযোগ-সুবিধা বঞ্চিত, অবহেলিত, দরিদ্র পরিবারের সন্তানদের দ্বিতীয়বারের মতো শিক্ষার সুযোগ সৃষ্টির জন্য এ আনন্দ স্কুল স্থাপন করা হয়েছে। বিশ্বব্যাংকের সহযোগিতায় রিচিং আউট অব স্কুল চিলড্রেন (রস্ক-২) প্রকল্পের মাধ্যমে নান্দাইলে ২০১৩ সালে ৩৫ এবং ২০১৪ সালে ৬০টি আনন্দ স্কুল স্থাপন করা হয়।
নান্দাইল উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আনার কলি নাজনীন জানান, উপজেলায় চতুর্থ শ্রেণীর ৬০ ও পঞ্চম শ্রেণীর ৩৫টিসহ মোট ৯৫টি আনন্দ স্কুলে প্রায় ২ হাজার ৩০০ শিক্ষার্থী লেখাপড়া করছে। একজন শিক্ষক একটি স্কুল চালাচ্ছেন। ৪ হাজার টাকা মাসিক বেতন এবং ৫০০ টাকা ঘর ভাড়া নিয়ে শিক্ষক এ শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনা করছেন। সকাল ৯টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত সপ্তাহে ছয় দিন পাঠদান চলে। প্রত্যেক স্কুলে সর্বনিম্ন ১৫ ও সর্বোচ্চ ৩৫ শিক্ষার্থী থাকতে হয়। নান্দাইল উপজেলার ১২ ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় আনন্দ স্কুলের কার্যক্রম চালু রয়েছে। নান্দাইল পৌরসভায় ৩, নান্দাইল সদর ইউনিয়নে ৫, বতাগৈরে ১২, মোয়াজ্জেমপুরে ২, চ-িপাশায় ১১, গাংগাইলে ৯, রাজগাতিতে ৬, মুশুল্লীতে ১৩, সিংরইলে ৬, আচারগাঁওয়ে ৬, শেরপুরে ৬, খারুয়ায় ৭ এবং জাহাঙ্গীরপুর ইউনিয়নে ৭টি আনন্দ স্কুল চালু রয়েছে।
নান্দাইল আনন্দ স্কুলের ট্রেনিং কো-অর্ডিনেটর মোঃ এরশাদ হোসাইন জানান, রস্ক প্রকল্পের আওতায় আনন্দ স্কুলে শিক্ষার্থীদের শিক্ষা ভাতা (উপবৃত্তি), পোশাক ও শিক্ষা উপকরণ প্রদান করায় শিক্ষার্থীরা স্কুলগামী হচ্ছে। এসব শিশুকে মানসম্মত শিক্ষা প্রদানের লক্ষ্যে শিক্ষকদের ছয় দিনের বিষয়ভিত্তিক প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। চলতি বছর আনন্দ স্কুল থেকে প্রায় ৭৩০ শিক্ষার্থী প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করবে।
তিনি আরও জানান, স্কুল মনিটরিং ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। সংশ্লিষ্ট মাদার স্কুলের (সরকারি প্রাথমিক বিদ্যাল) শিক্ষক, ৯ পুল শিক্ষক (অবসরপ্রাপ্ত জিপিএস শিক্ষক), টিসি এবং এটিইওরা নিয়মিত আনন্দ স্কুল পরিদর্শন করে থাকেন। এছাড়া এলজিইডি কর্তৃক বছরে একবার আনন্দ স্কুলের কার্যক্রম মনিটরিং হয়ে থাকে।