ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বদরুদ্দীন উমর স্বাধীনতার পক্ষের ছিলেন না: তোফায়েল

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ ১৯৭২ সালের সংবিধান নিয়ে প্রশ্ন তোলায় বদরুদ্দীন উমরের তীব্র সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ। রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে শোক দিবস উপলক্ষে প্রেস ক্লাব আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড : দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্ত’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি।

তোফায়েল আহমেদের আগে আলোচনায় অংশ নিয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে বদরুদ্দীন উমরের একটি লেখার সমালোচনা করেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মুঞ্জুরুল আহসান বুলবুল।

সাংবাদিক এই নেতা বলেন, তিনি (বদরুদ্দীন উমর) লিখেছেন ৭২ এর সংবিধান নাকি অবৈধ। ওই সংসদ নাকি পাকিস্তানের সংবিধান মেনে নির্বাচিত সাংসদদের দ্বারা গঠিত হয়েছিল, সেই সংসদ নাকি স্বাধীন বাংলাদেশের নির্বাচিত না।

পরে নিজের আলোচনায় তোফায়েল আহমেদ বলেন, বদরুদ্দীন উমর স্বাধীনতার পক্ষের ছিলেন না। আমি তার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি।’
তিনি বলেন, ‘১৭ এপ্রিল আগরতলায় যে সরকার শপথ নিয়েছিল, তাকে সারা বিশ্ব স্বীকৃতি দিয়েছিল। কিন্তু স্বাধীনতা বিরোধী যারা ছিল তারা সেই সরকারকে গ্রহণ করেনি।

এদিকে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে দেওয়া আদালতের রায়ের সমালোচনা করে সরকারের এই মন্ত্রী বলেন, ইমপিচমেন্ট নিয়ে আপনারা বলতে পারেন, আমরা সংশোধনীতে যা করেছি সেটা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। কিন্তু অবজার্ভেশনে কী বললেন? সংসদকে বললেন নন ফাংশনাল, ইমম্যাচিউরড; যারা এ ধরণের কথা বলে তারাও পরিপক্ক না।

তিনি বলেন, এই রায়ের পর বিএনপি গর্ত থেকে উঠে দাঁড়াল। সরকারের পদত্যাগের কথা বলা শুরু করল। এই অবজার্ভেশন লেখা হয়েছে বিএনপি যাতে রাজনীতি করতে পারে। তারা যে খারাপ অবস্থায় আছে, সেটিকে রিস্টোর করতেই এই অবর্জাভেশন দেওয়া হয়েছে বলেই মানুষ মনে করে।

রায়ের পর্যবেক্ষণকে অগ্রহণযোগ্য মন্তব্য করে তোফায়েল বলেন, আমরা রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দেই, তিনি বিচারপতি নিয়োগ দেন। আমি প্রধান বিচারপতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, অসম্মান করব না; আপনি অবজার্ভেসনে যা লিখলেন সেটা কোন কথা হলো? একক ব্যক্তির নেতৃত্বের কথা বললেন, বঙ্গবন্ধুর বাইরে ২-৪ টা লোকের কথা বলতে পারবেন যারা স্বাধীনতার জন্য জেল কেটেছেন, ফাঁসির সামনে গিয়েছেন?

বিএনপি রায় নিয়ে বক্তব্য শুরু করায় আওয়ামী লীগও জবাব দিতে শুরু করেছে মন্তব্য করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, যে টকশোগুলো হয়, সেখানে বিএনপির বেশি জানা লোকদের রেখে বিপরীতে আওয়ামী লীগের যারা কম জানে তাদের রাখা হচ্ছে।

শনিবার রাতের এক টকশোতে সংবিধাণ প্রণেতা কামাল হোসেনের বক্তব্যের সমালোচনা করে তোফায়েল বলেন, বিচারকদের ইমপিচমেন্টের কথা তারাই লিখেছিলেন। এখন বলছেন ভারতে-যুক্তরাজ্যে নেই এটি। অথচ যুক্তরাজ্যে, ভারতে, যুক্তরাষ্ট্রে সেটি আছে। কামাল হোসেন চতুরতার সাথে অবাস্তব কথা বলেছেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, কামাল হোসেন আর্টিকেল সেভেনটি নিয়ে জিজ্ঞেস করলে গাঁজাগুজা খেয়ে অন্য কথা বললেন। সদুত্তর দিতে পারেননি। কারণ এমিকাস কিউরি হিসেবে তো তিনি এটির বিরোধীতা করেছেন। এরা বুদ্ধিমান চতুর।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ড. আবু সাঈদ, ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহফুজা খানম, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমীন প্রমুখ।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

বদরুদ্দীন উমর স্বাধীনতার পক্ষের ছিলেন না: তোফায়েল

আপডেট টাইম : ০৬:৩৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ অগাস্ট ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ ১৯৭২ সালের সংবিধান নিয়ে প্রশ্ন তোলায় বদরুদ্দীন উমরের তীব্র সমালোচনা করেছেন আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ। রোববার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে শোক দিবস উপলক্ষে প্রেস ক্লাব আয়োজিত ‘বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের হত্যাকাণ্ড : দেশীয় ও আন্তর্জাতিক চক্রান্ত’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন তিনি।

তোফায়েল আহমেদের আগে আলোচনায় অংশ নিয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে বদরুদ্দীন উমরের একটি লেখার সমালোচনা করেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি মুঞ্জুরুল আহসান বুলবুল।

সাংবাদিক এই নেতা বলেন, তিনি (বদরুদ্দীন উমর) লিখেছেন ৭২ এর সংবিধান নাকি অবৈধ। ওই সংসদ নাকি পাকিস্তানের সংবিধান মেনে নির্বাচিত সাংসদদের দ্বারা গঠিত হয়েছিল, সেই সংসদ নাকি স্বাধীন বাংলাদেশের নির্বাচিত না।

পরে নিজের আলোচনায় তোফায়েল আহমেদ বলেন, বদরুদ্দীন উমর স্বাধীনতার পক্ষের ছিলেন না। আমি তার প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি।’
তিনি বলেন, ‘১৭ এপ্রিল আগরতলায় যে সরকার শপথ নিয়েছিল, তাকে সারা বিশ্ব স্বীকৃতি দিয়েছিল। কিন্তু স্বাধীনতা বিরোধী যারা ছিল তারা সেই সরকারকে গ্রহণ করেনি।

এদিকে সংবিধানের ষোড়শ সংশোধনী বাতিল করে দেওয়া আদালতের রায়ের সমালোচনা করে সরকারের এই মন্ত্রী বলেন, ইমপিচমেন্ট নিয়ে আপনারা বলতে পারেন, আমরা সংশোধনীতে যা করেছি সেটা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। কিন্তু অবজার্ভেশনে কী বললেন? সংসদকে বললেন নন ফাংশনাল, ইমম্যাচিউরড; যারা এ ধরণের কথা বলে তারাও পরিপক্ক না।

তিনি বলেন, এই রায়ের পর বিএনপি গর্ত থেকে উঠে দাঁড়াল। সরকারের পদত্যাগের কথা বলা শুরু করল। এই অবজার্ভেশন লেখা হয়েছে বিএনপি যাতে রাজনীতি করতে পারে। তারা যে খারাপ অবস্থায় আছে, সেটিকে রিস্টোর করতেই এই অবর্জাভেশন দেওয়া হয়েছে বলেই মানুষ মনে করে।

রায়ের পর্যবেক্ষণকে অগ্রহণযোগ্য মন্তব্য করে তোফায়েল বলেন, আমরা রাষ্ট্রপতি নিয়োগ দেই, তিনি বিচারপতি নিয়োগ দেন। আমি প্রধান বিচারপতির প্রতি শ্রদ্ধা রেখেই বলছি, অসম্মান করব না; আপনি অবজার্ভেসনে যা লিখলেন সেটা কোন কথা হলো? একক ব্যক্তির নেতৃত্বের কথা বললেন, বঙ্গবন্ধুর বাইরে ২-৪ টা লোকের কথা বলতে পারবেন যারা স্বাধীনতার জন্য জেল কেটেছেন, ফাঁসির সামনে গিয়েছেন?

বিএনপি রায় নিয়ে বক্তব্য শুরু করায় আওয়ামী লীগও জবাব দিতে শুরু করেছে মন্তব্য করে তোফায়েল আহমেদ বলেন, যে টকশোগুলো হয়, সেখানে বিএনপির বেশি জানা লোকদের রেখে বিপরীতে আওয়ামী লীগের যারা কম জানে তাদের রাখা হচ্ছে।

শনিবার রাতের এক টকশোতে সংবিধাণ প্রণেতা কামাল হোসেনের বক্তব্যের সমালোচনা করে তোফায়েল বলেন, বিচারকদের ইমপিচমেন্টের কথা তারাই লিখেছিলেন। এখন বলছেন ভারতে-যুক্তরাজ্যে নেই এটি। অথচ যুক্তরাজ্যে, ভারতে, যুক্তরাষ্ট্রে সেটি আছে। কামাল হোসেন চতুরতার সাথে অবাস্তব কথা বলেছেন।

বাণিজ্যমন্ত্রী বলেন, কামাল হোসেন আর্টিকেল সেভেনটি নিয়ে জিজ্ঞেস করলে গাঁজাগুজা খেয়ে অন্য কথা বললেন। সদুত্তর দিতে পারেননি। কারণ এমিকাস কিউরি হিসেবে তো তিনি এটির বিরোধীতা করেছেন। এরা বুদ্ধিমান চতুর।

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি শফিকুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন সাবেক তথ্য প্রতিমন্ত্রী অধ্যাপক ড. আবু সাঈদ, ডাকসুর সাবেক ভিপি মাহফুজা খানম, আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মোজাফ্ফর হোসেন পল্টু, প্রধানমন্ত্রীর তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমীন প্রমুখ।