ঢাকা , বৃহস্পতিবার, ২৪ অক্টোবর ২০২৪, ৮ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

পরিস্থিতি মোকাবেলার সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে খাদ্যশস্য আমদানির সিদ্ধান্ত : প্রধানমন্ত্রী

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ সরকার সতর্কতামূলক কর্মকান্ডের অংশ হিসেবে বিদেশ থেকে খাদ্যশস্য আমদানীর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বন্যার কারণে ইতোমধ্যেই বিস্তীর্ণ জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। আগামীতে বন্যা আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। তাই দেশে পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ থাকার পরও যে কোন বিরূপ পরিস্থিতি মোকাবেলার পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে সরকার খাদ্যশস্য আমাদানীর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গতকাল রবিবার সকালে তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জাতীয় পুষ্টি পরিষদের (এনসিসি) প্রথম সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা।
খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি জনগণের পুষ্টি নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার দেশের জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। এখন, পুষ্টি নিশ্চিত করাই প্রধান লক্ষ্য। ‘পুষ্টির সাথে অনেক কিছু সম্পৃক্ত’-উল্লেখ করে তিনি বলেন, পুষ্টির বিষয়ে শহরাঞ্চলে সচেতনতা সৃষ্টি হলেও গ্রামাঞ্চলে জনগণের মধ্যে আরো সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজন রয়েছে, যাতে মানুষ সুষম খাদ্য গ্রহণ করে।
এ সময় জলাশয়ে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘খাদ্যাভ্যাসের উন্নত করতে হবে এবং সময় মতো খেতে হবে।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর প্রেসিডেন্ট হিসাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ২৩ এপ্রিল ‘বাংলাদেশে জাতীয় পুষ্টি পরিষদ‘ গঠনের আদেশ স্বাক্ষর করেন। তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর ১৯৯৭ সালে প্রথম জাতীয় পুষ্টি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয় এবং¡ ১৯৯৮ সালের ১১ আগস্ট বাংলাদেশে জাতীয় পুষ্টি পরিষদের বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৫ সালের সরকার জাতীয় পুষ্টি নীতি অনুমোদন করে। এই নীতি প্রণয়নের সাথে সাথে তা বাস্তবায়নের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসাবে ২০১৬ সালের শুরুতেই দ্বিতীয় জাতীয় পুষ্টি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ শুরু হয়। বৈঠকের শুরুতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা যে শুধু স্বাধীনতাই দিয়ে গেছেন, তা নয়। তিনি সব কিছু দিয়ে গেছেন। নয় মাসে সংবিধান দিয়ে গেছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ একটি প্রদেশ ছিল। ২৪ বছরের সংগ্রাম ও মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। একটি প্রদেশকে রাষ্ট্রীয় কাঠামোয় উন্নীত করে জাতির পিতা আমাদের সব কিছুই দিয়ে গেছেন।
বাংলাদেশের জনগণের জীবনমানের উন্নয়নকে সরকারের প্রধান লক্ষ হিসাবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, যে উন্নয়নটা সাড়ে তিন বছরে জাতির পিতা করেছিলেন, ১৫ আগস্টের পর বাংলাদেশ আর সামনের দিকে এগুতে পারে নাই।
একটি দেশের উন্নয়ন শাসক দলের নীতির ওপর নির্ভরশীল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ১৫ আগস্টের পর যারা ক্ষমতায় এসেছিলো; তারা দেশটাকে পরনির্ভরশীল করে রাখতে চেয়েছিলো। আওয়ামী লীগ যখনই সরকার গঠন করেছে, তখনই পূর্ববর্তী সরকারে কাছে থেকে খাদ্য ঘাটতি পাওয়ার কথা বলেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালের বিএনপি যখন ক্ষমতা হস্তান্তর করে, তখন দেশে খাদ্য ঘাটতি ছিল ৪০ লাখ মেট্রিক টন। অন্যদিকে ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ ২৬ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য উদ্বৃত্ত রেখে ক্ষমতা হস্তান্তর করে আওয়ামী লীগ। ২০০৯ সালের আওয়ামী লীগ যখন সরকার গঠন করে তখনও দেশে খাদ্য ঘাটতি ছিলো ৩০ লাখ মেট্রিক টন।
বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালিক এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকীসহ সংশ্লিষ্ট সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।

Tag :
আপলোডকারীর তথ্য

Bangal Kantha

পরিস্থিতি মোকাবেলার সতর্কতামূলক ব্যবস্থা হিসেবে খাদ্যশস্য আমদানির সিদ্ধান্ত : প্রধানমন্ত্রী

আপডেট টাইম : ০৭:৪৬ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১৪ অগাস্ট ২০১৭

বাঙালী কণ্ঠ নিউজঃ সরকার সতর্কতামূলক কর্মকান্ডের অংশ হিসেবে বিদেশ থেকে খাদ্যশস্য আমদানীর সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, বন্যার কারণে ইতোমধ্যেই বিস্তীর্ণ জমির ফসল নষ্ট হয়েছে। আগামীতে বন্যা আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করতে পারে। তাই দেশে পর্যাপ্ত খাদ্য মজুদ থাকার পরও যে কোন বিরূপ পরিস্থিতি মোকাবেলার পূর্ব প্রস্তুতি হিসেবে সরকার খাদ্যশস্য আমাদানীর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
গতকাল রবিবার সকালে তেজগাঁওয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে জাতীয় পুষ্টি পরিষদের (এনসিসি) প্রথম সভায় সভাপতির বক্তব্যে এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা।
খাদ্য নিরাপত্তার পাশাপাশি জনগণের পুষ্টি নিশ্চিত করার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার দেশের জনগণের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করেছে। এখন, পুষ্টি নিশ্চিত করাই প্রধান লক্ষ্য। ‘পুষ্টির সাথে অনেক কিছু সম্পৃক্ত’-উল্লেখ করে তিনি বলেন, পুষ্টির বিষয়ে শহরাঞ্চলে সচেতনতা সৃষ্টি হলেও গ্রামাঞ্চলে জনগণের মধ্যে আরো সচেতনতা বৃদ্ধির প্রয়োজন রয়েছে, যাতে মানুষ সুষম খাদ্য গ্রহণ করে।
এ সময় জলাশয়ে মাছের উৎপাদন বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘খাদ্যাভ্যাসের উন্নত করতে হবে এবং সময় মতো খেতে হবে।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর প্রেসিডেন্ট হিসাবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৫ সালের ২৩ এপ্রিল ‘বাংলাদেশে জাতীয় পুষ্টি পরিষদ‘ গঠনের আদেশ স্বাক্ষর করেন। তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর ১৯৯৭ সালে প্রথম জাতীয় পুষ্টি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়ন করা হয় এবং¡ ১৯৯৮ সালের ১১ আগস্ট বাংলাদেশে জাতীয় পুষ্টি পরিষদের বৈঠকও অনুষ্ঠিত হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৫ সালের সরকার জাতীয় পুষ্টি নীতি অনুমোদন করে। এই নীতি প্রণয়নের সাথে সাথে তা বাস্তবায়নের প্রাথমিক পদক্ষেপ হিসাবে ২০১৬ সালের শুরুতেই দ্বিতীয় জাতীয় পুষ্টি কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের কাজ শুরু হয়। বৈঠকের শুরুতেই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুকে স্মরণ করে শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা যে শুধু স্বাধীনতাই দিয়ে গেছেন, তা নয়। তিনি সব কিছু দিয়ে গেছেন। নয় মাসে সংবিধান দিয়ে গেছেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ একটি প্রদেশ ছিল। ২৪ বছরের সংগ্রাম ও মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা স্বাধীনতা পেয়েছি। একটি প্রদেশকে রাষ্ট্রীয় কাঠামোয় উন্নীত করে জাতির পিতা আমাদের সব কিছুই দিয়ে গেছেন।
বাংলাদেশের জনগণের জীবনমানের উন্নয়নকে সরকারের প্রধান লক্ষ হিসাবে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, যে উন্নয়নটা সাড়ে তিন বছরে জাতির পিতা করেছিলেন, ১৫ আগস্টের পর বাংলাদেশ আর সামনের দিকে এগুতে পারে নাই।
একটি দেশের উন্নয়ন শাসক দলের নীতির ওপর নির্ভরশীল উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, ১৫ আগস্টের পর যারা ক্ষমতায় এসেছিলো; তারা দেশটাকে পরনির্ভরশীল করে রাখতে চেয়েছিলো। আওয়ামী লীগ যখনই সরকার গঠন করেছে, তখনই পূর্ববর্তী সরকারে কাছে থেকে খাদ্য ঘাটতি পাওয়ার কথা বলেন শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯৬ সালের বিএনপি যখন ক্ষমতা হস্তান্তর করে, তখন দেশে খাদ্য ঘাটতি ছিল ৪০ লাখ মেট্রিক টন। অন্যদিকে ২০০১ সালে আওয়ামী লীগ ২৬ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য উদ্বৃত্ত রেখে ক্ষমতা হস্তান্তর করে আওয়ামী লীগ। ২০০৯ সালের আওয়ামী লীগ যখন সরকার গঠন করে তখনও দেশে খাদ্য ঘাটতি ছিলো ৩০ লাখ মেট্রিক টন।
বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রী খন্দকার মোশাররফ হোসেন, খাদ্যমন্ত্রী কামরুল ইসলাম, স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী জাহিদ মালিক এবং মহিলা ও শিশু বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী মেহের আফরোজ চুমকীসহ সংশ্লিষ্ট সচিবরা উপস্থিত ছিলেন।